1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পরিবেশ সংরক্ষণে বৃক্ষরোপণ

২৭ জুন ২০১০

বছর তিনেক আগে ৯ বছরের ছোট্ট বালক ফেলিক্সের মাথায় হঠাৎ করে এক ভাবনা খেলে যায়৷ তার সেই চিন্তা থেকে সারা বিশ্বের শিশুদের মধ্যে বয়ে যায় যেন এক জাগরণের ঢেউ৷ আর তা হল বৃক্ষরোপণ অভিযান৷ ফেলিক্সের বয়স আজ ১২৷

https://p.dw.com/p/O4Or
সবুজই মুক্তির পথছবি: AP

ফেলিক্স ফিঙ্কবাইনার পড়াশোনা করছে আন্তর্জাতিক এক স্কুলে৷ ২০০৭ সালের শীতকালটা ছিল বেশ গরম৷ স্কুলের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনের ওপর একটি রচনা তৈরি করতে হয় তাকে৷ আর সে জন্য ইন্টারনেট ঘাঁটাঘাঁটি করতে গিয়ে গাছ লাগানোর চিন্তাটা মাথায় আসে তার৷ ফেলিক্স জানায়, ‘‘ইন্টারনেটের ওয়েব সাইটে আমি দেখলাম আফ্রিকার এক মহিলা ৩০ বছরে ৩ কোটি গাছ লাগিয়েছেন৷ যা আমার মনে খুব দাগ কাটে৷ রচনাটা লিখে পড়ার পর আমি সবাইকে বললাম, চলো আমরা এক একটি দেশে ১০ লক্ষ গাছ লাগাই৷'' যা বলা তাই করা৷ ফেলিক্স জানায়, ‘‘আমার শিক্ষিকা ও সহপাঠীদের মনে ধরে কথাটা৷ তারা এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য আমাকে অন্যান্য ক্লাসে এবং অন্যান্য স্কুলে পাঠায়৷ সবাই আগ্রহী হয়ে ওঠে৷ অবশেষে দুই মাস পরে আমরা প্রকল্পের কাজ শুরু করি এবং প্রথম গাছটি লাগাই৷''

বছর তিনেক পর সারা জার্মানিতে সত্যি সত্যি এই প্রকল্প থেকে ১০ লক্ষ গাছ দাঁড়িয়ে যায়৷ বেসরকারি একটি সংস্থা ‘‘Plant for the Planet''-এর অর্থ সাহায্যে ৭০টিরও বেশি দেশে গড়ে ওঠে এই প্রকল্পের শাখা৷ শুধু বৃক্ষ রোপণই প্রকল্পের লক্ষ্য নয়৷ বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মানুষ ও প্রাণীদের ওপর যে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে, সে সম্পর্কে ছোটদের মনে চিন্তা ভাবনা জাগিয়ে তোলাও প্রকল্পের কাজ৷ ছোটদের কাছ থেকেই ছোটরা তা শোনে৷ পৃথিবীকে ক্রমাগত উষ্ণ হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে হলে মানুষের জীবনযাত্রারও আমূল পরিবর্তন দরকার৷ ফেলিক্সের মতে, ‘‘আজকের প্রাপ্ত বয়স্কদের মত আমরা শিশুরাও ভবিষ্যতে সমান সুযোগ পেতে চাই৷ আমরা যদি এই ভাবে গাড়ি চালাতে থাকি, প্লেনে চড়তে থাকি, তাহলে এই লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব নয়৷ আমাদের দাদা দাদিরা প্লেনে চড়েননি, কিন্তু তারা তো সুখী ছিলেন৷''

১২ বছরের রুপালি ফ্রেমের চশমা পরা এই বালকের হাবভাব দেখলে মনে হবে যেন প্রাপ্ত বয়স্ক এক ব্যক্তি৷ অনেকে মনে করেন, বাবা মার প্রভাব পড়েছে তার ওপর৷ ফেলিক্সের বাবা বছর দশেক আগে তাঁর ব্যবসা বিক্রি করে একটি পরিবেশবান্ধব ফাউন্ডেশন গড়ে তুলেছেন৷

ফেলিক্স জানায়, পরিবেশের ওপর বক্তৃতা দিতে সে পছন্দ করে৷ এজন্য সে দেশ বিদেশ ঘুরে বেড়ায়৷ প্রয়োজন হলে প্লেনে চড়তেও আপত্তি নেই তার৷ এই তো কিছুদিন আগে নিউ ইয়র্ক ও বেইজিং ঘুরে এলো সে৷ ফেলিক্স বলে, ‘‘বেইজিংএ বিশাল বিশাল সব দালান৷ আমি মোটেও ভাবিনি, বেইজিংএ নিউ ইয়র্কের মত এত উঁচু উঁচু বাড়ি দেখতে পাব৷''

বাভারিয়া রাজ্যের ছোট্ট এক গ্রামে নিজেদের বাড়িতে ফেলিক্স কিন্তু আর দশটা বাচ্চার মতই৷ সাইকেল চালাতে ভালবাসে, কম্পিউটার গেম পছন্দ করে৷ বাগানে বসে দুই বোনের সঙ্গে আইসক্রিম খেতে খেতে মা বাবার সঙ্গে খুনসুটি করতেও পছন্দ করে৷

প্রতিবেদন: রায়হানা বেগম

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল ফারূক