1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পরিবেশ সচেতনতা বাড়াতে অভিনব গেম

১৩ জানুয়ারি ২০২১

জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ দূষণের মোকাবিলা করতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরিবর্তন চোখে পড়ছে৷ ছাপাখানা ও কাগজের ব্যবহারও তার ব্যতিক্রম নয়৷ সেইসঙ্গে প্রকৃতি ও পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগও বাড়ছে৷

https://p.dw.com/p/3nqXl
প্রতীকী ছবিছবি: Imago Images

আস্ট্রিড বুৎসিন অবসর সময়ের অনেকটা জুড়েই জংলি গাছপালা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করেন৷ ‘যা চেনো, তা রক্ষা করো' – এই বুলি সম্বল করে তিনি মানুষকে তাদের আশেপাশের জংলি গাছপালা চেনানোর উদ্যোগ নিচ্ছেন৷ সেই লক্ষ্যে তিনি ‘নেচারমেমো' নামের এক মেমরি গেম সৃষ্টি করেছেন৷ ফলে সব বয়সের মানুষ গাছপালা সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারছে৷ আস্ট্রিড বলেন, ‘‘আমি চাই, জংলি গাছপালা আবার আমাদের জীবনযাত্রার অঙ্গ হয়ে উঠুক৷ এমনকি আরও এক ধাপ এগিয়ে আমি খাদ্যতালিকায় এমন উপকরণ দেখতে চাই৷ কারণ জংলি গাছপালার মধ্যে এমন পুষ্টি রয়েছে, যা চাষ করা শাকসবজির মধ্যে আজকাল দেখা যায় না৷''

পট্সডাম শহরে নিজের বাসায় অসংখ্য জংলি গাছপালা শোভা পাচ্ছে৷ তিনি সেখানে রান্নার ক্লাস নেন এবং একটি কিন্ডারগার্টেনে শিক্ষা দেন৷ প্রকৃতির মর্যাদা তাঁর কাছে গুরুত্বপূর্ণ৷ তাই তাঁর পণ্যও পরিবেশবান্ধব৷ এমনকি ‘নেচারমেমো' গেম তৈরি করার সময়েও তিনি ‘ক্রেডল টু ক্রেডল' নামের মানদণ্ড মেনে চলেছিলেন৷ এই উদ্যোগ সম্পর্কে আস্ট্রিড বুৎসিন বলেন, ‘‘এর অর্থ, প্রাকৃতিক জগত, প্রকৃতির বৃত্তাকার মডেলের উপর ভিত্তি করে উৎপাদন করা হয়েছিল৷ খেলা শেষ হলে গেমটি খেয়ে নিতে পারেন, সেটি সত্যি খাবার যোগ্য৷ প্রাকৃতিক, উদ্ভিদভিত্তিক রং দিয়ে সেটি প্রিন্ট করা হয়েছে৷ অথবা প্রাকৃতিক সার হিসেবে সেটি ব্যবহার করা যায়, জঙ্গলে ফেলেও দেওয়া যায়৷ উৎপাদন প্রক্রিয়ায় কোনো রাসায়নিক ব্যবহার না হওয়ায় বিবেক দংশনের প্রয়োজন নেই৷''

অচেনা গাছের নাম জানাবে গেম

‘ক্রেডেল টু ক্রেডল' মানদণ্ড শুধু কম্পোস্ট বা জৈব সারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়৷ পচনের সময়ে প্রায় কিছুই বের হয় না, যা পরিবেশের ক্ষতি করতে পারে৷ লোকাই নামের এক ছাপাখানা জার্মানিতে প্রথম এই মানদণ্ড অনুযায়ী ছাপার কাজ শুরু করে৷ রাল্ফ লোকাই নিজের বাবার কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে কোম্পানির দায়িত্ব পেয়েছিলেন৷ তারপর পুরোপুরি পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি চালু করেন৷ রাল্ফ বলেন, ‘‘আমার মতে, পরিবেশের ক্ষতি না করা সব কোম্পানিরই দায়িত্বের মধ্যে পড়ে৷ কর্মী ও কোম্পানির আয়ের খাতিরে আমাদের মুনাফার প্রয়োজন রয়েছে ঠিকই৷ কিন্তু মানুষ ও প্রকৃতির স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে আমরা মুনাফা করতে চাই না৷’’

অর্থাৎ গোটা প্রক্রিয়ার সব ধাপই টেকসই পদ্ধতিতে সাজানো হয়েছে৷ প্রিন্টিং মেশিনই ভবনের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে৷ সেখানে পানির রি-সার্কুলেশন প্রণালী রয়েছে৷ যন্ত্রগুলি কোনো কার্বন নির্গমনও করে না৷ ছাপার কাগজ ও রংয়েরও ‘ক্রেডেল টু ক্রেডেল' সার্টিফিকেশন বা স্বীকৃতি রয়েছে৷

প্রচলিত ছাপাখানা থেকে টেকসই পদ্ধতিতে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত মোটেই সহজ ছিল না৷ রাল্ফ লোকাই বলেন, ‘‘এই পদ্ধতি মোটেই আরও ব্যয়বহুল নয়৷ কিন্তু সব কিছু নতুন করে সাজাতে হয়৷ উৎপাদনের প্রক্রিয়া নতুন করে সাজাতে হলে অবশ্যই অনেক বিষয়ের আমূল পরিবর্তন করতে হয়৷ একেবারে নতুন করে ভাবতে হয়৷''

গোটা প্রিন্টিং শিল্পক্ষেত্রই এই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে৷ গোটা বিশ্বে ফেলে দেওয়া কাগজের অর্ধেকের বেশি জঞ্জালের স্তূপে গিয়ে পড়ে৷ প্রতি বছর কাগজের উৎপাদনও বেড়ে চলেছে৷ কাগজ পুরোপুরি প্রকৃতিতে মিশে যেতে ২০ বছর পর্যন্ত সময় লাগে৷ সেই প্রক্রিয়ায় বায়ুমণ্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইড ও মিথেন নির্গমন ঘটে৷ প্রিন্টিং প্রক্রিয়ায় অ্যালকোহল ও অন্যান্য রাসায়নিক কাগজ থেকে প্রকৃতিতে মিশে যায়৷

আমান্ডা কুলসন-ড্রাসনার/এসবি