1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পরিবেশ সুরক্ষা: তরুণদের এগিয়ে আসার আহ্বান

৩০ অক্টোবর ২০১৯

বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় মুসলিম বিশ্বের তরুণদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে৷ ডয়চে ভেলে এবং ইন্দোনেশিয়ার সিভিল সোসাইটি সংগঠন ওয়াহিদ ফাউন্ডেশন যৌথভাবে এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে৷

https://p.dw.com/p/3SBSS
ছবি: DW/A. Tauqeer

ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় চলছে  দুইদিনের এ সম্মেলন৷ পরিবেশ সুরক্ষায় কোরান এবং হাদিসের নির্দেশনাকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার পথ খুঁজতে এই সেমিনার সহায়ক হবে বলে আয়োজকরা আশা করছেন৷

ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানিয়েছে, জাকার্তার ডাবলট্রি হোটেলে এই সম্মেলনে ওয়াহিদ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক বাবা মুজতবা হামদি ধর্মের অপব্যাখ্যা সম্পর্কে তরুণদের স্মরণ করিয়ে দেন৷

তিনি বলেন, ‘‘মানুষ আল্লাহর প্রতিনিধি৷ সুতরাং প্রতিনিধি হিসাবে মানুষেরই কাজ প্রকৃতির সুরক্ষা করা৷’’

‘‘বর্তমানে ধর্ম রাজনীতির জন্য ব্যবহার হচ্ছে৷ সন্ত্রাস প্রতিষ্ঠার জন্য ব্যবহার হচ্ছে৷ কিন্তু এটা ধর্ম নয়৷ কোরানের ভিন্ন ব্যাখ্যা করে অনেকেই সন্ত্রাস করছে৷ কিন্তু ধর্মে সরাসরি পরিবেশ সংরক্ষণই শুধু নয় টেকসই সুরক্ষার জন্য বলা হয়েছে৷ জলবায়ু পরিবর্তন শুধু নির্দিষ্ট কোন দেশের সমস্যা নয় এটি বৈশ্বিক সমস্যা৷ টেকসই পরিবেশের জন্য আমাদের কাজ করতে হবে৷ তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে৷’’

পরিবেশ সুরক্ষায় বিশ্বব্যাপী তরুণদের এগিয়ে আসার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে ডয়চে ভেলে এশিয়া বিভাগের প্রধান দেবারতি গুহ বলেন, ‘‘পরিবেশ সুরক্ষা একটি বৈশ্বিক ইস্যু৷ আমাদের সতর্ক হওয়ার এখনই সময়৷ পরিবেশ সংরক্ষণে আমাদের কাজ এখনই শুরু করতে হবে৷ তরুণরা এখন এগিয়ে এসেছে৷ বিশ্বব্যাপী তারা আন্দোলন করছে এবং রাজনৈতিক নেতাদের কাছে এখনই সমাধান চাইছে৷’’

পোনডক পেসানট্রেন নুরুল হারমাইনের (ইসলামিক বোর্ডিং স্কুলে) প্রধান তুনান গুরু হাসনাইন জুনাইনি বলেন, ‘‘পরিবেশের সুরক্ষা না করা ধর্ম বিরুদ্ধ৷ যদি আমরা পরিবেশের ক্ষতি করি তার মানে আমরা ঈশ্বরের সৃষ্টিকে নষ্ট করছি৷ ধর্ম এটা অনুমোদন করে না৷’’

মুসলিমদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের প্রমাণ করতে হবে ইসলাম শান্তির ধর্ম৷ এবং পরিবেশ সংরক্ষণ ছাড়া শান্তি আসতে পারে না৷ মুসলিমদেরই এগিয়ে আসতে হবে৷ নবীর উম্মত হিসেবে আমাদেরই সচেতন হতে হবে৷ নবী নিজেই গাছ লাগিয়েছেন৷ তাহলে মুসলিমরা কেন এটাকে গুরুত্ব দিচ্ছে না৷’’

"আমাদের আরও বেশি বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নজর দিতে হবে৷’’

ইন্দোনেশিয়ার পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি ইবু সিসিলিয়াস সিমিস্ত্রি বলেন, ‘‘সামগ্রিকভাবে বিশেষ করে তরুণদেরই এগিয়ে আসতে হবে৷ আমাদের প্ল্যানেট একটাই৷ সুতরাং এটিকেই সংরক্ষণ করতে হবে৷’’

‘‘ইসলাম শান্তির কথা বলে৷ কিন্তু পরিবেশ সংরক্ষণ না করলে শান্তি আসবে না৷ বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যই পরিবেশ সুরক্ষার প্রয়োজন৷ ধর্মীয় শিক্ষায়ও বলা হয়েছে, সকল সৃষ্টির প্রতি দয়াপ্রবণ হতে হবে৷  আর সকলে মিলে যদি আমরা কাজ করি তবেই টেকসই পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবো৷

ইন্দোনেশিয়ার উলামা কাউন্সিলের (মজলিসে উলামা) এনভায়রনমেন্ট ডিপার্টমেন্টের প্রধান হায়ু প্রাবোয়ো বলেন, ‘‘পৃথিবীতে আল্লাহর প্রতিনিধি মানুষ৷ তাই দায়িত্ব আমাদেরই৷ আমাদেরকেই পরিবেশ সংরক্ষণ করতে হবে৷’’

ওয়াহিদ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পরিবেশ সংরক্ষণসহ বিভিন্ন ইস্যুতে শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনে ইসলামের ভূমিকা ও নির্দেশনা মনে করিয়ে দিতে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে৷

প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, বর্তমান প্রজন্মের অনেকে মনে করে ইসলামী শিক্ষা অর্থই হলো হারাম-হালাল নিয়ে আলোচনা৷ এর বাইরেও পরিবেশ সংরক্ষণসহ বিভিন্ন বিষয়ে ইসলাম শিক্ষা দেয় তা অনেকেই ভুলে যান৷

ইসলাম শুধু মুসলমানদের জন্যই নয় বরং বিশ্ব  মানবতার জন্য কাজ করে৷ জলবায়ু পরিবর্তনের মত বৈশ্বিক সমস্যাকে কৌশলগত ইস্যু হিসেবে সামনে রেখে তরুণদের একটি প্ল্যাটফর্মে আনতে এই সম্মেলন কাজ করবে৷

‘মুসলিম রিপ্রেজেন্ট অ্যা মডেল ফরা এনয়ভায়রনমেন্ট স্টুয়ার্ডশিপ' শীর্ষক এই সেমিনারে এছাড়া মুসলিম তরুণদের উগ্রবাদ এবং সহিংসতা থেকে দূরে রেখে পরিবেশ সুরক্ষার মত গুরুত্বপূর্ণ কাজে অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ করার কৌশলগত এবং উদ্ভাবনী পথ খুঁজতেও আলোচনা হবে৷

সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন ওয়ার্লড ক্লিনআপের প্রতিনিধি অগাস্টিনা ইসকান্দার, দ্যা নোবেল কমিউনিটি অব ইন্দোনেশিয়ার প্রতিনিধি সুপ্রিত সুহার্তো, পাকিস্তানের পরিবেশ আন্দোলনের কর্মী এবং সল্যুশন প্রোভাইডার আহমাদ সাব্বার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ব ধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক আবু সায়েম, ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ড লাইফ ফান্ড ইন্দোনেশিয়ার নির্বাহী পরিচালক রিজাল মালিক৷

এডিকে (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)