মো. রাকিব এই পদক্ষেপের জন্য মন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন৷ সাইফুল ইসলাম থান্দারও বিষয়টি পছন্দ করেছেন এবং স্বাগত জানিয়েছেন৷ খুশি হয়েছেন পাঠক মানিক মাহমুদও৷
তবে মো. আনিস কিন্তু এ ব্যাপারে মোটেই আশাবাদী নন৷ তিনি একটি উদাহরণ দিয়েছেন৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘বুড়িগঙ্গা নদীর অবৈধ উচ্ছেদ অভিযান এক সপ্তাহও টেকেনি, মাত্র একটি ফোনেই সব শেষ হয়ে গেছে৷''
যদিও পাঠক সৈয়দ সাইমনের মত এ বিয়য়ে একটু ভিন্ন৷ তিনিমন্ত্রীর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন৷ তবে তরুণদের দূরে রাখা কঠিন হবে বলে মনে করেন তিনি৷ তাঁর ধারণা, তরুণরা এখন আইপি পরিবর্তন করে বা ভিপিএন দিয়ে অন্যভাবে পর্নসাইটগুলো দেখতে পারে৷
-
বাংলাদেশে পর্নোগ্রাফি: শুরু থেকে বিস্তার
দেশি চটি বই থেকে বিদেশি ‘প্লেবয়’
একটা সময় পর্যন্ত ঢাকায় তো বটেই, দেশের প্রায় সব মফঃস্বল শহরেও গোপনে বিক্রি হতো ‘চটি বই’৷ আদিরসাত্মক গল্পের সেই বইগুলো লেখা হতো ছদ্মনামে৷ চটি বইয়ের বাইরে ‘জলসা’, ‘নাট্যরাজ-’এর মতো নিরীহ নামের কিছু ‘পিনআপ’ ম্যাগাজিনও ছিল, যেগুলো প্রকাশের উদ্দেশ্যই ছিল নারীদেহ এবং যৌনকর্মের পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা দিয়ে পাঠক মনে যৌন উদ্দীপনা জাগানো৷ এছাড়া বড় শহরগুলোয় ‘প্লেবয়’ ম্যাগাজিনও পাওয়া যেত৷
-
বাংলাদেশে পর্নোগ্রাফি: শুরু থেকে বিস্তার
ভিসিআরের হাত ধরে ‘ব্লু ফিল্ম’
ভিডিও ক্যাসেট রেকর্ডার, অর্থাৎ ভিসিআরের কয়েক বছর পর হয়ত কোনো চিহ্নই থাকবে না৷ গত বছরের জুনেজাপানে তৈরি হলো বিশ্বের সর্বশেষ ভিসিআর৷ মানে বিশ্বের কোথাও আর কখনো ভিসিআর তৈরি হবে না৷ বাংলাদেশে পর্নোগ্রাফির বিস্তারে এই ভিসিআর একসময় খুব বড় ভূমিকা রেখেছে৷ প্রেক্ষাগৃহে না গিয়ে ঘরে বসে হিন্দি, ইংরেজি ছবি দেখা শুরু হয়েছিল ভিসিআর দিয়ে৷ একটি চক্র তখন নানা জায়গায় গোপনে ‘ব্লু ফিল্ম’-ও দেখাতে শুরু করে৷
-
বাংলাদেশে পর্নোগ্রাফি: শুরু থেকে বিস্তার
সিনেমা হলে ‘কাটপিস’
দেশের কিছু প্রেক্ষাগৃহে হলিউডের মুভি দেখানো হতো৷ এক সময় ঘোষিত মুভির ফাঁকে ফাঁকে দেখানো শুরু হয় ‘ব্লু ফিল্ম’৷ এই প্রবণতা অন্য হলগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ে৷ বাংলা ছবির ফাঁকে ফাঁকে দেখানো শুরু হয় ‘কাট পিস’, অর্থাৎ পর্নো ছবির অংশ বিশেষ৷
-
বাংলাদেশে পর্নোগ্রাফি: শুরু থেকে বিস্তার
সিডি থেকে ডিভিডি
কম্পিউটারের আগমনের পর থেকে অল্প অল্প করে কমপ্যাক্ট ডিস্ক, অর্থাৎ সিডিতেও ঢুকে পড়ে পর্নো ছবি৷ সেই ছবি পৌঁছে যায় ঘরে ঘরে৷ সিডির পর এলো ডিজিটাল ভার্সেটাইল ডিস্ক, অর্থাৎ ডিভিডি৷ ভার্সেটাইল ডিস্ক দেশে জ্ঞান এবং সংস্কৃতির চর্চা ও বিকাশে নিঃসন্দেহে ‘ভার্সেটাইল’ ভূমিকাই রাখছে, তবে পাশাপাশি যে পর্নোগ্রাফির ধারক, বাহক হিসেবেও এর একটা পরিচিতি গড়ে উঠেছে তা-ও অস্কীকার করা যাবে না৷
-
বাংলাদেশে পর্নোগ্রাফি: শুরু থেকে বিস্তার
অন্তর্জালে পর্নোজাল
গত কয়েক বছরে দেশে ইন্টারনেট ও তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার বিষ্ময়কর হারে বেড়েছে৷ সর্বশেষ হিসেব অনুযায়ী, বাংলাদেশে মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৬ দশমিক ৬৮ কোটি৷ ইন্টারনেটের অপব্যবহার আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে৷ পর্নোসাইটের দৌরাত্ম এত ভয়াবহভাবে যে, সম্প্রতি পর্নোগ্রাফি ও আপত্তিকর কন্টেন্ট প্রকাশ বন্ধের উদ্যোগ হিসেবে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (বিটিআরসি) পাঁচশ’রও বেশি পর্নোসাইট বন্ধ করেছে৷
-
বাংলাদেশে পর্নোগ্রাফি: শুরু থেকে বিস্তার
মোবাইল ফোনে পর্নোগ্রাফি
দেশের ৬ দশমিক ৬৮ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ৯৪ দশমিক ১৮ শতাংশই মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্রাউজ করে৷ ফলে মোবাইলই হয়ে উঠেছে পর্নোগ্রাফির সবচেয়ে বড় উৎস৷ হাতে হাতে মোবাইল, তাই পর্নোগ্রাফি ও আপত্তিকর কন্টেন্টও হয়ে উঠেছে সহজলভ্য৷
-
বাংলাদেশে পর্নোগ্রাফি: শুরু থেকে বিস্তার
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক একবার জাতীয় সংসদে জানিয়েছেন, ‘‘দেশে প্রতি ১২ সেকেন্ডে অন্তত একটি করে নতুন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খোলা হচ্ছে৷’’ নতুন অ্যাকাউন্টগুলোর উল্লেখযোগ্য একটি অংশই ‘ভুয়া’৷ এভাবে কিছু লোক ফেসবুক, টুইটারেও নানা ধরণের অপতৎপরতা চালাচ্ছে৷ এর ফলে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেও পর্নোগ্রাফির বিস্তার বাড়ছে৷
লেখক: আশীষ চক্রবর্ত্তী
আর আদনান বায়োজিদ মন্তব্য করেছেন, ‘‘পৃথিবীতে শুধুমাত্র বাংলাদেশেই পর্নসাইট বন্ধ করার জন্য মন্ত্রী রয়েছেন৷ তাঁকে নিয়ে আমরা গর্বিত৷''
এদিকে শায়ন শাহ মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে লিখেছেন, ‘‘পর্নসাইট বন্ধ না করে আগে ইউসি ব্রাউজার ও বাংলা চটি সাইটগুলো বন্ধ করুন মন্ত্রী সাহেব৷ আপনার নিষিদ্ধ করা পর্নসাইট অনায়াসে ইউসি ব্রাউজার দিয়ে চালানো যাচ্ছে৷'' শায়ন শাহের মতে, ‘‘ পর্নসাইটের কারণে শিশুরাকুসংসর্গে পড়ে গোল্লায় যাচ্ছে৷ শারীরিক, মানসিক ক্ষতি হচ্ছে ব্যাপকভাবে৷ পড়াশুনার ক্ষতি তো হচ্ছে, সেই সঙ্গে নৈতিকতা, সৃজনশীলতা নষ্ট হচ্ছে৷ চরিত্রহীন হচ্ছে আমাদের যুব সমাজ৷ বাড়ছে পরকীয়া, ভেঙে যাচ্ছে সংসার৷''
সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার
সম্পাদনা: জাহিদুল হক