1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সাংস্কৃতিক অনুদানে টান

শীর্ষ বন্দোপাধ্যায়, কলকাতা১০ জুন ২০১৩

পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের হাতে যথেষ্ট পয়সা নেই৷ যার প্রভাব পড়ছে বিভিন্ন শিল্প-শিক্ষা-সংস্কৃতি গবেষণা সংস্থার সরকারি অনুদানে৷

https://p.dw.com/p/18mDN
ছবি: Prabhakar

ফলে অর্থের অভাবে পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু শিক্ষা, সংস্কৃতি ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সরকারি অর্থসাহায্য অচিরেই বন্ধ হয়ে যেতে পারে৷

এই প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে রয়েছে অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস, সংস্কৃত সাহিত্য পরিষদ, গৌড়ীয় মিশনের মতো প্রায় ২৫টি সংস্থা৷ এই তালিকার বাইরে ইনস্টিটিউট অফ ডেভেলপমেন্টাল স্টাডিজ, বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ, ইনস্টিটিউট দ্য চন্দননগর-এর মতো বেশ কিছু নামি সংস্থা রয়েছে, যেগুলোর জন্য বরাদ্দ সরকারি আর্থিক অনুদান তাদের গুরুত্ব ও প্রয়োজন অনুযায়ী পুনর্বিবেচিত হবে৷ একমাত্র রক্ষা পাচ্ছে ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অফ সায়েন্স, ইনস্টিটিউট ফর হিস্টোরিকাল স্টাডিজ, সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোশাল সায়েন্সেস-এর মতো সেইসব গবেষণা প্রতিষ্ঠান, যেগুলোকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার দায়িত্ব কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার ভাগাভাগি করে নেয়৷ কলকাতার গোলপার্কে অবস্থিত রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অফ কালচার রয়েছে এই তালিকায়৷ কিন্তু রামকৃষ্ণ মিশনেরই একাধিক প্রতিষ্ঠান পড়তে পারে আর্থিক বিড়ম্বনায়৷ যেমন নরেন্দ্রপুর, পুরুলিয়া এবং বরাহনগর, এই তিনটি জায়গার রামকৃষ্ণ মিশন সরকারি অর্থসাহায্যের তালিকায় রয়েছে৷ কিন্তু নিরুপায় সরকার এখন এদের অনুদানের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করবে গুরুত্ব অনুযায়ী৷ মুর্শিদাবাদের সারগাছির রামকৃষ্ণ মিশনও রয়েছে এই বিবেচনার তালিকায়৷

Mamta Minderheit
সরকারের হাতে যথেষ্ট পয়সা নেই, যার প্রভাব পড়ছে বিভিন্ন শিল্প-শিক্ষা-সংস্কৃতি গবেষণা সংস্থার সরকারি অনুদানেছবি: DW

পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের বয়স মাত্র আড়াই বছর৷ এই সময়ের মধ্যেই সরকারি কোষাগারে নেই নেই রব৷ তার একটা কারণ যদিও পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকারের রেখে যাওয়া ২২০০ কোটি টাকার ঋণের বোঝা৷ এই বিপুল পরিমাণ ঋণের সুদ গুণতেই খরচ হয়ে যায় রাজ্য সরকারের যাবতীয় উপার্জন৷ জাতীয় কংগ্রেসের সঙ্গে রাজনৈতিক এবং নির্বাচনী সমঝোতায় গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোটে বিপুল জয়লাভের পর তৃণমূল কংগ্রেসের আশা ছিল, জোটসঙ্গী কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রের ইউপিএ সরকার সম্ভবত পশ্চিমবঙ্গের প্রতি একটু বাড়তি সহানুভূতি দেখাবে৷ হয়ত কয়েক বছরের জন্য সুদ দেওয়ার হাত থেকে রেহাই মিলবে, হয়ত রাজ্যের জন্য মঞ্জুর হবে বিশেষ আর্থিক সহযোগিতার প্যাকেজ৷ কিন্তু বাস্তবে তার কিছুই হয়নি৷ অন্য রাজ্য কী দোষ করল, এই যুক্তিতে পশ্চিমবঙ্গকে কোনও বাড়তি সুবিধা দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার৷ কংগ্রেসের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার এটাও একটা বড় কারণ৷ অন্যদিকে তৃণমূল সরকারের অর্থনৈতিক পরিকল্পনাহীনতা এবং দূরদৃষ্টির অভাবও রাজ্যের কোষাগার খালি করেছে৷ এবং এখন রাজ্যের আশু প্রয়োজন মেটাতে গিয়ে কোপ পড়ছে অনুদানপ্রাপ্ত সংস্থার ঘাড়ে৷

Indien Das Literaturfest in Kolkata
বর্ষীয়ান শিল্পীদের ভাতা অনিয়মিত হয়ে পড়েছেছবি: DW

আরও একটি অশনি সংকেত পাওয়া যাচ্ছে ইদানীং৷ রাজ্য সরকারের অবসরকালীন ভাতা ও আর্থিক সাহায্যের তালিকায় যেসব বর্ষীয়ান শিল্পীরা ছিলেন, তাঁদের জন্য বরাদ্দ অর্থ গত দু মাস ধরে অনিয়মিত হয়ে পড়েছে৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতা পাওয়ার পর দরাজ হাতে প্রবীণ শিল্পীদের এই ভাতা দেওয়া শুরু হয়েছিল৷ এক্ষেত্রে কে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ছিলেন বা আছেন, তা না দেখেই, বিশেষত দুস্থ শিল্পীদের প্রয়োজন বুঝে সরকারি ভাতার বন্দোবস্ত করা হয়েছিল৷ কিন্তু গত আর্থিক বর্ষের শেষ থেকেই এই ভাতা কারও কারও ক্ষেত্রে অনিয়মিত হয়ে পড়েছে৷ প্রথমে বলা হয়েছিল, বাৎসরিক হিসেব নিকেশ চলছে বলে এপ্রিল মাসের ভাতা আসতে দেরি হচ্ছে৷ কিন্তু এখন জুন মাস পড়ে গেলেও এপ্রিলের ভাতা কারও কারও ক্ষেত্রে জমা পড়েনি৷ জানা গিয়েছে, কারণটা নাকি একই৷ অর্থাৎ সরকারি কোষাগারে যথেষ্ট অর্থের অভাব৷ কিন্তু সমস্যা হলো, এক্ষেত্রে কার কাছে দরবার করলে লাভ হবে, বর্ষীয়ান শিল্পীরা সেটা বুঝে উঠতে পারছেন না৷ কারণ খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও এক্ষেত্রে হাত-পা বাঁধা৷ যে জন্য সরকারি আর্থিক অনুদান সংক্রান্ত নীতিই পরিবর্তিত হতে চলেছে৷ নয়া সিদ্ধান্তে, নির্দিষ্ট এক ডজন সংস্থার জন্য আর্থিক বরাদ্দের বন্দোবস্ত থাকবে৷ তার পর যদি সরকারের হাতে উদ্বৃত্ত অর্থ থাকে, তবেই অতিরিক্ত আর্থিক অনুদান বিবেচনায় আসবে৷ বলা বাহুল্য, এর সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে৷ অবশ্য যদি সেই বাড়তি অর্থ বরাদ্দ সরকারের পক্ষে সম্ভবও হয়, বেতন খাতে কোনও সংস্থাকে অর্থসাহায্য না দেওয়ারই সিদ্ধান্ত হয়েছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য