পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচনে প্রথম দফার ভোট শেষ হলো
১৮ এপ্রিল ২০১১দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, উত্তর দিনাজপুর, কুচবিহার, দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদা – এই ছয় জেলায় মোট ৯৭ লক্ষ ৪২ হাজার ভোটার ৩৬৪ জন প্রার্থীর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবেন, যাদের মধ্যে বিদায়ী বামফ্রন্ট মন্ত্রিসভার ১১ জন মন্ত্রীও আছেন৷
ভোট দেওয়া নিয়ে এদিন সকাল থেকেই ব্যাপক উৎসাহ ছিল মানুষের মধ্যে৷ অনেক জায়গাতেই সকাল সাতটা থেকেই বুথের বাইরে লম্বা লাইন দাঁড়িয়ে যায়৷ ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার প্রথম দু'ঘণ্টায় ভোটের হার ছিল ১৪ শতাংশ৷ দুপুর একটার মধ্যেই ৫০ শতাংশ ভোট পড়ে যায়৷ দুপুর তিনটে পর্যন্ত ভোটের হার ছিল ৬১ শতাংশ৷ বৈদ্যুতিন ভোটগ্রহণ যন্ত্র বিকল হয়ে পড়ায় ভোটারদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়ানো ছাড়া বড় কোনোও হাঙ্গামা-অশান্তির খবর পাওয়া যায় নি৷ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ছয় জেলার ৫৪টি বিধানসভা কেন্দ্রের সর্বত্র ব্যাপক সংখ্যায় রাজ্য পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন রয়েছে৷
সিপিএম এবার উত্তরবঙ্গে ৩২টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে৷ এছাড়া সিপিআই দুটি, ফরওয়ার্ড ব্লক ১০টি, আরএসপি নয়টি এবং সোশালিস্ট পার্টি একটি আসনে প্রার্থী দিয়েছে৷ অন্যদিকে বিরোধী তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী দিয়েছে ২৬টি আসনে এবং জোটসঙ্গী কংগ্রেস প্রার্থী দিয়েছে ২৭টি আসনে৷ বিরোধী জোটের আসন সমঝোতায় এই একটি জায়গাতেই কংগ্রেসকে অনেকটা ছাড় দিতে বাধ্য হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেহেতু উত্তরবঙ্গ দীর্ঘদিন ধরে কংগ্রেসের ঘাঁটি৷ অন্যদিকে বিজেপি এখানে মোট ৮৯টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে৷ রাজ্যের কোথাও এর আগে এত বেশি সংখ্যক প্রার্থী দেয়নি বিজেপি৷ তার একটা কারণ পাহাড়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সঙ্গে বিজেপির পুরনো রাজনৈতিক আঁতাত৷ মোর্চা অবশ্য ঘোষণা করেছে সমস্ত বিরোধী প্রার্থীদের সমর্থন দেওয়ার, যেহেতু বামফ্রন্টের উচ্ছেদই তাদের একমাত্র লক্ষ্য৷ ফলে বিশেষত দার্জিলিং এবং ডুয়ার্স অঞ্চলে বেশ বেকায়দায় বামেরা৷ মূলত ডুয়ার্সের চা বাগানগুলির শ্রমিক ইউনিয়নের ভরসায় এখানকার মোট ১২টি বিধানসভা আসনের ১১টিই এতদিন ছিল বামেদের দখলে৷ এই কর্তৃত্ব এবার ধরে রাখা শক্ত হবে, যেহেতু গোর্খা ভোট এবং আদিবাসী ভোট – দুই হারাচ্ছে বামেরা৷ আদিবাসী বিকাশ পরি,দ এবার ছটি আসনে প্রার্থী দিয়েছে৷
প্রতিবেদন: শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন