1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হরতালে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১ জুন ২০১৩

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, ডিসিসিআই-এর গবেষণায় দেখা গেছে গত পাঁচ মাসের হরতালে বাংলাদেশের শিল্প এবং ব্যবসা-বণিজ্য খাতে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ৫১ হাজার কোটি টাকা৷ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তৈরি পোশাক খাত৷

https://p.dw.com/p/18i2l
ছবি: picture-alliance/dpa

তবে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বাস্তবে ক্ষতির পরিমাণ আরো বেশি৷

জানুয়ারি থেকে মে – এই পাঁচ মাসে দেশব্যাপী হরতাল হয়েছে ৩২ দিন৷ এর বাইরে আঞ্চলিক হরতাল এবং অবরোধসহ অন্যান্য কর্মসূচি ছিল, যা স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত করেছে৷ ডিসিসিআই গবেষণা করে দেখিয়েছে যে প্রতিদিনের হরতালে ক্ষতির পরিমাণ ১ হাজার ৬শ' কোটি টাকা৷ সেই হিসেবে ৩২ দিনের হরতালে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৫১ হাজার কোটি টাকা৷ এই ক্ষতির শীর্ষে আছে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প৷ এক দিনের হরতালে পোশাক শিল্পে ৩৬০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়৷ আর ৩২ দিনের হরতালে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা৷

তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ-এর সহ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান ডয়চে ভেলেকে জানান, দীর্ঘ মেয়াদে এর চেয়ে বড় ক্ষতির মুখে পড়ছে পোশাক শিল্প৷ ক্রেতারা হরতালসহ রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বাংলাদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছে৷ এর প্রধান কারণ হলো তাদের নির্ধারিত সময়ে পোশাক সরবারাহ করা যাচ্ছে না৷ হরতাল অবরোধের কারণে উত্‍পাদন পুরোপুরি বন্ধ না থাকলে পরিবহন বন্ধ থাকে৷ তিনি জানান, এসব কারণে পোষাক খাতে প্রবৃদ্ধির ধারা এখন নিম্নমুখী৷ ক্রেতারা এখন চীন, ভিয়েতনাম, মিয়ানমার, তাইওয়ান এবং কম্বোডিয়ার দিকে চলে যাচ্ছে৷ তিনি বলেন, সস্তা শ্রমের কারণে পোশাকের দাম কম হলেই চলবে না৷ ঠিক সময়ে পোশাক সরবরাহ করাও জরুরি৷

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ড. হেলাল উদ্দিন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ডিসিসিআই-এর হিসাবে বাস্তবতার প্রতিফলন ঘটেনি৷ তিনি বলেন, বাস্তবে এই ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি৷ তাঁর মতে, শুধু এই পাঁচ মাস কেন, বাংলাদেশে যদি হরতাল অবরোধসহ রাজনৈতিক অস্থিরতা না থাকত তাহলে প্রবৃদ্ধির হার হতো শতকরা ১০ ভাগ৷ ডিসিসিআই বর্তমান অবস্থায় উত্‍পাদন ক্ষতির হিসেব ধরে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ হিসেব করেছে৷ কিন্তু এই চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় যে সম্ভাবনা নষ্ট হয়েছে তার হিসেব করেনি তারা৷

তিনি বলেন, এই অবস্থা চলতে থাকলে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে বড় ধরনের অর্থনৈতিক সংকটে পড়বে৷ এরই মধ্যে বিদেশি বিনিয়োগ কমে যাচ্ছে৷ কমছে রপ্তানি৷ এই ধারা চলতে থাকলে তা অর্থনীতির জন্য হবে বড় আঘাত৷ তাতে বেকারত্ব বাড়বে৷ তার সঙ্গে কর্মসংস্থানের সুযোগ যেমন কমবে, তেমনই যাঁরা এখন কাজ করছেন তাঁদের একাংশও কাজ হারাবেন৷

এর বাইরে আরো একটি বড় ধরনের আশঙ্কার কথা বলেন ড. হেলাল৷ তিনি বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতায় তরুণ সমাজের একটি অংশ সেখানে ব্যবহৃত হয়৷ এছাড়া, হেফাজতের মতো মৌলবাদী শক্তির উত্থান হয়৷ সেখানেও তরুণরা জড়িয়ে পড়েন৷ যার ফলে যে তরুণদের উত্‍পাদন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে অংশ নেয়ার কথা, তাঁরা তা না করে ধ্বংসাত্মক কাজে জড়িয়ে পড়েন৷ যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে অর্থনীতিতে৷