1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পাজল তৈরি করে বিশ্বজয়

৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮

রুবিক্স কিউবের রং মেলানোর চ্যালেঞ্জ অনেকেই গ্রহণ করেছেন৷ নেদারল্যান্ডসের এক উদ্ভাবক তার আরো জটিল সংস্করণসহ নিত্যনতুন পাজল সৃষ্টি করে চলেছেন৷ এমনকি বিয়ের প্রস্তাব দিতেও তাঁর তৈরি পাজল ব্যবহার করা হচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/34P0T
ছবি: DW

অস্কার ফান ডেফেন্টার জটিল খেলা পছন্দ করেন৷ তিনি পাজল ডিজাইন ও তৈরি করেন৷ যেমন, এক বন্ধুর জন্য অভিনব একটি পাজল তৈরি করেছেন তিনি৷ অস্কার বলেন, ‘‘সে তার বান্ধবী মিন্ডিকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে চেয়েছিল৷ আমাকে সে এমন এক রুবিক্স কিউব ডিজাইন করতে বলল, যা সমাধান করলে খুলে যায়৷ ভাবুন, কিউবের ভেতরে কী থাকবে? অবশ্যই আংটি৷ অবশ্যই সে তখন প্রশ্ন করল, আমাকে বিয়ে করবে? মেয়েটি ‘হ্যাঁ’ বলল৷’’

পাজল সমাধান করলে তবেই সেই আংটি হাতে আসে৷ ১৯৭৮ সাল থেকে ওলন্দাজ এই ডিজাইনার পাঁচশ'রও বেশি পাজল সৃষ্টি করেছেন৷ পেশায় তিনি এক গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানী৷ পাজল তৈরি তাঁর শখ৷ বেশ কম বয়সেই তার সূচনা ঘটেছিল৷ অস্কার ফান ডেফেন্টার বলেন, ‘‘তখন আমার ১২ বছর বয়স৷ ‘পাজলস অফ দ্য ওয়ার্ল্ড’ নামের একটি বই হাতে এসেছিল৷ তাতে পাজল তৈরির কৌশল দেখানো হয়েছিল৷ বই দেখে তখন থেকেই অনেকগুলি পাজল তৈরি করেছিলাম৷ তারপর নিজেই ডিজাইন শুরু করলাম৷’’

Euromaxx |  Rätselspieldesigner Oskar van Deventer
ছবি: DW

একটি পাজলের প্রোটোটাইপের জন্য কাঠ চেঁচে অংশগুলি তৈরি করছেন তিনি৷ কখনো তিনি দেশলাইয়ের বাক্সও ব্যবহার করেন৷ ২০০৩ সালে তিনি থ্রিডি প্রিন্টিং প্রযুক্তি কাজে লাগাতে শুরু করেন৷ এখন একটি কোম্পানি তাঁর বায়না অনুযায়ী পলিঅ্যামিড দিয়ে তাঁর ডিজাইন অনুযায়ী অংশগুলি তৈরি করে৷

বাকি সব কাজ বাড়িতেই করেন অস্কার৷ অংশগুলিকে রং করে সেগুলি জোড়া দেন৷ বেশ কিছু ডিজাইনের ক্ষেত্রে দক্ষতার সঙ্গে আঠা লাগাতে হয়৷ এমন শখের জন্য অনেক সময় ও পরিশ্রমের প্রয়োজন৷ অনেক বছর ধরে তা থেকে কোনো আয়ও হয়নি৷ অস্কার বলেন, ‘‘প্রথম বিশ-পঁচিশ বছরে আমি একটি পাজলও বিক্রি করিনি৷ অতএব সেটা কঠিন সময় ছিল৷’’

২০০৮ সালে ইন্টারনেটের কল্যাণে প্রথম সাফল্য আসে৷ প্রতি সপ্তাহে তিনি ইউটিউবে ‘অস্কারপাজল’ চ্যানেলে একটি করে পাজল তুলে ধরেন৷ কিছু ভিডিও ৩০ লক্ষ ক্লিকও পায়৷

নেদারল্যান্ডসের লাইডশেনডাম শহরে নিজের বাড়িতেই ভিডিওগুলি তৈরি হয়৷ স্ত্রী ইয়োসে তাঁকে সাহায্য করেন৷ ৩০ বছরেরও বেশি আগে তাঁদের বিয়ে হয়েছিল৷ ২০০৮ সাল থেকে তাঁরা একসঙ্গে ভিডিও তৈরি করেন৷ ইউটিউবে আচমকা সাফল্য এসেছিল৷ অস্কার বলেন, ‘‘ইউটিউব চ্যানেল শুরু করার পেছনে একটি কারণ ছিল৷ আমি জাপানে এক নির্মাতাকে আমার তৈরি একটি পাজল দেখাতে চেয়েছিলাম৷ প্রোটোটাইপ পাঠাতে চাইনি, কারণ, তাতে কয়েক সপ্তাহ সময় লেগে যেত৷ ২০০৮ সাল নাগাদ ইউটিউব সবে শুরু হয়েছে৷ আমি ভিডিও তৈরি করে জাপানে তার লিংক পাঠিয়ে দিলাম৷’’

এভাবে প্রায় ৫০টি প্রোটোটাইপ খেলনা প্রস্তুতকারকদের কাছে পাঠানো হয়েছে৷ তারপর বড় আকারে তার উৎপাদন শুরু হয়েছে৷ যেমন, বিয়ের উপহারের বাক্সটি৷

২০১১ সালে তাঁর নাম গিনেস বুকে স্থান পায়৷ সেটাই এ পর্যন্ত সবচেয়ে জটিল প্রকল্প৷ ১,৫৩৯টি অংশ দিয়ে তৈরি এক ম্যাজিক কিউব৷ সেটি সমাধান করা সম্ভব হলেও তাতে অনেক সময় লাগে৷

এত উদ্ভাবন রাখার জন্য ঘরে আর জায়গা হচ্ছে না৷ অস্কার ফান ডেফেন্টার নিশ্চয় তারও সমাধান খুঁজে বার করবেন৷

ফ্রানৎসিক্সা ভার্টেনব্যার্গ/এসবি