1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পানিতে ভাসা মরদেহটি কি রোহিঙ্গা শিশুর?

২৯ আগস্ট ২০১৭

কাদা পানিতে ভাসছে একটি শিশুর মরদেহ৷ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকের দাবি, নাফ নদী পার হতে গিয়ে পানিতে ডুবে মরা এক শিশুর ছবি এটি৷ সত্যিই কি তাই?

https://p.dw.com/p/2j17v
Bangladesh, Flüchtlingskonflikt in Myanmar
ছবি: Getty Images/R.Asad

শিশুটির দু'টো ছবি সোমবার থেকে ফেসবুকে শেয়ার হচ্ছে৷ একটি ছবিতে তার মরদেহ কাদা পানিতে ভাসছে৷ অপর ছবিটি মরদেহ উদ্ধারের পর তোলা৷ ছবি দু'টো আয়লান কুর্দির কথা মনে করিয়ে দেয়৷ ২০১৫ সালে তুরস্কের সমুদ্রতটে পাওয়া গিয়েছিল ছোট্ট আয়লানের মৃতদেহ৷ যুদ্ধ থেকে বাঁচতে সিরিয়া থেকে পালিয়ে আসা শিশুটি সমুদ্রের পানিতে ডুবে মরেছিল৷ তার সেই ছবি গোটা বিশ্বের আলোড়ন সৃষ্টি করে৷ ইউরোপও সিরীয় শরণার্থীদের প্রতি সদয় হয়৷ 

গতকাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত ছবিটির সঙ্গে যে তথ্য প্রকাশ হচ্ছে তা-ও একইরকম৷ বলা হচ্ছে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সেদেশের সেনাবাহিনীর সহিংস অভিযান থেকে পালিয়ে বাঁচতে নাফ নদী পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে চেয়েছিল শিশুটি৷ কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি৷ ডুবে মরেছে সে৷

কথিত রোহিঙ্গা শিশুটির ছবি অনেকের মনেই দাগ কেটেছে৷ তবে ছবিটির সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে৷ অতীতে দেখা গেছে, অন্য কোনো ঘটনার, নির্যাতনের ছবি রোহিঙ্গাদের বলে দাবি করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে৷ এবারও কি তাই ঘটছে?

ইন্টারনেটে কোনো ছবির আসল উৎস জানার এক সহজ উপায় হচ্ছে গুগলের রিভার্স ইমেজ সার্চ এবং টিনআই৷ ফেসবুকে পাওয়া ছবিটি সেখানে সার্চ করে দেখা যাচ্ছে যে, সোমবার অল্প সময়ের ব্যবধানে ‘এনসোনহাবের' নামের একটি তুর্কি নিউজ সাইটে এবং ‘জাফনা মুসলিম' নামের একটি তামিল ব্লগসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে৷ ব্লগসাইটটিতে ছবিটির সঙ্গে যে লেখা রয়েছে তাতে মিয়ানমারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে৷ আর লেখকের নাম রয়েছে আস-শেখ টিএম মুফারিস রাশাদী৷ তিনি তাঁর ফেসবুক পাতাতে গতকাল ছবি দু'টি প্রকাশ করেন, যা শুধুমাত্র তাঁর প্রোফাইল থেকেই শেয়ার হয়েছে পাঁচ শতাধিকবার৷ তাঁর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি৷ ফেসবুক ম্যাসেজেরও কোনো উত্তর তিনি এই ব্লগ লেখা পর্যন্ত দেননি৷ ফটোফরেনসিক নামক আরেকটি ওয়েবসাইট রয়েছে, যেখানে একটি ছবি কতটা পুরনো সে সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা পাওয়া যায়৷ তুর্কি নিউজওয়েবসাইটে প্রকাশিত ছবিটি পর্যালোচনা করে দেখা যাচ্ছে, ছবিটি পুরাতন নয়৷ আর ইন্টারনেটেও গতকালের আগে ছবিটি কখনো প্রকাশ করা হয়নি বলে জানাচ্ছে গুগল৷ ডয়চে ভেলের একজন পাঠক অবশ্য জানিয়েছেন যে, রবিবার টুইটারে এক ব্যক্তি আরো কয়েকটি ছবির সঙ্গে নিহত শিশুর ছবিটিও শেয়ার করেছিলেন৷ 

আরাফাতুল ইসলাম, ডয়চে ভেলে

তাছাড়া, ছবিতে কাদামাখা যে পানি দেখা যাচ্ছে, তা পাহাড় ঘেঁষে বয়ে চলা নদীর পানি হতে পারে৷ তবে প্রশ্ন থেকে যায় ছবির উৎস নিয়ে৷ ‘জাফনা মুসলিম' শ্রীলঙ্কাভিত্তিক একটি ব্লগ৷ তাদের কাছে এই ছবি কিভাবে পৌঁছালো তা জানা যায়নি৷ এজন্য ব্লগটির সঙ্গে ইমেল ও স্কাইপে যোগাযোগ করা হলেও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি৷ আর তুর্কি নিউজসাইটটিতে ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাদের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি৷ ফলে ছবিটি সত্যিই রোহিঙ্গা কোনো শিশুর কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না৷

আপনি কি ছবিটির সম্পর্কে অন্য কোনো তথ্য জানেন? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷