1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পাহাড়চূড়ায় মিষ্টিমুখের অভিনব অভিজ্ঞতা

ডানিয়েলা শুলৎস/এসবি১০ মে ২০১৭

প্রায় ৩,৫০০ মিটার উচ্চতায় হিমবাহের উপর রেস্তোরাঁয় বসে অস্ট্রিয়ার জনপ্রিয় ‘কাইজারশ্মার্ন’ খাওয়ার মজাই আলাদা৷ তবে এমন রেস্তোরাঁ ও কনফেকশনারি চালানোর কাজ মোটেই সহজ নয়৷

https://p.dw.com/p/2ciRe
Eröffnung Café 3.440 auf dem Pitztaler Gletscher in Tirol
ছবি: Pitztaler Gletscherbahn

পিৎসটাল হিমবাহ অস্ট্রিয়ার উচ্চতম স্কিয়িং এলাকা৷ মে মাস পর্যন্ত স্কিয়িং মরসুম চালু থাকে৷ ৩টি রেস্তোরাঁয় স্কি-প্রেমীরা খাওয়াদাওয়া করতে পারেন, তার মধ্যে একটি হিমবাহের শীর্ষে প্রায় ৩,৫০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত৷ বাকিগুলির উচ্চতা ৩,০০০ মিটার উচ্চতার কাছাকাছি৷

যাঁরা স্কি করতে আসেন, তাঁদের অন্যতম প্রিয় পদের নাম ‘কাইজারশ্মার্ন', যা এক ধরনের মিষ্টি৷ অস্ট্রিয়া, বিশেষ করে আল্পস পর্বতে এই খাবার অত্যন্ত জনপ্রিয়৷ কারো দাদি-নানির রান্নার কথা মনে পড়ে যায়৷ দুই রেস্তোরাঁর কাছেই অস্ট্রিয়ার সর্বোচ্চ কনফেকশনারি বা কেকের দোকান৷ স্টেফানি সান্টেলের সেখানে কাজে ব্যস্ত৷ তিনি বলেন, ‘‘এখানেই আমরা সব কিছু বেক করি, দুই রেস্তোরাঁর জন্য সব মিষ্টি এখানেই তৈরি হয়৷ উপরের কাফের জন্যও তাজা কেক-মিষ্টি এখান থেকেই যায়৷'' 

প্রতিদিন সকালে কেবল কারে অস্ট্রিয়ার সর্বোচ্চ কাফেতে কেক-মিষ্টি পাঠানো হয়৷ কাফে'র নাম অনুবাদ করলে দাঁড়ায় ‘কাফে তিন-চার-চল্লিশ'৷ কনফেকশনরি থেকেও প্রায় ৬০০ মিটার উপরে সেটি অবস্থিত৷ অসাধারণ দৃশ্য দেখতে দেখতে সেখানে হিমবাহ তুষার কেক খাওয়ার মজাই আলাদা!

তবে এই উচ্চতায় কেক তৈরির নানা ফ্যাসাদ আছে৷ স্টেফানি সান্টেলের এ বিষয়ে বলেন, ‘‘২,৮৪০ মিটার উচ্চতায় বাতাসের চাপের কারণে স্পঞ্জ কেকের বেস নিয়ে ৩,৪৪০ মিটার উচ্চতায় স্ফুটনাঙ্ক বা জল ফোটার তাপমাত্রা নিয়ে সমস্যা হয়৷ খারাপ আবহাওয়ার পূর্বাভাষ থাকলে কেকের বেস একদিন আগেই তৈরি করে ফেলি৷ তা না হলে কেক হালকা হয় না৷

তবে ‘কাইজারশ্মার্ন' বানাতে এত কিছু ভাবতে হয় না৷ তার উপকরণও খুব সাধারণ – দুধ, ডিম, ময়দা আর চিনি থাকলেই হলো৷ প্রথমে ময়দায় দুধ মেশানো হয়, তারপর ডিমের সাদা অংশ আলাদা করে চিনি দিয়ে ফেটানো হয়৷ ডিমের কুসুম এবার ময়দা ও দুধের তালের সঙ্গে ভাল করে মেশাতে হবে, যাতে মিষ্টি ফুলে-ফেঁপে ওঠে৷ স্টেফানি সান্টেলের বলেন, ‘‘পিৎসটালার হিমবাহে আমরা ময়দায় মিনারেল ওয়াটার মেশাই না, বরং ডিমের সাদা অংশ ব্যবহার করি৷ তাই কাইজারশ্মার্ন শুকনা হয়ে যায় না, অনেকক্ষণ রসালো থাকে৷ এবার কিশমিশও দেওয়া যায়৷ পিৎসটালার হিমবাহে আমরা কিশমিশ ব্যবহার করি, তবে সেটি ছাড়াও মিষ্টি বানানো যায়৷''

৫ মিনিট করে দুই দিকে বেক করলেই কাইজারশ্মার্ন প্রস্তুত হয়ে যায়৷ কাইজারশ্মার্নের নামের ইতিহাস নিয়ে নানা মত আছে৷ পাতলা ডিমের কেক করতে গিয়ে ভুলের কারণে নাকি এই মিষ্টি তৈরি হয়েছিল৷ অস্ট্রিয়ার সম্রাট ফ্রানৎস ইয়োসেফ খুব মিষ্টি খেতে ভালবাসতেন৷ তাঁর প্রিয় ডিমের কেক ঘেঁটে যাওয়ার পর ভৃত্যরা চামচে করে সেটি পরিবেশন করে৷ তখন থেকেই কাইজারশ্মার্ন হিসেবে এই মিষ্টি পরিচিত৷

শুধু পিৎসটালই নয়, এই মিষ্টি অস্ট্রিয়ার খাদ্যতালিকার অন্যতম প্রিয় পদ৷