1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পাহাড় আর সবুজের মাঝে ট্যুবিঙ্গেন বিশ্ববিদ্যালয়

৩০ জুন ২০১০

জার্মানির দক্ষিণে বাডেন-ভুর্টেমব্যার্গ রাজ্যে অবস্থিত ট্যুবিঙ্গেন ইউনিভার্সিটি৷ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মত ট্যুবিঙ্গেনে পড়তে আসে দক্ষিণ এশিয়ার শিক্ষার্থীরাও৷ কীভাবে প্রস্তুত হবে তারা?

https://p.dw.com/p/O6bi
পাহাড় ঘেরা ট্যুবিঙ্গেন শহরছবি: picture-alliance / akg-images

ট্যুবিঙ্গেন বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৪৭৭ সালে৷ ভুর্টেমব্যার্গ অঞ্চলের শাসক কাউন্ট অফ ভুর্টেমব্যার্গকে পোপ অনুমতি দেন একটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার জন্য৷ তখন মাত্র চারটি বিষয় পড়ানো হত৷ অধ্যাপনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন মাত্র ১৫ জন অধ্যাপক৷ এরপর প্রায় প্রতিটি শতকেই একটি করে অনুষদ বাড়ানো হয়, সেই সঙ্গে বাড়তে থাকে ক্যাম্পাসের পরিধি৷

বর্তমানে ট্যুবিঙ্গেন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে প্রায় ২৪ হাজার ছাত্র-ছাত্রী৷ গোটা ট্যুবিঙ্গেন শহরে বাস করছে ৮৫ হাজার মানুষ৷ তার মধ্যে এক চতুর্থাংশই হল ছাত্র-ছাত্রী৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে ১৫টি অনুষদ এবং অধ্যাপনার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন প্রায় সাড়ে চারশো অধ্যাপক৷ ২০১০ সালে ট্যুবিঙ্গেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাৎসরিক বাজেট হল ২১০ মিলিয়ন ইউরো৷

বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনা, জার্মানিতে থাকা, বৃত্তি নিয়ে পড়াশোনা করা, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির বিষয়টি দেখাশোনা করছেন ড. রাইনহার্ডট ব্রুনার৷ বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনার বিষয়ে বিভিন্ন পরামর্শও তিনি দিয়ে থাকেন৷ এই মুহূর্তে কতজন বিদেশি ছাত্র-ছাত্রী ট্যুবিঙ্গেন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে, সে বিষয়ে তিনি জানালেন, ‘‘এই মুহূর্তে সব মিলে প্রায় ২৪ হাজার ছাত্র-ছাত্রী ট্যুবিঙ্গেন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে৷ এর মধ্যে বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ৩ হাজার দুশ'৷ তবে এর মধ্যে এক্সচেঞ্জ স্টুডেন্ট, গ্র্যাজুয়েশন, মাস্টার্স এবং পিএইচডির ছাত্র-ছাত্রীও রয়েছে৷''

Archäologisches Institut der Uni Tübingen
ট্যুবিঙ্গেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগছবি: DW/Haidari

এশিয়া থেকে কতজন ছাত্র-ছাত্রী পড়াশোনা করছে ? ড. ব্রুনার বললেন, ‘‘ এশিয়া থেকে এই মুহূর্তে চার থেকে পাঁচশ' জন ছাত্র-ছাত্রী পড়াশোনা করছে৷এর মধ্যে চীন এগিয়ে রয়েছে সবচেয়ে বেশি৷ এরপর রয়েছে সাবেক সোভিয়েন ইউনিয়নের দেশগুলো৷ ''

পড়াশোনার শেষে সবাই চায় একটি মন মত চাকরি৷ বিশ্ববিদ্যালয় কি সাহায্য করে থাকে ছাত্র-ছাত্রীদের চাকরি পেতে ? ড. ব্রুনার জানান, ‘‘এই বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে একটি ক্যারিয়ার সার্ভিস সেন্টার৷ সেখান থেকে দেশি-বিদেশি সব ছাত্র-ছাত্রীদের চাকরি বা শিক্ষানবিশির বিষয়ে সব ধরণের তথ্য ও পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে৷ কোন কোম্পানি যদি শিক্ষানবিশ চায় তাহলে আমাদের জানানো হয়, আমরা জানিয়ে দেই ছাত্র-ছাত্রীদের৷''

জার্মানির প্রায় প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়েরই অন্যান্য দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম থাকে৷ এশিয়ার সঙ্গেও ট্যুবিঙ্গেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে বেশ কিছু প্রোগ্রাম৷ ড. ব্রুনার বললেন, ‘‘ চীনের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আমাদের এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম রয়েছে৷ এর মধ্যে বেইজিং বিশ্ববিদ্যালয় উল্লেখযোগ্য৷ এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামের আওতায় যে সব ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে তাদের প্রতেককে অন্তত তিন মাস বেইজিংবিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকতে হয়৷ এছাড়া ভারতের দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গেও আমাদের বেশ কিছু প্রোগ্রাম রয়েছে৷ সেই প্রোগ্রামের অধীনে পিএইচডি প্রাধান্য পাচ্ছে৷ একই ধরণের এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম রয়েছে ব্রাজিলের রিও ডে জেনেরোর বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে৷ ''

এশিয়ার কোন ছাত্র বা ছাত্রী যখন জার্মানিতে পড়াশোনার জন্য আসতে চায় তখন কোন্ ধরণের প্রস্তুতি তাদের থাকা প্রয়োজন ? বিশ্ববিদ্যালয় তাদের কাছ থেকে কী কী আশা করতে পারে ? সে বিষয়ে ড. ব্রুনারের মতে,‘‘ এক্ষেত্রে বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য জার্মানির নিজস্ব একটি তালিকার শর্ত রয়েছে৷ এর এক নম্বরে রয়েছে জার্মান ভাষা শেখা এবং জানা৷ যদি পড়াশোনা জার্মান ভাষায় চালানো হয় তাহলে জার্মান ভাষায় তাকে তুখোড় হতে হবে৷ একই কথা খাটে ইংরেজি ভাষার ক্ষেত্রে৷ মাস্টার্স বা গ্র্যাজুয়েশন প্রোগ্রাম যদি ইংরেজিতে হয় তাহলে স্যাট পরীক্ষা দিতে হবে, নম্বর অত্যন্ত ভাল হতে হবে৷ যেমনটি আশা করে থাকে অ্যামেরিকা বা ইংল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো৷ এর সঙ্গে রয়েছে নিজ দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় বেশ ভাল ফল করার বিষয়টি৷ অর্থাৎ যে ছাত্র বা ছাত্রী জার্মানিতে পড়াশোনার জন্য আসতে চাইছে তাকে পড়াশোনায় বেশ ভাল হতে হবে৷ ''

যে সব স্বনামধন্য খ্যাতিমান পুরুষ ট্যুবিঙ্গেন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন নোবেল বিজয়ী বিজ্ঞানী ক্রিস্টিয়ানে ন্যুসলাইন ফলহার্ড৷

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা: আবদুল্লাহ আল-ফারূক