1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিদঘুটে শখ

অলিভার সালেট / এসবি১৪ ডিসেম্বর ২০১৩

সমাজে কীভাবে কঠোর নিয়ম মেনে মিলেমিশে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে হয়, শেখাতে পারে পিঁপড়ারা৷ তাদের কাণ্ডকারখানা দেখতে ঘরের মধ্যেই ‘অ্যাকোয়েরিয়াম’-এর মতো পিঁপড়ার ‘টেরারিয়াম’ বসানো যেতে পারে৷

https://p.dw.com/p/1AZ7n
Ameise
ছবি: picture-alliance/dpa

ল্যাটিন নাম ‘কাম্পোনোটাস হারকিউলিয়েনস'৷ ইংরেজিতে ‘কার্পেন্টার অ্যান্ট'৷ আকারে ১৬ মিলিমিটার পর্যন্ত বড় হতে পারে তারা৷ ইউরোপে অন্য কোনো জাতের পিঁপড়া এত বড় হয় না৷ পচে যাওয়া কাঠের মধ্যে থাকতে ভালবাসে তারা৷ মশা-মাছি তাদের সবচেয়ে প্রিয় খাদ্য৷ তবে ছুঁলেই সর্বনাশ৷ এই পিঁপড়ার বিষাক্ত গ্রন্থি যে কী, তা টের পাওয়া যায়৷

পিঁপড়া যে ঘরের পোষ্য হতে পারে, তা জানতেন কি? অ্যান্টস্টোরের মালিক মার্টিন সেবেস্টা বলেন, ‘‘আসলে পিঁপড়াদের সামাজিক জীবনই অবাক করার মতো৷ তাদের মধ্যে সবসময় আদান-প্রদান চলছে৷ একসাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে৷ বাসা বড় করে, ঘরে খাবার নিয়ে আসে, সবাই মিলে ভাগ করে খায়৷ নানা পেশার পিঁপড়া সব৷ তাদের পর্যবেক্ষণ করার রোমাঞ্চই আলাদা৷''

ছোটবেলা থেকেই পোকামাকড় দেখে অবাক হতেন মার্টিন৷ তারপর পোকামাকড় বিক্রির কাজ শুরু করেন৷ পেশায় ইন্ডাস্ট্রিয়াল মেকানিক৷ ২০০৩ সালে বার্লিনে নিজের দোকান খোলেন৷ জার্মানিতে এমন দোকান ছিল না৷ এখন বিশটিরও বেশি প্রজাতির পোকামাকড় বিক্রি করেন তিনি৷

পিঁপড়ার দোকানের ইতিবৃত্ত

পোকামাকড় আসে গোটা বিশ্ব থেকে৷ গুদামে পিঁপড়াদের ১০ থেকে ২০ হাজার কলোনি রয়েছে৷ আছে দক্ষিণ অ্যামেরিকার ‘লিফকাটার' বা পাতাকাটা পিঁপড়ার মতো বিরল প্রজাতিও৷ নিজেদের ওজনের তিরিশ গুণ বহন করতে পারে তারা৷ গাছের পাতা দিয়ে এক বিশেষ ধরনের মাশরুমের পরিচর্যা করে, যা খেয়ে তারা বেঁচে থাকে৷ মার্টিন বলেন, ‘‘পাতাকাটা পিঁপড়ার বিশেষত্ব হলো, তারা বিশাল জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে৷ প্রকৃতির কোলে তারা ৫০ বর্গকিলোমিটার বড় ও ৮ মিটার গভীর বাসাও তৈরি করতে পারে৷ বাসায় পিঁপড়া পুষতে গেলে প্রায়ই দেখা যায়, বছর দুয়েকের পর আর সামলানো যাচ্ছে না৷ তখন চিড়িয়াখানায় পাঠানোর চেষ্টা করি আমরা৷ এটা মনে রাখতে হবে৷''

ঘরের সঙ্গী পিঁপড়া

বিয়াংকা-ও বিরল প্রজাতির পিঁপড়া পুষছেন৷ বার্লিনে নিজের বাসায় ১৬টি প্রজাতির পিঁপড়া রেখেছেন, যার মধ্যে দক্ষিণ অ্যামেরিকার হিংস্র কালো এক পিঁপড়াও রয়েছে৷ বোলতার মতো হুল ফোটাতে পারে তারা৷ এমন প্রাণী কি বাসায় রাখা যায়? জীববিজ্ঞান শিক্ষিকা বিয়াংকা ড্রেনস্কে বলেন, ‘‘এদের পোষার পেছনে বেশ কয়েকটা কারণ রয়েছে৷ আমি এদের নিয়ে বাসার মধ্যেই একটা সুন্দর জগত গড়ে তুলতে পারি৷ কুকুর-বিড়াল পুষলে যা করা যায় না৷ এই ‘মিনি ইকোসিস্টেম' আমার বেশ রোমাঞ্চকর মনে হয়৷ এদের খোরাকের দামও বেশি নয়৷ তারা বিশেষ শব্দও করে না৷''

অর্থাৎ বেশ সস্তায় এমন পোষ্য রাখা যায়৷ তবে অস্ট্রেলিয়ার একটি পিঁপড়া প্রজাতির রানির দাম প্রায় ১৬০ ইউরো৷ পিঁপড়ে পোষার অন্য একটি দিকও রয়েছে৷ খুব বিরল প্রজাতির পিঁপড়া বাসায় রাখা চলে না৷ বিয়াংকা বলেন, ‘‘প্রথমেই একটা মৌলিক বিষয় খোলসা করতে হবে৷ এই পিঁপড়া কি সংরক্ষিত প্রজাতির তালিকায় পড়ে? তারা কি বিপজ্জনক? সে ক্ষেত্রে আর এগোনো উচিত নয়, বিপদ কম হলেও নয়৷ তারপর প্রশ্ন হলো, কোনো বিশেষ অনুমতি লাগে কি? যেমন অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশের ভিতরে বা বাইরে কিছু নিতে গেলে এটা জানা জরুরি৷''

পিঁপড়া পোষায় হাতেখড়ি

প্রথমেই বিরল প্রজাতির পিঁপড়া পোষার চেষ্টা করা উচিত নয়৷ এমন সাধারণ প্রজাতিই ভালো৷ মার্টিন অনভিজ্ঞদের জন্য ৫০ ইউরো দামের একটা ‘স্টার্টার্স সেট' তৈরি করেছেন৷

তার মধ্যে রয়েছে সব সাজ-সরঞ্জাম সহ দুটি টেরারিয়াম৷ এক রানি ও এক নারী কর্মী থাকলেই হলো৷ দেখতে দেখতে হাজার পিঁপড়ার কলোনি তৈরি হয়ে যাবে৷ মার্টিন সেবেস্টা বলেন, ‘‘পিঁপড়াদের বাইরে চলতে-ফিরতে দেখা যায়৷ দেখা যায় একটা পিঁপড়া মুখে কিছু একটা নিয়ে গর্তে ঢুকে গেল৷ তারপর কী হয়? কীভাবে সেটা দেখা যায়? বাসাটা খুলে ফেললে বা ভেঙে দিলে ভিতরে অনেক ব্যস্ততা দেখা যায় বটে, কিন্তু তারা যে ঠিক কী করে, তা বোঝা যায় না৷''

ঠিক এ কারণেই পিঁপড়ারা পোষা জীব হিসেবে এত ইন্টারেস্টিং৷ মার্টিনের ব্যবসা ভালোই চলছে৷ গোটা ইউরোপে পিঁপড়া সাপ্লাই করে তাঁর দোকান৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য