1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রাণীর বদলে কৃত্রিম অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের উপর পরীক্ষা

আন্দ্রেয়াস নয়হাউস/এসবি১ সেপ্টেম্বর ২০১৫

কোনো নতুন ওষুধ বা চিকিৎসার ক্ষেত্রে গবেষণার সুফল মানুষের কাছে পৌঁছাতে অনেক সময় লাগে৷ তার আগে জীবজন্তুর উপর নিষ্ঠুর পরীক্ষা চালানো হয়৷ জার্মান এক গবেষকদল কৃত্রিম উপায়ে আরও দ্রুত সেই পরীক্ষার পথ বাতলে দিচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/1GOqy
Kunstherz
ছবি: picture-alliance/dpa

বার্লিনের এক পুরনো কারখানায় উভে মাক্স তাঁর আইডিয়া কাজে লাগাচ্ছেন৷ জীবজন্তুর উপর বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার বদলে তিনি কৃত্রিম অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কাজে লাগান৷ আইডিয়াটি নতুন না হলেও মাক্স সেটি বাস্তবায়ন করেছেন৷ প্রাণীদের সুরক্ষাই তাঁর লক্ষ্য৷ উভে বলেন, ‘‘শুধু আমরা নয়, মার্কিন গবেষকরাও এটা করছেন৷ সবকিছু ঠিকমতো কাজ করলে বর্তমানে জীবজন্তুর উপর যে জটিল পরীক্ষা চালানো হয়, তার বিকল্প পাওয়া যাবে৷ ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে এটা সম্ভব হবে৷''

মার্ক্স প্রায় ৭ বছর ধরে পশুদের উপর পরীক্ষার বিকল্প হিসেবে চিপ-কার্ডের মাপের কৃত্রিম অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বাজারে আনার লক্ষ্যে কাজ করছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি নিজে জীবজন্তু নিয়ে অনেক কাজ করেছি৷ যে সব ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, এটা অর্থহীন বা এর বিকল্প রয়েছে, তখন তা করার কোনো অর্থই হয় না৷''

বায়ো-টেকনোলজিস্ট হিসেবে ইলকা ভাগনার কৃত্রিম অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের আইডিয়া বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে টিমের মধ্যে কাজ করছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘এটা আমাদের মাল্টি-অরগ্যান-চিপ৷ অর্থাৎ এটা একটা ছোট বায়ো-রিঅ্যাক্টর, যার মধ্যে ৪টি আলাদা অঙ্গের মেলবন্ধন ঘটানো যায়, যেমন এ ক্ষেত্রে ত্বক, যকৃৎ, পাকস্থলী ও কিডনি৷''

বিজ্ঞানীরা রক্ত চলাচলের মাধ্যমে এই সব অংশ যুক্ত করেছেন৷ যেমন তাঁরা কয়েক সপ্তাহ ধরে যকৃৎ ও কিডনির মধ্যে মেটাবলিজম পর্যবেক্ষণ করছেন৷ এতকাল সেটা সম্ভব ছিল না৷ ইলকা ভাগনার বলেন, ‘‘এখানে দেখা যাচ্ছে, কীভাবে চিপ-এর মধ্য দিয়ে রক্ত পাম্প করা হচ্ছে এবং দুটি অংশের মধ্যে যোগাযোগ তৈরি হচ্ছে৷ তাছাড়া এই তিনটি খোপ আমাদের হৃদযন্ত্রের চেম্বারের মতো, যার কাজ রক্ত ঢোকানো ও বার করা৷''

বিজ্ঞানীরা এবার চারটি অরগ্যানের মধ্যে এমন রক্ত চলাচল প্রক্রিয়া সৃষ্টি করতে পেরেছেন৷ অনেকের মনেই শুরুতে এটা নিয়ে গভীর সংশয় ছিল৷ বার্লিন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উভে মাক্স বলেন,‘‘হাসাহাসি করার অনেক লোক রয়েছে৷ প্রথমে অনেকেই হেসে উড়িয়ে দিয়েছিল৷ বলেছিল, এটা কখনোই সম্ভব হবে না৷ তারপর আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগে গোটা জার্মানি থেকে ৬ থেকে ৮ জন অধ্যাপককে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম৷ দু-তিনবার মিটিং করে অনেক আলোচনা করলাম৷ তাঁরা কিন্তু মোটেই হাসেননি, বরং ভালোভাবে ভেবে দেখার কথা বলেছিলেন৷ তখন স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল, যে কাজটা অবশ্যই সম্ভব৷''

এই টিম ইতিমধ্যে শিল্পজগতের জন্যও কাজ করতে শুরু করেছে৷ কৃত্রিম প্রক্রিয়ায় ত্বকের ক্রিম ও ওষুধ পরীক্ষা করা হচ্ছে৷ চিপের মধ্যে কোষগুলি চার সপ্তাহ বেঁচে থাকে৷ উভে মাক্স বলেন, ‘‘চিপের এই অংশে আমাদের ছোট যকৃৎ সক্রিয় রয়েছে৷ এক্ষেত্রে এতে এমন পদার্থ যোগ করা হয়েছে, যা যকৃতের জন্য টক্সিক বা বিষাক্ত৷ তখন যকৃতের কোষ মরে যায়৷ কোষগুলি বড় কালো ক্লট হয়ে পরস্পরের সঙ্গে জুড়ে গেছে৷ রক্তের স্রোতের মধ্যে কোষের বড় অংশগুলি ভেসে বেড়াচ্ছে৷ এর অর্থ, অরগ্যানের কাঠামোয় বড় মাপের সমস্যা রয়েছে৷''

১৪ দিন পর বিশ্লেষণ করে দেখা গেল, ওষুধ পরীক্ষায় পাশ করেনি৷ মানুষের জন্য তা ক্ষতিকর হতো৷ বায়ো-টেকনোলজিস্ট ইলকা ভাগনার বলেন, ‘‘দেখা যাচ্ছে, সবুজ কোষগুলি সব মৃত কোষ৷ অর্থাৎ ওষুধের প্রতিক্রিয়ায় সব মরে গেছে৷''

মার্ক্স মানুষের শরীরের মেটাবলিজমের যতটা সম্ভব নিখুঁত নকল করতে চান৷ ২০১৮ সালের মধ্যে তিনি মানুষের ১০টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অরগ্যান তৈরি করতে চান৷ এর ফলে শুধু প্রাণী নয়, বছরের পর বছর ধরে মানুষের উপরও পরীক্ষা এড়ানো সম্ভব হবে৷ কারণ কোনো অ্যাক্টিভ এজেন্ট প্রত্যেকটি অরগ্যানের উপর কী প্রভাব ফেলছে, চিপের উপর শুধু সেটাই দেখা যায় না, প্রত্যেক মানুষের জন্য আলাদা চিপও তৈরি করা সম্ভব৷

উভে মাক্স বলেন, ‘‘আপনি নিজের একটা কোষ দান করতে পারেন৷ আমরা প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন অরগ্যান তৈরি করে দেবো৷ তার মধ্যে আপনার নির্দিষ্ট প্রতিক্রিয়া দেখা যাবে৷''

মার্ক্স মনে করেন, ভবিষ্যতে কোনো এক সময়ে বিশাল স্বয়ংক্রিয় পরীক্ষামূলক কারখানা তৈরি করা হবে৷ তবে অদূর ভবিষ্যতেই চিপ-এর মাধ্যমে মৌলিক পরিবর্তন আশা করছেন গবেষকদের এই দল৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান