1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্লাস্টিকের সমস্যা দূর করতে কীটের ব্যবহার

৫ জানুয়ারি ২০২১

আজকের দিনে একাধিক কারণে প্লাস্টিক বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে৷ বিশ্বের গভীরতম সমুদ্রেও দূষণ ঘটাচ্ছে প্রায় অবিনশ্বর এই উপাদান৷ বিজ্ঞানীরা এবার প্লাস্টিক বিনাশের এক অভিনব হাতিয়ার খুঁজে পেয়েছেন৷

https://p.dw.com/p/3nWP0
Mexiko Verbot von Artikeln aus Einwegplastik
ছবি: Gerardo Vieyra/NurPhoto/picture alliance

এক ধরনের ওয়ার্ম বা কীট এমন কাজ করে যা এতকাল অসম্ভব মনে হতো৷ যার ক্ষয় হয় না, তা ভেঙে দেখিয়ে দেয় এই প্রাণী৷ যা হজম করা যায় না, এই কীট তা-ও ভেঙে ফেলতে পারে৷ এই কীট প্লাস্টিক খায়৷ মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে সেটি এক টুকরো স্টায়রোফোম হজম করে ফেলেছে৷ সেই ক্ষমতা কাজে লাগালে আমরা কয়েক শতাব্দীর বদলে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে প্লাস্টিক বর্জ্যের সমস্যা দূর করতে পারি৷ এভাবে অসংখ্য প্রাণীর অস্তিত্ব রক্ষা করা, প্রকৃতি সংরক্ষণ করা এবং বিষাক্ত প্লাস্টিক পোড়ানোর প্রবণতা কমিয়ে আনা সম্ভব৷

প্লাস্টিকখেকো কীট কি আমাদের প্লাস্টিকের সমস্যার সমাধান করতে পারে? সেটা জানতে ফেডেরিকা বার্টোকিনির দ্বারস্থ হতে হবে৷ তিনি একাধারে জীববিজ্ঞানী ও মৌমাছি পালনকারী৷ ২০১৭ সালে তিনি এক গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার করেছিলেন৷ সে বিষয়ে ফেডেরিকা বলেন, ‘‘আমার মৌচাক পরিষ্কার করার সময় লক্ষ্য করলাম যে সবসময়ে এই কীটগুলি সেখানে থাকে৷ তখন সেগুলি সরিয়ে ফেলে প্লাস্টিকের থলেতে ভরে ফেলতাম৷ প্লাস্টিকের মধ্যে সাধারণত পোকা মরে যায়৷''

প্লাস্টিক খেয়ে পৃথিবীকে বাঁচাতে পারে যে কীট

কিন্তু দেখা গেল, এই কীটগুলি প্লাস্টিকের থলে বা ব্যাগ খেয়ে বাইরে বেরিয়ে আসছে৷ এই আবিষ্কারের গুরুত্ব বোঝার আগে আমাদের বুঝতে হবে, প্লাস্টিক আসলে কী৷ বিজ্ঞান বিষয়ক সাংবাদিক, লেখক এবং প্লাস্টিক বিশেষজ্ঞ হিসেবে সুসান ফ্রাইনকেল বিষয়টি খোলসা করে বলেন, ‘‘প্রকৃতির কোলে প্রাকৃতিক উপাদানের ক্ষয় ঘটে৷ ব্যাকটিরিয়া সেই ক্ষয় ঘটায় এবং উপাদানগুলি ভেঙে কার্বন, পানি, অক্সিজেনের মতো মৌলিক পদার্থে পরিণত হয়৷ তবে যতই ছোট হোক না কেন, প্লাস্টিক প্লাস্টিকই থেকে যায়৷''

সে কারণে মাইক্রোপ্লাস্টিক কয়েকশ' বছর পরেও পরিবেশে অক্ষত থেকে যাবার কথা৷ প্লাস্টিক ব্যাকটেরিয়ার থাবা থেকেও বেঁচে যায় বলে আমাদের কাছে অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ তবে আমরা ভুলে যাই, যে সে কারণেই বেশি প্লাস্টিক ব্যবহার হয়৷ সুসান ফ্রাইনকেল মনে করিয়ে দিলেন, ‘‘প্লাস্টিক পৃথিবীতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটিয়েছে, সেটি আসলে আধুনিক জগতের জন্ম দিয়েছে৷ অতীতের তুলনায় বিশ্ব আরও নিরাপদ, স্বাস্থ্যকর ও রঙিন করে তুলেছে৷''

আজ সর্বত্র প্লাস্টিক পাওয়া যায়৷ কখনো সেটি হালকা ও স্বচ্ছ হয়৷ যেমনটা প্লাস্টিকের প্যাকেটের ক্ষেত্রে দেখা যায়৷ কখনো আবার বুলেটপ্রুফ জ্যাকেটের মতো মজবুতও হয়৷ সুসান বলেন, ‘‘সব প্লাস্টিকই আসলে পলিমার৷ পারমাণবিক ইউনিটের অবিরাম পুনরাবৃত্তিই এর উপাদান৷ আমার কাছে এটি একটি শৃঙ্খলের অংশের মতো৷ অংশগুলির সংযোগের উপর প্লাস্টিকের চেহারা, অনুভূতি, আচরণ – সব কিছু নির্ভর করে৷''

সে কারণেও প্লাস্টিক পরিবেশের মধ্যে এতকাল অক্ষত থাকে৷ কোনোকিছুই এমন সংযোগ ভাঙতে পারে না৷ অন্তত এতকাল আমাদের সেই ধারণা ছিল৷

ক্রিস কাউরলা/এসবি