ফরাসি শিল্পচোরদের কোন সন্ধান মিলছে না
২৩ মে ২০১০খুব সম্ভব মোট চারজন চোর৷ একটা ভাঙা জানলা বেয়ে তারা ঢুকেছিল৷ সময় নিয়েছিল মোট পনেরো মিনিট৷ তার মধ্যেই পিকাসো, মাতিস, ব্রাক, মোদিগ্লিয়ানি আর লেগের-এর কয়েকটি মাস্টারপিস নিয়ে চম্পট দিয়েছে চোরেরা৷ তাদের কাছে খবর ছিল যে বিপদঘন্টি বা অ্যালার্ম ব্যবস্থা খারাপ ছিল মিউজিয়ামে৷ তার ফায়দাই বেমালুম তুলে নিয়েছে চোরেরা৷ মাত্র একজনের মুখোশপরা মুখের ছবি পাওয়া গেছে গোপন ক্যামেরায়৷ তার থেকে কিছু বোঝা অসম্ভব৷ তিনজন রাতপ্রহরী সারারাত পাহারা দিয়েছেন, তাঁরা কিছুই জানতেও পারেন নি৷ চুরি হয়েছে ভোর চারটের একটু আগে৷ চুরি বোঝা গেছে সকাল সাতটায়৷ এ পর্যন্ত এটুকুই জানা গেছে তদন্তে৷
জোর তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ৷ শহরের মেয়র বেরত্রঁ দেলানো তো রেগে কাঁই৷ প্যারিসের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ওপর এ এক হামলা, বলছেন মেয়র৷ অবশ্যি স্বীকার করে নিয়েছেন যে মার্চের শেষ থেকে সত্যিই অ্যালার্ম কাজ করছিল না৷ সারানোর কথা চলছিল৷ তার আগেই যা করার করে ফেলেছে বাহাদুর তস্করদল৷
বাহাদুর তো বটেই! সেই সঙ্গে তারা যাকে বলে ঘাড়ে গদ্দানে পেশাদার৷ নাহলে এমন হাতসাফাই অসম্ভব৷ সবচেয়ে বড় কথা, কোন সূত্রও নেই যা থেকে তাদের ধরা যেতে পারে৷ স্বীকার করে নিয়েছেন প্যারিস সিটি হল-এর ডেপুটি সাংস্কৃতিক সচিব ক্রিস্তভ জিরার্ড৷ আদত ক্যানভাসগুলোকে ফ্রেম থেকে যে কায়দায় নিয়ে গেছে ওরা, তা অসম্ভব ‘সফিস্টিকেটেড'৷ বলছেন জিরার্ড৷ সেইসঙ্গেই বলছেন, যদিও এই ছবিগুলোকে চোরবাজারে বেচতেও বেশ সমস্যায় পড়বে চোরেরা৷ কারণ, এগুলো সকলেরই চেনা৷ তাই ধরা পড়ে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা৷
প্রসঙ্গত, গ্রেট মাস্টারদের চোরাই ক্যানভাসগুলোর মোট বাজারদর কম করে হলেও ১০০ মিলিয়ন ইউরো৷ চোরাই ছবি থেকে সেই অর্থ কীভাবে চোরাপথেই আবার আমদানি করতে হয়, প্যারিসের ‘সফিস্টিকেটেড' আর বুদ্ধিমান চোরেরা নিশ্চয়ই তা ভালো করেই জানে৷
আর সেটা আগে ঠিক করেই ওরা বোধহয় ওদের আসল ‘কাজে' নেমেছিল৷
প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই