1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফেলনা জিনিস দিয়ে ডিজাইনার পণ্য

২০ মার্চ ২০২০

ডিমের খোসা, পোলট্রির মুরগির পালক, তামাক পাতা – এসব দিয়ে যে বিলাসবহুল পণ্য তৈরি করা সম্ভব, বেশ কিছু ডিজাইনার তা হাতেকলমে দেখিয়ে দিচ্ছেন৷ টেকসই ডিজাইনের নতুন এক ধারা তুলে ধরছেন তাঁরা৷

https://p.dw.com/p/3ZlDt
Symbolbild | Elektromüll
ছবি: picture-alliance/dpa/W. Steinberg

যেসব প্রাকৃতিক কাঁচামাল সাধারণত জঞ্জাল হিসেবে ফেলে দেওয়া হয়, সেগুলি দিয়ে ‘নেচার স্কোয়্যার্ড' দামী, বিলাসবহুল পণ্য তৈরি করে৷ গোটা বিশ্বে ডিজাইনার পণ্য সরবরাহ করে এই কোম্পানি৷

২০ বছর আগে লে কুন তান ‘নেচার স্কোয়্যার্ড' কোম্পানি পত্তন করেন৷ এই সংস্থা নানা রকম বর্জ্য দিয়ে পণ্য তৈরি করে৷ তিনি বলেন, ‘‘পাতা হতে পারে, শ্যাওলা হতে পারে, গাছের ছাল অথবা পাখির পালক হতে পারে৷ যে কোনো অতি সাধারণ বস্তুও নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে দেখা যেতে পারে৷ নিজের কল্পনার ভিত্তিতে অভূতপূর্বভাবে সেটি রূপান্তরিত করা যায়৷''

লন্ডনে নেচার স্কোয়্যার্ড কোম্পানির স্টুডিওতে সারফেসের জন্য নতুন আইডিয়ার জন্ম হয়৷ এখনো পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার এমন আইডিয়া সৃষ্টি করা হয়েছে৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জঞ্জাল দিয়েই কাজ শুরু হয়৷ যেমন, ঝিনুকের খোল অথবা পোলট্রি থেকে পাওয়া পালক৷ সেগুলি দিয়ে হয় নিজস্ব সৃষ্টিকর্ম, অথবা অন্য ডিজাইনারদের সঙ্গে যৌথ প্রকল্প চালানো হয়৷

যেমন মিউনিখের এক বিলাসবহুল হোটেলের দেওয়ালে তামাক পাতা দিয়ে অলংকরণ করা হয়েছে৷ ডিমের খোসা দিয়ে একটি বাথটব তৈরি করা হয়েছে৷ অথবা পালক দিয়ে গাড়ির ড্যাশবোর্ড সাজানো হয়েছে৷ ঠিক কোন উপাদান কাজে লাগানো হয়েছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তা বোঝার উপায় থাকে না৷ মানুষের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে লে কুন তান বলেন, ‘‘মানুষ হাতে নিয়ে দেখে বলে, বাঃ! বেশ অবাক করার মতো! এমনটা কখনো দেখিনি, এটা কী? আমি সেই বিস্ময় উপভোগ করে জবাব দেই, এটা আপনার প্রাতরাশের ডিম৷''

এই সারফেস ফিলিপাইন্সে উৎপাদন করা হয়৷ সেখানে প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে শিল্প সৃষ্টির দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে৷ সবকিছু হাতে করে করতে হয় বলে প্রত্যেক বর্গ মিটারের দাম প্রায় ২,০০০ ইউরো ছুঁতে পারে৷ লে কুন তান মনে করেন, ‘‘এমন কাজের দক্ষতা আছে, এমন মানুষ বেছে নিয়ে তাঁদের প্রশিক্ষণ দিয়ে বর্তমান অবস্থায় এনেছি৷ অন্য কেউ এমন মান ছোঁয়ার চেষ্টা করে না৷''

লন্ডনের ডিজাইন কোম্পানি সিমুর ডায়মন্ড নেচার স্কোয়্যার্ড-এর এক গ্রাহক৷ দামী প্রমোদতরীর ভিতরের অংশ ডিজাইন করে এই কোম্পানি৷ কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা ফিওনা ডায়মন্ড ১৫ বছর ধরে নেচার স্কোয়্যার্ডের সঙ্গে কাজ করছেন৷ তিনি টেকসই উপাদান ব্যবহারের বিষয়টি খুব পছন্দ করেন৷ অতি সাধারণ উপাদান দিয়ে তৈরি বলে এমন সারফেস তাঁর খুব মনে ধরে৷ ফিওনা বলেন, ‘‘বিলাসের কথা শুনলেই মনে হয় যে, সবকিছু চকমকে, চোখ ধাঁধানো, টাকার জোর দেখানোর যোগ্য কিছু হতে হবে৷ কিন্তু এমন অরগ্যানিক লাক্সারির ক্ষেত্রে বিশেষ গঠন, খুঁটিনাটি কাজ ও ঝিনুকের সূক্ষ্মতা লোক দেখানো চমকের তুলনায় একেবারেই ভিন্ন৷''

জাইনাররা আজকাল টেকসই প্রাকৃতিক উপাদান নিয়ে কাজ করছেন৷ যেমন জার্মানির আনেকাটরিন ড্যোল মাছের চামড়া ব্যবহার করছেন৷ সুইজারল্যান্ডের ডিজাইনার টানিয়া শেংকার হাতের ব্যাগ তৈরির কাজে আপেলের ফেলে দেওয়া অংশ কাজে লাগাচ্ছেন৷ তাঁরা সবাই টেকসই উপাদানের মাধ্যমে বিলাসিতার নতুন সংজ্ঞা দেবার চেষ্টা করছেন৷ লে কুন তান বলেন, ‘‘বিলাসিতা মানেই কোনো বিরল বস্তুর ব্যবহার নয়৷ বরং দক্ষতা, ঐতিহ্যবাহী হাতের কাজ ও সেইসঙ্গে ভিন্ন এক উপলব্ধি তুলে ধরা হচ্ছে৷ প্রকৃতি এতই অনবদ্য যে প্রাকৃতিক উপাদানও অদ্বিতীয়৷''

যে সব বস্তু জঞ্জালের স্তূপে গিয়ে পড়বে, সেগুলি কাজে লাগানোর আইডিয়া নতুন নয়৷ ডিজাইনাররা সেই ধারণাকে নতুন রূপ দিচ্ছেন মাত্র৷

ইয়েন্স ফন লারখার/এসবি