1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফেসবুকের কারণে ঝুঁকিতে আরবের সমকামীরা

১৩ আগস্ট ২০২০

ফেসবুকে বিভিন্ন পোস্টের কারনে ঝুঁকিতে পড়ছে আরবের এলজিবিটি প্লাস কমিউনিটি৷ এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ তাদের৷ যদিও এক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতির কথা বলেছে ফেসবুক৷

https://p.dw.com/p/3gu6w
Symbolbild Regenbogenfahne
ছবি: Imago-Images/Panthermedia

জুলাই মাসের শুরুর দিকে মিশরের আলেক্সান্দ্রিয়ার রাস্তায় মারধরের শিকার হন রামি৷ সমকামী হওয়ায় ফেসবুকে তাকে ঐ ব্যক্তি আগে থেকেই হুমকি দিয়ে আসছিলেন৷ পরে রামিকে খুঁজেও বের করেন সেই হুমকিদাতা৷

একটি টিকটক ভিডিওতে রংধনু পতাকার সামনে দাঁড়ানো রামির ছবি তার অজান্তেই ফেসবুকে পোস্ট করা হয়৷ এরপর থেকেই মূলত হয়রানির শিকার হচ্ছেন রামি৷ একের পর এক হুমকিমূলক বার্তা পাচ্ছেন তিনি৷

পোস্টটি সরাতে একাধিকবার অনুরোধ জানানোর পরও ফেসবকু কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নেয়নি বলে জানান রামি৷ শুধু তিনিই নন এ ধরনের অনলাইন হুমকির ক্ষেত্রে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ফেসবুককে চাপ দিয়ে আসছে মিশরসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের ‘এলজিবিটি প্লাস’ কমিউনিটি৷

রামির বিষয়ে নির্দিষ্ট করে ফেসবুক কোন জবাব না দিলেও তাদের একজন মুখপাত্র বলেছেন, এই ধরনের ঘৃণা ছড়ানো বক্তব্যের ক্ষেত্রে তারা ‘জিরো টলারেন্স' নীতি অবলম্বন করেন৷ এই ক্ষেত্রে নজরদারি বাড়াতে উদ্যোগও নেয়া হয়েছে৷ তবে থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনকে রামি জানিয়েছেন একেরে এক হুমকি পেয়ে শেষ পর্যন্ত তাকে ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করে দিতে হয়েছে৷ ‘‘কেউ একজন হুমকি দিয়ে আমাকে ভিডিও পাঠিয়ে বলেছেন, ‘তোমাকে যদি খুঁজে পাই তাহলে মেরে ফেলব এবং দর্জায় ঝুলিয়ে রাখব'৷’’

মিশরের আইন অনুযায়ী কারো ব্যক্তিগত জীবনের গোপনীয়তা লঙ্ঘন হয় এমন কোন অনলানইন কর্মকাণ্ড চালানো যাবে না৷ এই বিষয়ে থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি৷

শুধু রামি নন, ফেসবুকের কারণে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন আরব অঞ্চলের অন্য সমকামীসহ এলজিবিটি প্লাস কমিউনিটির সদস্যরাও৷ এই বিষয়ে প্রায় সাড়ে চারশো জনের উপরে এক জরিপ চালিয়েছে ‘আরব নেটওয়ার্ক ফর নলেজ অ্যাবাউট হিউম্যান রাইটস'৷ নব্বইভাগই জানিয়েছেন তারা ফেসবুকে ঘৃণা ছড়ানো বক্তব্যের শিকার হয়েছেন৷

এ কারণে এমনকি ক্যানাডায় বসবাসরত মিশরীয় একজন এলজিবিটি অধিকারকর্মী আত্মহত্যা পর্যন্ত করেছেন৷ এই সমস্য মোকাবিলায় গত জুনে মধ্যপ্রাচ্যের ২২ টি এলজিবিটি প্লাস অধিকার সংগঠন ফেসবুকের কাছে আবেদন জানিয়েছে৷ অধিকারকর্মীরা বলছেন, সমকামিতা নিয়ে আরব দেশগুলোর কট্টর সামাজিক ধ্যান ধারণার কারণে গোটা অঞ্চলেই তারা নিগৃহীত হচ্ছেন৷ সামিজকভাবে বঞ্চনার পাশাপাশি নিরাপত্তা বাহিনীর জেল জুলুমের শিকারও হচ্ছেন তারা, বলছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ৷

আরব নেটওয়ার্ক ফর নলেজ অ্যাবাউট হিউম্যান রাইটস এর প্রতিষ্ঠাতা নিকোলাস গিলস এর মতে, ফেসবুকে না থাকা মানে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া৷ কিন্তু ফেসবুকের কারণে বিপদেও পড়ছেন তারা৷ যদিও ফেসবুকের কমিউনিটি গাইডলাইন বলছে, এলজিবিটি প্লাস কমিউনিটির কারো প্রতি সহিংস বা অমানবিক বক্তব্য বা হেয় করা বিবৃতি দেয়া যাবে না৷ এমনকি তাদেরকে বর্জন বা পৃথক করে রাখার আহবান জানানোও নিষিদ্ধ সামাজিক মাধ্যমটিতে৷

ফেসবুক বলছে, সপ্তাহে সাতদিন এবং ২৪ ঘণ্টাই আরবিসহ ৫০ টি ভাষায় ঘৃণা ছড়ানো বক্তব্যের রিভিউ রিপোর্টগুলো তারা পরীক্ষা করে৷ এমনকি কৃত্রিম বুদ্ধমত্তা টুলস প্রায় নব্বই ভাগ ক্ষেত্রেই ব্যবহারকারীদের রিপোর্টের আগেই এই ধরনের বার্তা মুছে ফেলতে পারে বলে দাবি কোম্পানিটির৷

অন্যদিকে জর্ডানের এলজিবিটি প্লাস কমিউনিটির অধিকারকর্মী হাসান কিলানি জানান, সমাকামী ও এলজিবিটি বিরোধী বক্তব্য ছড়ানো নিয়ে ফেসবুককে বহু বছর ধরেই সতর্ক করা হয়েছে৷ কিন্তু ২০১৭ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত খুব কমই পরিবর্তন এসেছে৷ অনেকগুলো মেইল পাঠিয়ে সামাজিক মাধ্যমটির কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোন প্রতিউত্তর পাননি বলে জানান তিনি৷ কাজ না হওয়ায় এ ধরনের পোস্টে রিপোর্ট করাও বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি৷

এফএস/কেএম (থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশন)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান