1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বন্দুক কেনার প্রবণতা বাড়ছে জার্মানিতে

২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

গত দু'বছরে জার্মান নাগরিকদের মধ্যে বন্দুক কেনার প্রবণতা কয়েকগুণ বেড়েছে৷ সম্প্রতি একটি সমীক্ষা থেকে এই তথ্য মিলেছে৷ সমীক্ষা অনুযায়ী, এক চতুর্থাংশ জার্মান মনে করছেন, দেশে নিরাপত্তা আগের চেয়ে কমে গেছে৷

https://p.dw.com/p/2rzzS
ছবি: picture-alliance/dpa/J.-P. Kasper

যুক্তরাষ্ট্রে গৃহযুদ্ধের সময় সে দেশে নাগরিকদের মধ্যে অস্ত্র কেনার প্রবণতা বহু গুণ বেড়ে গিয়েছিল৷ রাস্তাঘাটে গুলির লড়াই তখন খুবই স্বাভাবিক ঘটনা ছিল৷ যার রেশ গিয়ে পড়েছিল বর্ণবিদ্বেষ সংক্রান্ত সমস্যাতেও৷ কালো মানুষ এবং সাদা মানুষদের মধ্যে অহরহ লড়াই লেগে থাকত৷

জার্মানিও কি সেই পথে এগোচ্ছে? প্রশ্নটা তুলছেন জার্মানির কোনো কোনো সমাজতাত্ত্বিক এবং ক্রিমিনোলজিস্ট৷ সম্প্রতি ম্যাক্স প্লাঙ্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষক একটি সমীক্ষা চালিয়েছিলেন৷ তার ফলাফল বলছে, গত দু'বছরে জার্মানদের মধ্যে বন্দুক কেনা এবং তা সঙ্গে রাখার প্রবণতা বেড়েছে৷ কারণ, তাঁরা মনে করছেন, নাগরিক নিরাপত্তা আগের চেয়ে অনেকটাই কমেছে৷ যে কারণে বন্দুকের দোকানগুলিতে বিক্রি অনেক বেড়ে গেছে৷ যদিও জার্মানিতে নাগরিকদের ব্যবহারের জন্য যে বন্দুক পাওয়া যায় তা দিয়ে মানুষ মারা যায় না৷ লাইসেন্স করিয়ে এক ধরনের গ্যাস বন্দুক কিনতে পারেন জার্মানরা, যা ব্যবহার করলে প্রতিপক্ষ সাময়িকভাবে দৃষ্টিহীন হয়ে পড়েন৷ বন্দুক থেকে এক ধরনের গ্যাস বেরোয়৷ অনেকটা ভারত এবং বাংলাদেশে ব্যবহৃত টিয়ার গ্যাসের মতো৷

বন্দুক ছাড়াও গ্যাস স্প্রে এবং নানারকম আত্মরক্ষার সরঞ্জামের বিক্রিও অনেক বেড়েছে৷ তথ্য বলছে, ২০১৫ সালে মোট বিক্রিত বন্দুকের সংখ্যা ছিল ৩ লক্ষ ১ হাজারের মতো৷ ২০১৭ সালে তা গিয়ে দাঁড়ায় ৫ লক্ষ ৫৭ হাজারে৷ আগামী দিনে এই সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাবে বলেই বিশেষজ্ঞদের ধারণা৷ পাশাপাশি তাইকোয়ান্দো, কারাতের মতো ক্লাসে অনেক বেশি সংখ্যক জার্মান নাগরিকেরা যাচ্ছেন৷ বিশেষজ্ঞরা সমীক্ষা চালিয়ে দেখেছেন, প্রায় ২৩ শতাংশ জার্মান মনে করছেন, নিরাপত্তার অবস্থা খুব খারাপ৷ তবে একটা বড় অংশের মানুষ মনে করছেন, এখনো এ দেশে নিরাপত্তার তেমন কোনো সমস্যা নেই৷

কিন্তু কেন জার্মানরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন? এই প্রশ্নের উত্তরে বড় অংশের মানুষ বলেছেন, শরণার্থী এবং বিদেশিদের তাঁরা ভয় পাচ্ছেন৷ শরণার্থী অধ্যুষিত কোনো কোনো এলাকায় বিকেলের পর তাঁরা যান না৷ একটা সামান্য অংশের মানুষ মনে করছেন, নিও নাৎসি এবং উগ্র দক্ষিণপন্থিদের বারবাড়ন্তও নিরাপত্তাহীনতার একটি বড় কারণ৷

বস্তুত, গত দু'বছরে জার্মানিতে শরণার্থীর সংখ্যা চোখে পড়ার মতো বেড়েছে৷ বন্দুক বিক্রির পরিমাণও বেড়েছে চক্রবৃদ্ধিহারে৷ ফলে বিশেষজ্ঞরা ধরেই নিচ্ছেন, শরণার্থীদেরকেই জার্মান নাগরিকদের একটি বড় অংশ হুমকি হিসেবে দেখছেন৷ তবে এর ফলে পরিস্থিতি আরো জটিল হবে বলেই তাঁদের ধারণা৷

অনেকেই মার্কিন গৃহযুদ্ধের সময়ের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছেন৷ সে সময় অ্যামেরিকায় অস্ত্র কেনা খুবই সহজ ছিল৷ সহজে লাইসেন্সও পাওয়া যেতো৷ এর ফলে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছিল স্ট্রিট ফাইটে৷ পরবর্তীকালে অস্ত্র কেনা এবং লাইসেন্স পাওয়ার আইন সংশোধন করা হয়৷ জার্মানদের অস্ত্র কেনার প্রবণতায় অনেকেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন৷ বলা হচ্ছে, এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ না করলে ভবিষ্যতে সমস্যায় পড়তে পারে জার্মানির আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি৷

কার্স্টেন নিপ/এসজি (রয়টার্স)