1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বন্যার কবলে আসামের ৪৩ লাখ মানুষ

২১ জুলাই ২০১৯

প্রতি বর্ষায় ভেসে যায় ভারতের আসামের বহু মানুষের ঘর-সংসার৷ তবুও প্রতিবারই কর্তৃপক্ষের গাফিলতি থাকে চোখে পড়ার মতো৷ কেন পাল্টাচ্ছে না এই অবস্থা?

https://p.dw.com/p/3MRaH
Global Ideas Indien Überschwemmungen
ছবি: Getty Images/AFP/B. Boro

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, সোমবার পর্যন্ত আসামের বন্যায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩৬ জন৷ প্রায় ৪৩ লাখ মানুষ রয়েছেন বাড়ন্ত জলের কবলে৷ আসামের ৩৩টির মধ্যে ৩০টি জেলাই বন্যা কবলিত৷ ফলে স্বাভাবিক দৈনন্দিন জীবন ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত৷

কিন্তু এমন ঘটনা তো নতুন নয়৷ প্রতিবছর ঘুরে ঘুরে আসে বন্যার দুর্যোগ৷ তবে কোথায় রয়ে যাচ্ছে গলদ?

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ইতিমধ্যে বন্যা নিয়ন্ত্রণে আনতে একটি কমিটি গঠন করেছেন৷ শনিবারে সেই কমিটির সাথে বৈঠকে বসার পর তিনি জানান যে আগামী দিনে আরো তীব্র বৃষ্টির সম্ভাবনাকে ফেলে দেওয়া যাচ্ছে না৷ শুধু তাই নয়, ব্রহ্মপুত্রসহ আসামের বরাক, কাটাখাল, বেকি ও জিয়াভরালী নদী বিপদসীমা ছাড়িয়ে ঢুকে পড়েছে মানুষের ঘরে, ফলে ঘরছাড়া হয়েছেন ডিব্রুগড়, কাছাড়, করিমগঞ্জসহ বহু জেলার মানুষজন৷

বিভিন্ন ক্যাম্পে সব মিলিয়ে বর্তমানে রয়েছেন প্রায় ২০,০০০ ঘরছাড়া আসামবাসী৷ কিন্তু বন্যাদুর্গতর মোট সংখ্যার তুলনায় পর্যাপ্ত পরিষেবা নেই বলে জানাচ্ছে ভারতের বিভিন্ন সংবাদসংস্থা৷

শিলচরের বাসিন্দা উজ্জয়িতা চৌধুরী ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘আসামে, বিশেষ করে বরাক উপত্যকায়, বন্যার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে৷ জেলার রাজধানী শিলচরে পৌরসভা থেকে সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, কারো কোনো হেলদোল নেই৷ রাস্তাঘাটে যথেচ্ছ প্লাস্টিক ও অন্যান্য আবর্জনা ফেলার কারণে জল জমে যাচ্ছে কয়েকদিনের বৃষ্টিতেই৷ কিছু কিছু অঞ্চল সম্পূর্ণ জলের তলায় চলে যাচ্ছে মাত্র একদিনের বৃষ্টিতেই৷''

আসাম রাজ্য ও কেন্দ্রে দুই জায়গাতেই ক্ষমতায় ভারতীয় জনতা পার্টির নেতৃত্বে গঠিত সরকার৷ স্বাভাবিকভাবেই, বন্যা পরিস্থিতির অবনতির ফলে তৎপর হয়েছেন বিরোধী দল কংগ্রেসের আঞ্চলিক নেতারা৷

কিন্তু বাড়ন্ত জলসীমার প্রভাব আটকে নেই শুধু জনজীবনে৷ বন্যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অভয়ারণ্য কাজিরাঙা জাতীয় পার্ক৷ ইতিমধ্যে, সেখানের বিখ্যাত এক শিংযুক্ত গণ্ডারসহ বাঘ, হাতি প্রভৃতি পশুদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে উঁচু ভূমির এলাকায়৷

কিন্তু বন্যার ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বরপেটা জেলার মানুষ, জানিয়েছে আসাম রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তর৷ সেখানের প্রায় ৮৫,০০০ জন ঘরছাড়া৷ কিন্তু তাদের আশ্রয় দেবার মতো যথেষ্ট শিবির নেই বলে চিন্তায় সেখানকার স্থানীয় মানুষ৷

মুখ্যমন্ত্রী যদিও টুইটের মাধ্যমে আসামবাসীদের নিশ্চিন্তে থাকতে বলেছেন, কিন্তু স্থানীয় কর্তৃপক্ষের দায়সারা মনোভাবের ফলে মাঠ পর্যায়ে সাহায্য এসে পৌঁছাচ্ছে না৷

এদিকে, জাতীয় নাগরিকপঞ্জীকে ঘিরে চাপান-উতোর বাড়ার কারণে সাধারণ মানুষ জলমগ্ন ঘর থেকে নিজের চেয়ে বেশি যত্নে রক্ষা করছেন নাগরিকত্ব প্রমাণ করবার নথি! প্রাণ না নাগরিকত্ব? কোনটা বাঁচাবে আগে মানুষ? বন্যায় তছনছ হয়ে যাওয়া আসামে এই প্রশ্নের উত্তর নেই কারো কাছে৷

কোথায় শেষ হবে এই বন্যা বিপর্যয়? সরকার বদল হলেও মিলছে না সমাধান৷ তবে কি আসামের বার্ষিক বর্ষা ও হেনস্থার চিত্র এবারও অপরিবর্তিতই থেকে যাবে?

এসএস/ডিজি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য