1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বন উজাড়ে বাড়ছে সংক্রামক ব্যাধির ঝুঁকি

Sanjiv Burman১ মে ২০২০

বন জঙ্গল ঢালের মত মানবজাতিকে সংক্রামক ব্যাধি থেকে রক্ষা করে৷ বনাঞ্চল উজাড়ে সেই ঢাল যখন আর থাকে না তখন বিশ্বজুড়ে জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক পরিণতি নেমে আসে৷

https://p.dw.com/p/3be37
ছবি: Imago/Imagebroker

বিজ্ঞানীরা গত অন্তত দুই দশক ধরে এ বিষয়ে বারবার সতর্ক করেছেন৷ তাঁরা বলেছেন, মানুষ যত সীমা লঙ্ঘন করে বনে প্রবেশ করবে৷ বুনো প্রাণীদের হওয়া নানা রোগ তত বেশি মানবজাতিকে সংক্রমিত করবে৷

এ কারণেই চীনরে উহানে নতুন একটি করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পর একটুও অবাক হননি ব্রাজিলের ফেডারেল ইউনিভার্সিটি অব মাতো গ্রাসো-র ইকোলোজিস্ট আনা লুসিয়ে তোউরিনহো৷ তিনি পরিবেশের ভারসাম্য বিনষ্ট হলে কিভাবে বন এবং সমাজ অসুস্থ হয়ে পড়ে তা নিয়ে গবেষণা করেছেন৷

তিনি বলেন, ‘‘যখন কোনো নতুন ভাইরাস সেটির প্রাকৃতিক আবাস ত্যাগ করে মানুষের দেহে প্রবেশ করে তখন ভীষণ বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়৷ নতুন করোনা ভাইরাস সেটাই আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে বুঝিয়ে দিচ্ছে৷’’

গত ডিসেম্বরের শেষে দিকে উহানে প্রাদুর্ভাবের পর করোনা ভাইরাস গোটা বিশ্বকে স্তব্ধ করে দিয়েছে৷ মানব সভ্যতার ইতিহাসে এটাই সম্ভবত প্রথম বৈশ্বিক মহামারী যেটাতে পুরো বিশ্ব আক্রান্ত৷ সার্স-কোভি-২ নামের এই ভাইরাসটি কোনো বন্য প্রাণী (সম্ভবত বাদুড়) থেকে মানব দেহে প্রবেশ করেছে বলে বিশ্বাস করা হয়৷

এ ধরনের ভাইরাস যখন নিজের উৎসতে আবদ্ধ থাকে (বিশেষ করে গভীর জঙ্গলে যেখানে মানুষ প্রবেশ করে না) তখন সেটি মানবজাতির জন্য একেবারেই ঝুঁকিপূর্ণ নয়৷কিন্তু এই প্রাকৃতিক প্রতিরোধ যখন ভেঙে ফেলা হয়৷ অর্থাৎ, যখন বন উজাড় হতে থাকে সমস্যার শুরু হয় তখন৷

করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের আগেই বেশ কয়েকটি বৈজ্ঞানিক গবেষণায় বন উজাড়ের কারণে বাদুড়ের আবাস বিনষ্ট হওয়া এবং সেগুলোর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে নানা নতুন করোনা ভাইরাসের বিস্তার নিয়ে সতর্ক করা হয়েছিল৷    

এমনকি, পোল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব ওয়ারশর গবেষক আনিতা আফেল্ট তাঁর গবেষণায় পরবর্তী মারাত্মক সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব এশিয়া মহাদেশ থেকে হবে বলে স্পষ্ট করে দেখিয়েছিলেন৷ কারণ হিসেবে তিনি বলেন, গত ৪০ বছরে এশিয়া মহাদেশে মারাত্মকভাবে বন উজাড় করা হয়েছে৷

২০১৮ সালে নিজের গবেষণাপত্রে আফেল্ট লিখেছিলেন, ‘‘দক্ষিণপূর্ব এশিয়া (এসইএ) বিশ্বের ওইসব অঞ্চলের অন্যতম যেখানে উচ্চহারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যেখানে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা অত্যন্ত নাজুক এবং যেখানে নির্বিচারে বন উজড় হচ্ছে৷ কোনো অঞ্চলে নতুন সংক্রামক ব্যাধির প্রাদুর্ভাব হওয়া বা পুরনো সংক্রামক ব্যাধি ছড়িয়ে পড়ার সব রকম পূর্বশর্তই এসইএ অঞ্চলে স্পষ্ট৷’’

তোউরিনহো বলেন, ‘‘গভীর জঙ্গল আসলে এক ধরনের ঢালের মত৷ যেটা বাইরের মানুষদের বন্য প্রাণীর সংস্পর্শে আসার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে৷ বন্যপ্রাণী অনেক জীবাণু বহন করে যেগুলো নানা রোগব্যাধির কারণ৷ যখন আমরা বন টুকরো টুকরো করে ফেলি তখন সেটির গভীরে প্রবেশের রাস্তা তৈরি হয়৷ এটা টাইম বোমার মত৷ সময় শেষ হলেই বিস্ফোরণ ঘটে৷’’

নাদিয়া পন্টেস/এসএনএল/

 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান