1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বন শহরের গবেষণা প্রতিষ্ঠান জেডইএফ

২৭ ডিসেম্বর ২০১০

বন শহরে জেডইএফ বা সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৫ সালে৷ জেডইএফ’এর মূল লক্ষ্য হল উন্নয়ন সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাওয়া৷ তৃতীয় বিশ্বের নানা দেশ থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা এখানে আসে পিএইচডি করতে৷

https://p.dw.com/p/zq8Q
বন বিশ্ববিদ্যালয়ছবি: Rheinische Friedrich-Wilhelms-Universität

জেডইএফ কাজ করছে জাতিসংঘের বিশ্ববিদ্যালয় অর্থাৎ ইউনাইটেড নেশন্স ইউনিভার্সিটি এবং বন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে৷ এখানকার গবেষকরা কোন না কোনভাবে এই দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট৷ যে তিনটি ক্ষেত্রে গবেষণার ওপর জোর দেয় জেডইএফ তা হল:

- পলিটিক্যাল এ্যান্ড কালচারাল চেঞ্জ

- ইকোনমিক এ্যান্ড টেকনলজিক্যাল চেঞ্জ এবং

- ইকলজি এ্যান্ড ন্যাচারাল রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট

তৃতীয় বিশ্বের দেশ থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের উন্নয়মূলক বিষয় নিয়ে গবেষণার জন্য উদ্বুদ্ধ করে জেডইএফ৷ এর মধ্যে দারিদ্র্য-দূরিকরণ, ব্যাবসা এবং বিশ্বায়ন, প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার এবং আবহাওয়া ও পরিবেশের মত বিষয় উল্লেখযোগ্য৷

আলম হোসেন মন্ডল জেডইএফ থেকে তাঁর পিএইচ ডি শেষ করছেন৷ শুরু করেছিলেন ২০০৭ সালে৷ এই ডিসেম্বরেই তিনি কোর্স সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন৷ জেডইএফ প্রসঙ্গে তিনি বললেন, ‘‘আমি যখন মাস্টার্স করি তখনই আমি এই ইন্সটিটিউটের খবর পাই৷ তখন জেডইএফের একটি কনফারেন্সে আমি অংশগ্রহণ করি৷ আমি জানতে পারি যে তৃতীয় বিশ্বের দেশ থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের এই সংস্থাটি বৃত্তি দিয়ে নিয়ে আসে পিএইচডি করার জন্য৷ মূলত তিনটি বিভাগ রয়েছে এই সংস্থায়৷ সমাজ বিজ্ঞান, অর্থনীতি এবং ইকোলজি বিভাগ৷ তবে সবগুলোই উন্নয়মূলক কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত৷ আর এসব বিষয়ে শুধুমাত্র তৃতীয় বিশ্বের দেশ থেকেই প্রার্থী নেওয়া হয়৷ এখানে যারা পিএইচডি করছে এরা বেশিরভাগই তৃতীয় বিশ্বের দেশ থেকে আসা এবং এরা সবাই বৃত্তি পেয়েছে ডিএএডি-র কাছ থেকে৷ এখানে পিএইচডির জন্য যে কেউ আবেদন করতে পারে৷ কোন সুপারভাইজারের প্রয়োজন নেই৷ সরাসরি প্রপোজাল পাঠিয়ে দেওয়ার নিয়ম রয়েছে৷ যদি জেইএফ তা গ্রহণ করে তাহলে তা সঙ্গে সঙ্গেই জানিয়ে দেওয়া হয়৷ এরপর ছাত্র-ছাত্রীদের সুযোগ থাকে এখানে এসে প্রপোজাল পাল্টানোর৷''

Conrad Schetter, Afghanistan-Experte, ZEF, Uni Bonn
জেডইএফ'এর আফগান-বিশেষজ্ঞ কনরাড শেটারছবি: Conrad Schetter

যে সব কাগজপত্র অবশ্যই প্রয়োজন

বছরে মাত্র একবার আবেদন পত্র জমা নেয় জেডইএফ৷ আবেদন পত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ প্রতিবছর ৩০শে অগাস্ট৷ আপনি যদি ২০১২ সালের মধ্যে আপনার পিএইচডি শুরু করতে চান তাহলে ২০১১ সালের ৩০শে অগাস্টের মধ্যে আবাদন পত্র পাঠিয়ে দিন জেডইএফের কাছে৷ তবে এর জন্য প্রয়োজন বেশ কিছু কাগজপত্র, পূরণ করা প্রয়োজন বেশ কিছু শর্ত৷ তা হল:

- আবেদনকারীর বয়ঃসীমা ৩২ বছর

- আবেদনপত্রের সঙ্গে বৈধ পাসপোর্টের ফটোকপি

- জেডইএফের ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করা ফর্ম পূরণ করা, সঙ্গে এক কপি ছবি

- দু'জন অধ্যাপকের কাছ থেকে দুটি প্রশংসা পত্র

- স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি সার্টিফিকেটের ফটোকপি সঙ্গে মার্কশিট

- পিএইচডির রিসার্চ প্রপোজাল - তা হতে হবে হবে ৮ থেকে ১০ পাতার মধ্যে

- মাস্টার্সের থিসিসের একটি সারমর্ম – এক পাতার মধ্যে

- টোফেল বা আইইএলটিএস পরীক্ষার স্কোর

- জিআরই অথবা জিম্যাট স্কোর

- আপনি যদি চাকুরিজীবি হয়ে থাকেন তাহলে প্রতিষ্ঠান থেকে একটি লিখিত চিঠি দেখাতে হবে – তাতে অবশ্যই উল্লেখ থাকতে হবে যে পিএইচডি শেষ করে আপনি আবার একই প্রতিষ্ঠানে যোগ দেবেন

- যদি বৃত্তি পেয়ে থাকেন তার বৃত্তান্ত

- যদি না পেয়ে থাকেন সেটাও জানাতে হবে

বৃত্তির জন্য ডিএএডি-র সঙ্গে যোগাযোগ করা যেতে পারে৷

বাংলাদেশ আর জার্মানির মধ্যে গবেষণায় পার্থক্য কোথায়? অথবা তেমন বিশেষ কোন পার্থক্য আদৌ আছে কি? আলম হোসেন মন্ডল জানালেন তাঁর অভিজ্ঞতার কথা৷ তিনি বললেন,‘‘ অনেক পার্থক্য আছে৷ এখানে আমি যে সুযোগ-সুবিধাগুলো পেয়েছি সেটা বাংলাদেশে নেই৷ প্রথমেই বলবো বিভিন্ন ধরণের আর্টিকেল বা বই যোগাড় করা৷ অর্থাৎ আমি যে বিষয় নিয়ে কাজ করছি সেই বিষয়ে নিয়ে লেখা বা আর্টিকেল খুঁজে পাওয়া৷ তা আমি সহজেই আমার ডেস্কে বসেই পেয়ে যাচ্ছি৷ ইন্টারনেটের সুবিধা কত তা এখানেই টের পাওয়া যায়৷ এর ফলে অত্যন্ত দ্রুত আমার কাজ এগিয়ে গেছে৷ কীভাবে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাবো, কীভাবে তা শেষ করবো সব কিছুই দ্রুত করা সম্ভব হয়েছে৷ সবচেয়ে বড় কথা হল বাংলাদেশে আমার কোন বই বা লেখা প্রকাশিত হয়নি অথচ এখানে এসে আমি এই বছরে আমার ছয়টি লেখা আমি প্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছি৷ এবং সবগুলোই প্রকাশিত হয়েছে উচ্চমানের গবেষণা জার্নালে৷ আর এখানে রয়েছে হাজার হাজার বই৷ প্রয়োজনীয় একটি বই যদি নাও পাওয়া যায় তাহলে লাইব্রেরিয়ানকে বললেই হবে, তিনিই যোগাড় করে দেবেন এবং তা ২৪ ঘন্টার মধ্যেই৷ বাংলাদেশে এই সুবিধাটি একেবারেই নেই৷ ইন্টারনেটের সুবিধা, বই-পত্রের সুবিধা খুবই প্রয়োজনীয় যার অভাব আছে বাংলাদেশে৷''

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক