1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাংলাদেশি দূতাবাসে হামলার হুমকি

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২০ ডিসেম্বর ২০১৩

পাকিস্তানের সঙ্গে অস্থায়ীভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবিতে গণজাগরণ মঞ্চের ঢাকায় পাকিস্তান দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচিতে লাঠিপেটা করেছে পুলিশ৷ এদিকে, পাকিস্তানে বাংলাদেশি দূতাবাস উড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছে তালেবান৷

https://p.dw.com/p/1Acm1
Pakistan Protest gegen Drohenangriffe der USA
ছবি: Arif Ali/AFP/Getty Images

বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটার দিকে গুলশান-২ নম্বর চত্বরে জড়ো হন গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা৷ তাঁরা পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী গুলশান এলাকায় ঢাকার পাকিস্তান হাইকমিশন ঘেরাওয়ের প্রস্তুতি নিতে থাকেন৷ তখনই আগে থেকে সেখানে অবস্থান নেয়া পুলিশ সদস্যরা গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীদের ওপর হামলা চালায়৷ তাঁরা লাঠিপেটা করে কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেন৷

গণজাগরণ মঞ্চের মারুফ রসুল সংবাদ মাধ্যমকে জানান, পুলিশের লাঠিপেটায় মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকারসহ বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন৷ তিনি জানান, ইমরানকে পুলিশ দু'দফায় লাঠিপেটা করলে তিনি মাথা, বুক ও পিঠে আঘাত পান৷ তাঁকে প্রথমে ল্যাবএইড এবং পরে ইউনাইটেড হাসপাতালে নেয়া হয়৷

জানা গেছে, ইমরান এইচ সরকারকে পুলিশ কিছুক্ষণ আটক রেখে ছেড়ে দিলেও ঘটনাস্থল থেকে গণজাগরণ মঞ্চের ১১ জন কর্মীকে আটক করা হয়েছে৷

তবে পুলিশের যুগ্ম-কমিশনার শাহাবুদ্দিন আহমেদ জানান, তাঁরা গণজাগরণ মঞ্চের নেতা-কর্মীদের লাঠিপেটা বা নির্যাতন করেননি৷ ঐ এলাকা কূটনৈতিক পল্লি হওয়ায় স্পর্শকাতর এলাকা থেকে তাঁরা গণজাগরণ মঞ্চের নেতা-কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছেন৷ তবে কয়েকজনকে আটকের কথা স্বীকার করেন তিনি৷

গণজারণ মঞ্চের এই কর্মসূচিতে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং মুক্তিযোদ্ধারাও যোগ দেন৷

এর আগে গত বুধবার একই দাবিতে মঞ্চের কর্মীরা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে গুলশানে পাকিস্তান হাইকমিশন ঘেরাও করে৷ তাঁরা ঘেরাও পরবর্তী সমাবেশে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক অস্থায়ীভাবে ছিন্ন করতে ২০ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন৷ ২০ ঘণ্টা শেষ হওয়ার পর একই দাবিতে বৃহস্পতিবারের কর্মসূচি শুরু হয়েছিল৷

সমাবেশ ছত্রভঙ্গ হওয়ার পর ইমরান এইচ সরকার আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন৷

যুদ্ধাপরাধের দায়ে গত ১২ ডিসেম্বর জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে নিন্দা প্রস্তাব পাস হয়৷ পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিসার আলি একে ‘বিচারিক হত্যাকাণ্ড' বলে অভিহিত করেন৷ আর পাকিস্তান জামায়াত সেদেশের সরকারকে বাংলাদেশ আক্রমণের আহ্বান জানায়৷ ঢাকা অবশ্য পাকিস্তানি হাইকমিশনারকে তলব করে এর ব্যখ্যা চেয়ে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে৷ নিন্দা জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও৷ আর গণজাগরণ মঞ্চ পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক অস্থায়ীভাবে ছিন্ন করার দাবি জানিয়েছে৷

এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক মুনতাসির মামুন ডয়চে ভেলেকে বলেন, গণজাগরণ মঞ্চ যে অবস্থান থেকে পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থগিতের দাবি জানিয়েছে তা ঠিকই আছে৷ কিন্তু সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হয় সবদিক বিবেচনা করে৷ তবে গণজাগরণ মঞ্চের শান্তিপূর্ণ অবস্থানে পুলিশের লাঠিপেটা গ্রহণযোগ্য নয়, বলে মন্তব্য করেন তিনি৷

এদিকে পাকিস্তানে বাংলাদেশের দূতাবাস বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছে তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান নামে একটি জঙ্গি সংগঠন৷ পাকিস্তানের ‘দ্য নেশন' পত্রিকা এ খবর দিয়েছে৷ পত্রিকাটি জানায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করায় তারা এই হুমকি দেয়৷ জঙ্গি সংগঠনটি কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকরকে ‘হত্যাকাণ্ড' বলে অভিহিত করেছে৷

অধ্যাপক মুনতাসির মামুন বলেন, জামায়াতের যে জঙ্গিদের সঙ্গে সম্পর্ক আছে, তা অনেক আগে থেকেই জানা৷ এবার কাদের মোল্লার জন্য তালেবানের হুমকিতে সেটা আবারো প্রমাণিত হলো৷ জামায়াত পাকিস্তানের প্রতি অনুগত তা পাকিস্তানের ভূমিকায় প্রমাণিত৷ তবে জেনেভা কনভেশন অনুযায়ী পাকিস্তান সরকার সেদেশে বাংলাদেশি দূতাবাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে বলে তিনি আশা করেন৷

এদিকে, তালেবানের হুমকির বিষয়টি পাকিস্তানকে জানানো হয়েছে বলে বাংলাদেশে ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টফোর ডটকমকে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মো: শামীম আহসান৷ বাংলাদেশের দূতাবাস ও সেখানকার কর্মীদের নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার ব্যাপারে পাকিস্তান বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য