1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিচারপতির কোর্ট ঘেরাও, অভিযুক্ত তৃণমূল

১৩ এপ্রিল ২০২২

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কোর্ট ঘেরাও করে রাখলেন কিছু আইনজীবী। অভিযোগ, তারা তৃণমূলের সেলের সদস্য।

https://p.dw.com/p/49sGO
কলকাতা হাইকোর্টের ইতিহাসে এরকম ঘটনা অভূতপূর্ব, বলছেন আইনজীবীরা। ছবি: Satyajit Shaw /DW

অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটলো শতাব্দীপ্রাচীন কলকাতা হাইকোর্টে। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কোর্ট ঘেরাও করে রাখল কিছু আইনজীবী। তারা অন্যদের ভিতরে ঢুকতে দেয়নি, প্রবল চিৎকার করেছে। সম্প্রতি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের একাধিক রায় রাজ্য সরকার বা তৃণমূলের বিরুদ্ধে গেছে। ঘেরাওকারী আইনজীবীদের প্রশ্ন, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় কী করে ডিভিশন বেঞ্চের বিরুদ্ধে কথা বলেন?

বুধবার আইনজীবীদের একাংশের এই আন্দোলনে উত্তাল হয় হাইকোর্ট চত্বর। অভিযোগ, তারা কোর্টে কাউকে ঢুকতে দেননি। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের কোর্ট বয়কটেরও দাবি তোলেন ওই আইনজীবীরা। তারা তৃণমূলের আইনজীবী সেলের সদস্য বলে অভিযোগ।

বিচারপতি আইনজীবীদের শান্তি বজায় রাখার অনুরোধ জানান। তারা কেন বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, সে বিষয়ে জানতে চান। তিনি বিক্ষুব্ধ আইনজীবীদের মিনিট সাতেক সময়ও দিতে চান, যাতে তারা তাদের দাবির কথা বলতে পারেন। তিনি বলেন, এটা শুনানির অংশ হবে না। রেকর্ডে থাকবে না। তবে বিচারপতি জানিয়ে দিয়েছেন, আদালতে সংবাদমাধ্যম ঢুকতে পারবে না, এমন নির্দেশ তিনি দিতে পারবেন না। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় তা হয় না।

দ্য ওয়াল জানাচ্ছে, বিচারপতি গঙ্গেপাধ্য়ায় বলেছেন, দুর্নীতি দেখলে তিনি রুখে দাঁড়াবেনই। তার মাথায় বন্দুক ধরেও কিছু করা যাবে না। 

আইনজীবী ও সিপিএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য তখন আদালতে ছিলেন। তিনি বলেন, ''কেন শুধু একটিমাত্র কোর্টের সামনে বিক্ষোভ দেখানো হচ্ছে। কেনই বা মামলার সঙ্গে যুক্ত নয়, এমন আইনজীবীরা ভিড় করছেন।'' তখন প্রবল চিৎকার হচ্ছিল। এই অবস্থায় শুনানি সম্ভব নয় বলে তিনি বেরিয়ে যান।

আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় বলেন, ''এটা তো গুন্ডামি করা হচ্ছে!'' আরেক আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য বলেন, ''এই কোর্ট বয়কট করতে চেয়ে প্রস্তাব পাশ করাতে চেয়েছিলেন বিক্ষোভকারী আইনজীবীরা। কিন্তু তারা তা করতে পারেননি।''

অভূতপূর্ব ঘটনা

হাইকোর্টের আইনজীবী অরিন্দম দাস ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ''এটা অভূতপূর্ব ঘটনা। কলকাতা হাইকোর্টে প্রথম এই ঘটনা ঘটলো। মানুষের শেষ আশ্রয় হলো বিচারবিভাগ। এই ধরনের ঘটনার ফলে খারাপ বার্তা যাবে। তার মতে, এটা খুবই হতাশাজনক ঘটনা।''

প্রবীণ সাংবাদিক শুভাশিস মৈত্র মনে করেন, ''বিচারপতিদের ভয় দেখানোর চেষ্টা হচ্ছে।'' ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেছেন, ''এর ফলে বিচারপতিদের মনে আশঙ্কা দেখা দিলে তা চরম অগণতান্ত্রিক হবে। রায় দেয়ার সময় আইনজীবীরা কী ভাববে, তা দেখতে গেলে তো সর্বনাশ হবে।''

আইনজীবীদের বৈঠকে গোলমাল

মঙ্গলবার হাইকোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের বৈঠকে প্রবল গোলমাল হয়। আনন্দবাজার জানাচ্ছে, দুই দল আইনজীবীর মধ্যে হাতাহাতি হয়। সেখানেও এক বিচারপতির বিরুদ্ধে আপত্তি ও বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েই গোলমাল হয়। শুরুতেই এমন পরিস্থিতি হয় যে, অরুণাভ ঘোষ সভা বাতিল করে দেন। তারপর গোলমাল তীব্র হয়।

জিএইচ/এসজি (হিন্দুস্তান টাইমস, দ্য ওয়াল, আনন্দবাজার)