1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মেয়র সাহেব কবে?

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১৩ আগস্ট ২০১৭

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার হাতিরঝিলে বিজিএমইএ ভবন ভেঙে ফেলতে আর সময় আছে মাত্র একমাস৷ কিন্তু এর প্রস্তুতি এখনো দৃশ্যমান নয়৷ আর এই প্রেক্ষাপটে আলোকচিত্রী শহিদুল আলম শুরু করেছেন ফটো ক্যাম্পেইন৷

https://p.dw.com/p/2i8sm
Bangladesch Hauptgebäude Textilhersteller BGMEA in Dhaka
ছবি: Drik Picture Library

দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, আলোকচিত্রী, অ্যাক্টিভিস্ট শহিদুল আলমের ফটো ক্যাম্পেইনের শিরোনাম হচ্ছে ‘‘মেয়র সাহেব কবে?''৷ ২০ ফুট বাই ৭ ফুট আকৃতির একটি ব্যানারে শহিদুল আলম তাঁর তোলা কিছু ছবি প্রিন্ট করে এই ক্যাম্পেইন শুরু করেন ১১ আগস্ট থেকে৷ তিনি ব্যানারটি টানিয়ে দিয়েছেন হাতিরঝিলে ঠিক বিজিএমইএ ভবনের সামনে৷ ব্যানারটির সামনের সড়কেই সেদিন সকালে শহিদুল আলম তাঁর আরেক প্রতিষ্ঠান পাঠশালার শিক্ষার্থীদের একটি ক্লাশ নেন৷

Sahidul.mp3 - MP3-Stereo

কেন এই ফটো ক্যাম্পেইন জানতে চাইলে শহিদুল আলম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট ৬ মাসের মধ্যে ভবনটি ভেঙে ফেলতে বলেছে৷ কিন্তু কোর্টের সেই আদেশকে অগ্রাহ্য করা হচ্ছে৷ এভাবে আদালতকে যে অবমাননা করা হচ্ছে তার প্রতিবাদ করার দরকার আছে৷

ঢাকার এক মেয়রের বক্তব্য উল্লেখ করে আলোচিত এই আলোকচিত্রী বলেন, ‘‘মেয়র সাহেব বলছেন জলাধার দখল করে অবৈধ স্থাপনা করায় তিনি রাজধানীতে বন্যা বা জলাবদ্ধতার সমাধান করতে পারছেন না৷ হাতিরঝিলে বিজিএমইএ ভবন একটি অন্যতম অবৈধ স্থাপনা৷ 

‘‘মেয়র সাহেব (আনিসুল হক) নিজে বিজিএমইএ-র সভাপতি ছিলেন৷ প্রতিদিন তিনি অনেক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কারচ্ছেন৷ কিন্তু বিজিএমই ভবন উচ্ছেদের ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না৷ তাহলে আইন একেকজনের জন্য একেকরকম কিনা,'' প্রশ্ন তোলেন আলম৷  

Bangladesch Hauptgebäude Textilhersteller BGMEA in Dhaka
আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কোন দৃশ্যমান উদ্যোগ এখনো নেয়া হয়নিছবি: Drik Picture Library

আলোকচিত্রের মাধ্যমে প্রতিবাদ কেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘আমি একজন নাগরিক৷ নাগরিক হিসেবেই প্রতিবাদ করছি৷ আমার মনে হয় এখন আমাদের নাগরিকদের আরো জোড়াল প্রতিবাদ করা উচিত৷ কেউ হয়তো ভয়ে প্রতিবাদ করছেন না৷ কেউ হয়তো ক্ষমতার কাছে থাকার সুবিধা নিতে প্রতিবাদ করছেন না, সেটা আমরা বলতে পারবনা৷ কিন্তু প্রতিবাদটা হওয়া প্রয়োজন৷''

প্রসঙ্গত, গত ৫ মার্চ বিজিএমইএ ভবন অবিলম্বে ভেঙে ফেলতে নির্দেশ দেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ৷ এরপর বিজিএমইএ ভবনটি ভাঙতে তিন বছর সময় চাইলে আদালত ৬ মাস সময় দেন৷ আদালত ভবনটি বিজিএমইএ-কে নিজ খরচে ভাঙতে বলেন৷ কিন্তু আদেশের পর পাঁচ মাস পর হয়ে গেলেও ভাঙার ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ এখনো দৃশ্যমান নয়৷ এই বিষয়ে জানার জন্য বিজিএমই সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি৷ তবে দু'দিন আগে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘‘এটি আমরা ভাঙবো কেন? আমরা উত্তরায় ভবন বানাচ্ছি সেটা শেষ হলে সেখানে চলে যাবো৷''

উল্লেখ্য, ২০১০ সালে দৃকের শহিদুল আলমের একক প্রদর্শনী ‘‘ক্রসফায়ারের'' মাধ্যমে ‘‘আর নয়'' ক্যাম্পেইনের শুরু হয়৷ এরপর কল্পনা চাকমা গুম, তাজরিন গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি, রানা প্লাজা, ট্যাম্পাকোসহ আর অনেক তৈরি পোশাক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের অকাল মত্যু, দৃকের কর্মী ইরফানুল ইসলামসহ দেশজুড়ে গুম-খুন-হত্য বিরুদ্ধে দৃক একই শিরোনামে প্রচারণা চালায়৷ এরই ধারাবাহিকতায় ‘বিজিএমইএ কমপ্লেক্স' ভাঙার দাবিতে দৃকের ‘মেয়র সাহেব কবে?'- শিরোনামে ফটো ক্যাম্পেইন এখন চলছে৷