1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিজেপি-র প্রস্তাবে সৌরভের না

৪ মার্চ ২০২১

বিজেপি-র প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি এখন রাজনীতিতে নামতে চাইছেন না।

https://p.dw.com/p/3qBe5
এখন সম্ভবত রাজনীতিতে আসছেন না সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ছবি: Getty Images/AFP/P. Paranjpe

বিজেপি-র তরফ থেকে চেষ্টায় কোনো ত্রুটি ছিল না। বারবার তার কাছে প্রস্তাব নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। বিজেপি-র শীর্ষ নেতৃত্ব আন্তরিকভাবেই চেয়েছিলেন, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি-র মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হোন। কিন্তু বাদ সেধেছে সৌরভের হৃদরোগ। সম্প্রতি দুই বার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তিনি। একাধিক স্টেন্ট বসাতে হয়েছে। তারপর এখন বিশ্রামে আছেন। শরীরের এই অবস্থায় রাজনীতির নতুন ইনিংস শুরু করার ব্যাপারে সম্মতি জানাননি সৌরভ। সূত্র জানাচ্ছে, তিনি সবিনয়ে বিজেপি নেতাদের জানিয়ে দিয়েছেন, এখন রাজনীতিতে নামছেন না। নামার মতো অবস্থায় নেই। তাই মহারাজকে ছেড়েই এখন অঙ্ক কষতে হবে বিজেপি-কে। 

সৌরভ অসুস্থ হওয়ার পরেই দিল্লিতে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিজেপি নেতা ডিডাব্লিউকে বলেছিলেন, সাবেক ক্রিকেট ক্যাপ্টেনকে পাওয়ার আশা শেষ হয়ে গেল। এখন আর রাজনীতির, প্রচারের ঝক্কি নেয়া তার পক্ষে সম্ভব নয়। মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীকে রাজ্য চষে বেড়াতে হয়। অসংখ্য বৈঠক করতে হয়। দলের নেতা ও প্রার্থীদের হাজারো বায়ানাক্কা মেনে নিতে হয়। হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর এখন আর তার শরীর ওইরকম ঝক্কি নিতে পারবে না বলে তিনি জানিয়েছিলেন। 

কিন্তু তারপরেও বিজেপি নেতারা চেয়েছিলেন, আগামী ৭ মার্চ ব্রিগেডের জনসভায় সৌরভ থাকুন। তিনি ভোটে লড়বেন না, প্রচারও করবেন না। এক আধবার মোদী-শাহের জনসভায় থাকলেই হবে। অর্থাৎ, প্রকাশ্যে বিজেপি-কে সমর্থনের বার্তা দিতে হবে। এরপর কলকাতায় বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য জানান, সৌরভ যদি ব্রিগেডের সভায় আসতে পারেন, তা হলে তাকে স্বাগত জানানো হবে। তবে পুরোটাই নির্ভর করছে তার সিদ্ধান্তের উপর। 

কিন্তু রাজনীতিতে না নেমে শুধু প্রধানমন্ত্রীর সভায় উপস্থিত হওয়ার প্রস্তাবে সৌরভ রাজি হননি বলে সূত্র জানাচ্ছে। এরকম ধরি মাছ না ছুঁই পানির মতো করে রাজনীতি করতে তিনি একেবারেই উৎসাহী নন। সৌরভ যে কাজটা করেন, তা দাপটের সঙ্গে করার চেষ্টা করেন। সেভাবেই তিনি ক্রিকেট খেলেছেন, অধিনায়কত্ব করেছেন, ক্রিকেট প্রশাসনের শীর্ষ পদে আছেন। সেজন্যই তার নামের সঙ্গে জুড়ে গেছে দাদাগিরি। আধাআধি কাজ করা তার চরিত্রে নেই। আর ঠিক হোক বা ভুল, বিজেপি নেতাদের ধারণা ছিল, সৌরভ তাদের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হলে পশ্চিমবঙ্গ জয় অনেক সহজ হয়ে যাবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য রাজ্যে কোনো মুখ নেই বিজেপি-র। সৌরভ এলে সেই অভাব আর থাকত না। আর দাদার সমর্থকরাও তখন বিজেপি-র দিকে ঝুঁকে পড়ত। সে জন্যই তারা শেষ সময় পর্যন্ত সৌরভকে প্রস্তাব পাঠিয়ে গেছেন। 

রাজনীতির ময়দানে সৌরভের প্রবেশ নিয়ে নানা মত আছে। সৌরভ এখন গোটা পশ্চিমবঙ্গের দাদা। বিজেপি-তে যোগ দিলে তার সেই পরিচয় খণ্ডিত হয়ে যেত। তখন বিজেপি-র সমর্থকদের কাছে তিনি আগের মতোই নয়নের মণি হয়ে থাকতেন, কিন্তু বিরোধীদের কাছে নয়। ভূপেন হাজারিকাকে ঠিক এই সমর্থন ও বিরোধের মধ্যে পড়তে হয়েছিল, যখন তিনি রাজনীতিতে যোগ দেন। অল্প কিছুদিন পরেই তিনি রাজনীতি থেকে সরে আসেন। কিন্তু ততক্ষণে ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে গেছে। 

প্রবীণ সাংবাদিক জয়ন্ত ভট্টাচার্য ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''সৌরভের প্রধান উৎসাহ হলো ক্রিকেট। তিনি মনপ্রাণ দিয়ে খেলেছেন। আবেগ দিয়েই খেলেছেন। এখনো বোঝা যাচ্ছে, তার উৎসাহ ক্রিকেটেই বেশি। সৌরভ আপাতত সেখানেই থাকতে চান।''

জিএইচ/এসজি(পিটিআই, আনন্দবাজার)