1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
সমাজলাইবেরিয়া

বিরল প্রাণীর সন্ধানে ডিএনএ প্রযুক্তির প্রয়োগ

৪ মে ২০২২

আফ্রিকার ঘন জঙ্গলে বিরল লুপ্তপ্রায় প্রাণীর খোঁজ পাওয়া সহজ নয়৷ তার উপর চোরাশিকারী ও কাঠুরেদের কার্যকলাপ এমন প্রাণীর উপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করছে৷ অত্যাধুনিক ডিএনএ পদ্ধতি এ ক্ষেত্রে বিপ্লব আনতে পারে৷

https://p.dw.com/p/4Ap9x
Liberia Marshall City | Schimpanseninseln
ছবি: John Wessels/AFP

লাইবেরিয়ার সাপো ন্যাশানাল পার্কে প্রায় ১,৮০০ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে আদিম ঘন রেনফরেস্ট শোভা পাচ্ছে৷ আইন পাশ করে সেখানে প্রকৃতি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু চোরাশিকার সেখানে আজও সমস্যা হয়ে রয়েছে৷

প্যাংগোলিন, এমনকি শিম্পাজিও মেরে মাংস বিক্রি করা হয়, যা ‘বুশমিট' হিসেবে পরিচিত৷ চোরাশিকারীরা প্রায়ই আশেপাশের বসতি থেকে আসে৷ সংরক্ষণবাদীরা তাই স্থানীয় মানুষকে জঙ্গল সংরক্ষণের উদ্যোগে শামিল করতে চান৷

টমাস ডগবে সেই এলাকার মানুষ৷ বায়োমনিটরিং রেঞ্জার হিসেবে তিনি দশ বছরেরও বেশি কাজ করেছেন৷ বন্যপ্রাণীর ছবি তোলার বিশেষ ক্যামেরা ব্যবহার করে তিনি সেগুলির গতিবিধির উপর নজর রাখতে পারেন৷ যেমন পিগমি বা বামন জলহস্তি৷ গোটা বিশ্বে এই প্রজাতির মাত্র ৩,০০০ প্রাণী অবশিষ্ট রয়েছে৷

এই সব প্রাণী জীবিত রাখার সুবিধা টের পেলে তবেই স্থানীয় মানুষ চোরাশিকার বন্ধ করবে বলে ডগবে নিশ্চিত৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা স্থানীয় মানুষকে পিগমি হিপো না মারতে বলি৷ কারণ পর্যটকরা এসে সেই প্রাণী দেখতে চান৷ তখন স্থানীয় সমাজ জঙ্গলের কারণে উপকৃত হয়৷''

সেই জাতীয় পার্কে আর কোন প্রাণী বাস করে? এই ঘন জঙ্গলে প্রচলিত গণনার প্রক্রিয়া প্রয়োগ করা কঠিন৷ কিন্তু সংরক্ষণকর্মীদের হাতে নতুন এক হাতিয়ার আছে৷ কোনো প্রাণী নদী পেরোলে সামান্য পরিমাণ ডিএনএ রেখে যায়৷ মূত্র, ঘাম বা ত্বকের কোষ থেকে তা সংগ্রহ করা যায়৷

পানি সংগ্রহ করে সাধারণ এক কিটের মাধ্যমে তা ফিল্টার করা যায়৷ সেই নমুনা বিশ্লেষণ করতে ল্যাবে পাঠানো হয়৷ ল্যাব কর্মীরা নির্দিষ্ট প্রাণীর ডিএনএ-র চিহ্ন খোঁজেন৷ প্রকল্পের ম্যানেজার শাদ্রাখ কারউইলিয়ান মনে করেন, ‘‘এই কিট যাকে বলে ‘গেম চেঞ্জার'৷ এর ফলে আমাদের কাজের জায়গায় নির্দিষ্ট প্রজাতি চিহ্নিত করতে বৈজ্ঞানিক গবেষণার অনেক উন্নতি হচ্ছে৷ আরও বড় জরিপেও যে সব বিরল প্রজাতির অস্তিত্ব জানা যায় না, সেগুলি সম্পর্কেও ধারণা পাওয়া যায়৷''

প্রাণী রক্ষায় ডিএনএ প্রযুক্তি প্রয়োগের সুফল

এই চিহ্নকে পরিবেশগত ডিএনএ বা ইডিএনএ বলা হয়৷ এর মাধ্যমে সংরক্ষণকর্মীরা এমন নতুন লুপ্তপ্রায় প্রজাতির হদিশ পান, যেগুলি সম্পর্কে আগে জানা ছিল না৷ জেন্টিংকস ডুইকার নামের এক ধরনের অ্যান্টিলোপ ও ডায়ানা মাংকি বানর সম্পর্কে এভাবে জানা গিয়েছিল৷

সংরক্ষণকর্মীরা জাতীয় পার্কের বাসিন্দাদের ডিএনএ শনাক্ত করার নতুন এই কৌশল সম্পর্কে বুঝিয়ে বলেছেন এবং নিজেদের আবিষ্কারের কথাও জানিয়েছেন৷ এভাবে তাঁরা ইকোলজি সম্পর্কে স্থানীয় সমাজে সচেতনতা বাড়াতে চান৷ কারউইলিয়ান বলেন, ‘‘ভবিষ্যতে এই গোটা এলাকার স্থানীয় মানুষ তথ্য সংগ্রহ করে সাহায্য করবে এবং এভাবে জীববৈচিত্র্যের ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়বে বলে আমার আশা৷ ইডিএনএ-র মাধ্যমে তারা আমাদের অভিনব জীববৈচিত্র্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণের কাজের আরও কদর করবে৷''

তা সত্ত্বেও কিছু প্রজাতি চরম হুমকির মুখে পড়বে৷ কারণ পার্কের আশেপাশে কিছু এলাকায় তিন কিলোমিটার জুড়ে কাঠ কাঠার অনুমতি রয়েছে৷ নতুন ডিএনএ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সেখানেও বিরল প্রাণীর চিহ্ন পাওয়া গেছে – যেমন ধূসর টিয়াপাখি এবং ওয়েস্টার্ন রেড কলোবাস বানর৷ শাদ্রাখ কারউইলিয়ান বলেন, ‘‘স্থানীয় মানুষ এটাও বুঝবে যে জাতীয় পার্কের কাছের জঙ্গলগুলিরও মূল্য রয়েছে৷ জাতীয় পার্কের মতো সেই জঙ্গলের সুরক্ষাও যে জরুরি, তারা সেটা টের পাবে৷ যখন তারা সেই জঙ্গলে মূল্যবান প্রজাতির অস্তিত্বের কথা জানতে পারবে, তখন তারা হুমকি রুখতে লাইসেন্স বিতরণ ও কাঠ কাঠাও বন্ধ করবে৷''

সেই ‘বাফার জোন'-এর অংশবিশেষ যদি জাতীয় পার্কের অন্তর্গত করা যায়, তখন অবশ্যই প্রাণীর সুরক্ষা সহজ হবে৷ কিন্তু স্থানীয় মানুষ আর গাছ কাটতে পারবে না৷ সেই ক্ষতিপূরণ না দিতে পারলে সংঘাত দেখা দিতে পারে৷

বসওয়েল/গেবহার্ড/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য