1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিরোধীদের হাতেই এখন কিরঘিজস্তানের রাষ্ট্র ক্ষমতা

৮ এপ্রিল ২০১০

কিরঘিজস্তানে সরকার বিরোধীদের তুমুল বিক্ষোভের মুখে প্রেসিডেন্ট বাকিয়েভ দেশ ত্যাগ করার পর বিরোধীদল রাষ্ট্র ক্ষমতা গ্রহণের দাবি করেছে৷ বিরোধী নেতা রোজা ওটুনবায়েভা নিজেকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে ঘোষণা করেছেন৷

https://p.dw.com/p/Mqbf
কিরঘিস্তানের তালাস শহরে মঙ্গলবারের বিক্ষোভের ছবিছবি: AP

কিরঘিজস্তানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বিরোধী পক্ষের নেতা রোজা ওটুনবায়েভা নিজেকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে ঘোষণা করার পর, দেশের সংসদ ভেঙ্গে দিয়েছেন৷ এবং তিনি বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রয়েছে৷ ওটুনবায়েভা প্রেসিডেন্ট কুরমানবেক বাকিয়েভকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন৷ কিন্তু প্রেসিডেন্ট বাকিয়েভ পরাজয় মেনে নিতে অস্বীকার করেছেন৷ ওটুনবায়েভা বলেন, প্রেসিডেন্ট বাকিয়েভে এখনও পদত্যাগ করেননি এবং দেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে সমর্থন যোগানোর চেষ্টা করছেন৷ ওটুনবায়েভা বলেন, বাকিয়েভ তার শাসনামলে ক্ষমতার যে অপব্যবহার করেছেন এবং জনগণের ওপর যে দমননীতি চালিয়েছেন, তার জবাব আমরা গতকালই দিয়েছি৷ তিনি বলেন, কিরঘিজস্তানের জনগন দেশে গণতন্ত্র আনতে চায়৷ যা ঘটেছে এটাকে আপনারা বিপ্লব বলতে পারেন, বলতে পারেন, জনগণের বিদ্রোহ৷ অথবা অন্য ভাবে বলা যায়, এটা বিচার বা গণতন্ত্র চাওয়ারই আরেকটি ধরণ৷

এদিকে রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ভ্লাদিমির পুটিন টেলিফোনে ওটুনবায়েভার সঙ্গে কথা বলেছেন এবং কিরঘিজস্তানের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে তাঁকে স্বীকৃতি দিয়েছেন৷ পুটিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী পুটিনের সঙ্গে ওটুনবায়েভার টেলিফোন আলাপটি ছিল মুলত কিরঘিজস্তানের সরকার প্রধান হিসেবে তাঁর ভূমিকা নিয়ে৷ এদিকে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডো ভেস্টারভেলে এক বিবৃতিতে বলেছেন কিরঘিজস্তানে রক্তপাতের ঘটনায় তিনি মর্মাহত৷ তিনি বলেন, দেশটিতে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা যত দ্রুত সম্ভব আবার ফিরিয়ে আনতে হবে৷ ইউরোপিয় ইউনিয়ন কিরঘিজস্তানে মানবিক সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে বৃহস্পতিবার৷

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে অবশ্য বলা হয়েছে, কিরঘিজস্তানের স্বঘোষিত সরকারের বৈধতার বিষয়ে ওয়াশিংটন এখনও কোন সিদ্ধান্ত নেয় নি৷ উল্লেখ্য, মধ্য এশিয়ার এই দেশে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিমান ঘাঁটি আছে৷

কিরঘিজস্তানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাজধানী বিশকেক এবং অন্যান্য শহরে সংঘাতে এই পর্যন্ত ৭৫ জন নিহত এবং সহস্রাধিক মানুষ আহত হয়েছে৷ মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষ বুধবার মারাত্মক আকার ধারণ করে৷ এদিন শুধু রাজধানী বিশকেকেই প্রাণ হারায় ১৭ জন৷ শুধু রাজধানী বিশকেক নয়, কিরঘিজস্তানের তালাস সহ আরো কয়েকটি শহরেও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরে৷ সেইসব শহরেও প্রাণহানি ঘটেছে৷ পরে রাজধানী বিশকেকে শুরু হয় লুটপাট৷ বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট কুরমানবেক বাকিয়েভের কার্যালয়ে লুটপাট হয়েছে বেশি৷ বিশকেকের রাস্তাঘাটেও লুটপাট শুরু হয়৷ এদিকে কিরঘিজস্তানের স্বঘোষিত অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের প্রধান শেরনিয়াজভ বৃহস্পতিবার রাজধানীতে লুটেরাদের দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশ দিয়েছেন নিরাপত্তা বাহিনীকে৷ তিনি টেলিফোনে সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, বিশকেকে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতেই আমি এই নির্দেশ অনুমোদন করেছি৷

তবে বৃহস্পতিবার বিশকেক ছিল অপেক্ষাকৃত শান্ত৷ সরকারি সদরদপ্তরগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা গেছে বিরোধীদলকে৷

বিশকেকের অধিবাসী ৫৫ বছরের কারিবেক৷ তাঁর ভাষায়, বাকিয়েভের দুর্নীতিপরায়নণ সরকার গোটা জাতিকেই ডুবিয়েছে৷ এই কারণেই পুরো জাতি তার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে৷ এটা সত্যিকারের এক গণবিপ্লব৷

প্রতিবেদক: ফাহমিদা সুলতানা

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারুক