1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিশ্বকাপের কাছে ক’গোলে হারল জি-এইট, জি-টোয়েন্টি?

২৮ জুন ২০১০

জোহানেসবার্গ থেকে টরোন্টো হাজার হাজার কিলোমিটার দূর৷ জি-এইট, জি-টোয়েন্টি’তে খরচও যেমন হয়েছে, রাজনীতির বড় বড় খেলোয়াড়, পুলিশ-নিরাপত্তা কিছুরই অভাব ছিল না৷ তবে গোল বড় কম হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/O4gb
ফুটবল নিয়েও আলোচনায় ছিলেন বিশ্ব নেতারাছবি: AP

বিশ্বের আটটি প্রথম সারির শিল্পোন্নত দেশ - যেন কোয়ার্টার ফাইনাল! বিশটিকে ধরলে এক ধরণের গ্রুপ পর্যায়ের কথা ভাবা যেতে পারে৷ কিন্তু ঐ যে বললাম, ড্রিবলিং, পাসিং, এমনকি ছোটখাটো ফাউল, মায় হলুদ কার্ডের ব্যবস্থা থাকলেও, এই সব বড় বড় শীর্ষবৈঠকে যেমন গোল কম হয়, তেমন খেলাটাও যেন কেমন ক্লান্তিকর হয়৷ তায় আবার যদি একই সময়ে সত্যিকারের বিশ্বকাপ চালু থাকে৷

ধরা যাক জার্মানি আর ইংল্যান্ডের খেলা৷ জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল এবং ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের ঠিক সেই সময়েই দেখা গেল এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠক৷ আশ্চর্য, বৈঠকও ঠিক হাফটাইম হবার আগেই শেষ হয়ে গেল৷ তখন দু'জনে বসে একটু বিশ্বকাপ দেখলেন৷ এটাকে ফুটবলের রাজনীতি কিংবা কূটনীতি বলা চলে৷ বলতে কি দু'দেশের কূটনীতিকরাই ভেবেচিন্তে এ'সব পন্থা উদ্ভাবন করেছেন৷ তাঁরা তো জানেন মন্ত্রী-সান্ত্রীরা কি চান৷ সেটাই তো কূটনীতিকদের কাজ৷

শুধু ম্যার্কেল কি ক্যামেরনই নন৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ঘানা'র খেলা চলার সময়ের একটি দৃশ্য৷ হোয়াইট হাউসের চীফ অফ স্টাফ রাম এমানুয়েল ঢুকছেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা'র হোটেলঘরে৷ ‘‘(খেলার) আর ক'মিনিট বাকি?'' প্রশ্ন করলেন এমানুয়েল৷ প্রেসিডেন্টের উত্তর এলো: ‘‘পাঁচ মিনিট৷ আর সহ্য করা যাচ্ছে না৷'' অথচ ওবামা কিন্তু বাসকেটবল ফ্যান৷

তা'ও তো ওবামা প্রোটোকল রেখে চলেছেন৷ খেলা দেখার পর ম্যার্কেলকে বলতে শোনা গেছে: ‘‘আশা করি অন্য নেতারা আমাদের দ্বিতীয়ার্ধে অনুপস্থিত থাকার জন্য ক্ষমা করবেন৷'' কেননা এ'ভাবে ফুটবল দেখার জন্য উধাও হওয়াটা শীর্ষবৈঠকের প্রোটোকলে নেই৷ ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা ও' বখেড়াতেই যাননি: ব্রাজিল আর পোর্তুগালের গ্রুপ পর্যায়ের খেলা হবার আগে তিনি টরোন্টোয় আসতেই অস্বীকার করেছেন৷ মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ফেলিপে ক্যালডেরন বলেছেন, শনিবার সন্ধ্যায় হয় তিনি জি-টোয়েন্টি ছেড়ে আর্জেন্টিনা এবং মেক্সিকোর খেলা দেখবেন - নয়তো তাঁকে নিয়মিতভাবে এসএমএস'এ খেলার অবস্থা জানাতে হবে৷ ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট হোসে মানুয়েল বারোসো'ও পোর্তুগালের লোক৷ তিনিও বিরতিতে গিয়ে টেলিভিশনে স্বদেশের দলকে সমর্থন জানিয়ে এসেছেন৷

তবে ফুটবল, অন্তত বিশ্বকাপ ফুটবল, সম্প্রীতিও আনতে জানে৷ তার প্রমাণ: ওবামা এবং ঘানা'র প্রেসিডেন্ট জন আট্টা মিলস খেলার পর জার্সি বিনিময়ের চুক্তি করেন৷ ইতিপূর্বে ওবামা এবং ক্যামেরন তাঁদের দুই দেশের ড্র উপলক্ষে বিয়ারের বোতল আদানপ্রদান করেন৷ এমনকি দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি মিয়ুং বাক বিশ্বযুদ্ধের আমলের জাপানি জবরদখল বিস্মৃত হয়ে মঙ্গলবার প্যারাগুয়ে'র বিরুদ্ধে ম্যাচে জাপানকে সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি দেন৷

তাই বলে জাতিসংঘের কাজ নেই, ফিফা'কে দিয়েই চলবে, এমন ভাবার কোনো কারণ নেই৷

প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী

সম্পাদনা: আরাফাতুল ইসলাম