1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিশ্বকাপে কোচের ভূমিকায় মারাদোনা

২ জুন ২০১০

লোকে বলে শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ ফুটবল খেলোয়াড়, যদিও ব্ল্যাক পার্ল পেলে’রও সে দাবি আছে৷ কিন্তু মারাদোনা এবার দক্ষিণ আফ্রিকায় কোচের ভূমিকায়৷ সে’ও এক চমক৷

https://p.dw.com/p/Nfmf
ছবি: AP

চমক ছাড়া মারাদোনা'কে কি ভাবা যায়? মনে করে দেখুন ১৯৮৬ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ড বনাম আর্জেন্টিনা খেলাটির কথা৷ আর্জেন্টিনা জেতে ২-১ গোলে, এবং দুটি গোলই করেন মারাদোনা৷ এবং দু'টি গোলই উঠে যায় ফুটবলের ইতিহাসের পাতায়৷ প্রথম গোলটি মারাদোনার সেই সুবিখ্যাত কি কুখ্যাত ‘‘ঈশ্বরের হাত'', অর্থাৎ হ্যান্ডবল করে দেওয়া গোল৷ মারাদোনা দ্বিতীয় গোলটি করেন ৬০ মিটার দৌড়ে ছ'জন ইংলিশ প্লেয়ারকে ড্রিবল করে পাশ কাটিয়ে - লোকে যাকে বলে ‘‘শতাব্দীর সেরা গোল''৷

মারাদোনার অপর দিকটি হল কেলেঙ্কারির পর কেলেঙ্কারি৷ ১৯৯১-তে ইটালিতে একটি কোকেইন ডোপিং টেস্টে ব্যর্থ হয়ে ১৫ মাসের জন্য সাসপেন্ড হন৷ ১৯৯৪-এর বিশ্বকাপে তাঁকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয় এফেড্রিন সেবনের জন্য৷ ১৯৯৭-এ খেলা থেকে অবসর নেওয়ার পর থেকেছে ওজন বাড়ার, কোকেইন সেবনের, এমনকি হার্টের প্রবলেম৷ কিন্তু যে মানুষটির নামে আর্জেন্টিনায় আলাদা মুদ্রা থেকে আলাদা গির্জা আছে, তাকে এতো সহজে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া যায় না৷ মারাদোনা সুস্থ হয়ে ফেরেন জনপ্রিয় টিভি হোস্ট হিসেবে কাজ করতে৷ আরো বড় কথা, বাসিল'এর উত্তরসুরী হিসেবে তিনি জাতীয় একাদশের দায়িত্ব গ্রহণ করেন৷

Flash-Galerie Argentinien Maradona Hand Gottes
মারাদোনার সেই সুবিখ্যাত কি কুখ্যাত ‘‘ঈশ্বরের হাত'', অর্থাৎ হ্যান্ডবল করে দেওয়া গোলছবি: picture-alliance/Sven Simon

মনে রাখা দরকার, মারাদোনার কিন্তু কোচ হিসেবে কোনো অভিজ্ঞতাই ছিল না৷ হয়তো সেই কারণেই আর্জেন্টিনা কেঁদে-ককিয়ে শেষ মুহূর্তে প্লে-অফ ছাড়াই কোয়ালিফাই করতে সমর্থ হয়৷ মারাদোনা ততোদিনে ৭৭ জন প্লেয়ারকে পরখ করে বসে আছে৷ আবার সেই বিশ্বকাপ দলই যখন সদ্য ক্যানাডাকে একটি ওয়ার্ম-আপ ম্যাচে ৫-০ গোলে হারিয়ে বসে রইল, তখনও কিন্তু মারাদোনাকে উচ্ছ্বসিত হতে দেখা যায়নি৷ ‘‘এই জার্সি পরে ফ্রেন্ডলি বলে কিছু নেই,'' দলের খেলোয়াড়দের বুঝিয়ে দিয়েছেন মারাদোনা৷

কোচ হবার পর পরই হুয়ান রিকেল্মে'র সঙ্গে তুমুল ঝগড়া, বহুদিন ধরে ওয়াল্টার স্যামুয়েল এবং গঞ্জালো হিগুয়েন'এর ক্যালিবারের খেলোয়াড়দের উপেক্ষা করা, ভুল তো কম করেননি মারাদোনা৷ সবচেয়ে বড় কথা, তিনি এখনও কোনো ট্যাক্টিকাল সিস্টেম খুঁজে পাননি, যা'তে লিওনেল মেসি'র কাছ থেকে বার্সেলোনার পর্যায়ের পারফর্মেন্স পাওয়া যায়৷

মজার কথা, ১৯৮৬-তেও পরিস্থিতি এই ছিল: মারাদোনা তখন মেসি'র ভূমিকায়৷ কোচ ছিলেন জনতার দু'চক্ষের বিষ কার্লোস বিলার্দো, যাঁর বাছাই নীতিও ছিল উদ্ভট৷ ঠিক সেই বিলার্দো'কেই এবার সহকারী করে এনেছেন মারাদোনা৷ এখন বাকি শুধু লিওনেল মেসি'র মারাদোনার মতো ঝলসে ওঠার৷ তারপর আর্জেন্টিনা যদি সত্যিই মুকুট জয় করে বসে থাকে, তা'হলে আশ্চর্য হবার কিছু থাকবে না৷

প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ