1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিস্ফোরণের সময় স্টেশনের আলো বন্ধ ছিল

১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১

বিস্ফোরণে পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী জাকির হোসেনের হাতের একটি আঙুল এবং বাঁ পা ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুলিশ তদন্তে নেমে কিছু সূত্র পেয়েছে। 

https://p.dw.com/p/3pa7r
রেল স্টেশন
প্রতীকী চিত্রছবি: DW/P. Samanta

এসএসকেএম হাসপাতালে এখনো মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই চালাচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী জাকির হোসেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অস্ত্রপচারের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। জাকিরের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলেও তাঁর হাতে একটি আঙুল বাঁ পা ভয়াবহ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চিকিৎসকদের বোর্ড পরবর্তী পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেবে।

এ দিকে নিমতিতা স্টেশনে বোমা বিস্ফোরণের বিষয়টি নিয়ে সিআইডির পাশাপাশি কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্সও তদন্ত করছে। বৃহস্পতিবারই সেখানে সিআইডি, স্পেশাল টাস্ক ফোর্স এবং ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের দল গিয়েছিল তদন্ত করতে। নমুনা সংগ্রহের পাশাপাশি স্থানীয় মানুষের সঙ্গেও কথা বলেন তাঁরা। পুলিশ সূত্র ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছে, অতি শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরণ ঘটনা হয়েছিল স্টেশনে। সাধারণ দুষ্কৃতীদের পক্ষে ওই ধরনের বোমা তৈরি করা সম্ভব নয়। যারা ওই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে, তাদের রীতিমতো বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ রয়েছে। শুধু তাই নয়, বিস্ফোরণ যাতে সফল হয়, তার জন্য আগে থেকেই নানা ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বস্তুত, বৃহস্পতিবারই মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেছিলেন, রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে বোমা বিস্ফোরণ করানো হয়েছিল। জাকিরের অনুগামীরাও সেই অভিযোগ করেছেন।

পুলিশ মূলত তিনটি অনুমান নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। শাসকদলের একাংশের বক্তব্য, বিরোধী রাজনীতি এই বিস্ফোরণের সঙ্গে যুক্ত। তৃণমূলের আঙুল বিজেপির দিকে। সত্যিই বিজেপি এর সঙ্গে যুক্ত কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একই সঙ্গে দেখা হচ্ছে এর পিছনে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আছে কি না। মুর্শিদাবাদ তৃণমূলের একটি অংশ ইতিমধ্যেই সেই অভিযোগ করেছে। তাদের বক্তব্য, দলেরই বিরোধীপক্ষ এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। পুলিশ জানতে পেরেছে, সম্প্রতি গরুপাচার এবং পুরসভা নিয়ে জাকিরের সঙ্গে জেলা দলের একাংশের রীতিমতো বচসা হয়েছিল। ফলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বিষয়টি সম্পূর্ণ উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এছাড়াও পুলিশ দেখছে, গরুপাচারকারীদের সঙ্গে এই বিস্ফোরণের যোগ আছে কি না। কারণ, গরুপাচার নিয়ে জাকির গত বেশ কিছুদিন ধরে শুধু সরবই ছিলেন না, মন্ত্রী হিসেবে বেশ কিছু ব্যবস্থাও গ্রহণ করার কথা বলেছিলেন।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন, বিজেপি বার বার জাকিরকে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার টোপ দিচ্ছিল। বস্তুত, তৃণমূলত্যাগী নেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে জাকিরের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ। ফলে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য নেহাত অমূলক নয়। তবে এও ঠিক, এ বিষয়ে প্রকাশ্যে জাকির কখনো কোনো মন্তব্য করেননি।

শুক্রবার জাকিরকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। জাকিরের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন তিনি।

ডয়চে ভেলেকে কলকাতা পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, কয়েকটি বিষয় পুলিশের নজরে এসেছে। দুই নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে জাকিরের কলকাতাগামী তিস্তাতোর্সা এক্সপ্রেস ধরার কথা ছিল। সাধারণত, নিমতিতা স্টেশনে দুই নম্বরে প্ল্যাটফর্মে আলো কম থাকে। কিন্তু ঘটনার দিন সেখানে একটিও আলো জ্বলছিল না। আরপিএফের উপস্থিতিতে কেন প্ল্যাটফর্মের সমস্ত আলো বন্ধ ছিল? কারা সেই আলো বন্ধ করল, তা নিয়ে সন্দিহান পুলিশ। বোমার ব্যাগও ঘটনার বেশ খানিকক্ষণ আগে এলাকায় রেখে যাওয়া হয়েছিল। জাকির যে ওই জায়গা দিয়েই স্টেশনে যাবেন তা আততায়ীদের জানা ছিল। এটাও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী বৃহস্পতিবার বলেছেন, পুলিশ চাইলে দশ মিনিটের মধ্যে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করতে পারে। অধীর প্রথম থেকেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন। রাজ্য বিজেপিও বৃহস্পতিবার ফের অভিযোগ করেছে। তাদের বক্তব্য, যে রাজ্যে স্বয়ং মন্ত্রীই নিরাপদ নন, সেখানে আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি কতটা খারাপ, তা স্পষ্ট।

এসজি/জিএইচ (পিটিআই)