1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিস্ফোরণে আহত পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী

১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১

পশ্চিমবঙ্গে রেলস্টেশনে বিস্ফোরণ। গুরুতর আহত শ্রম দফতরের প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। 

https://p.dw.com/p/3pWEe
রেল স্টেশন
প্রতীকী ছবিছবি: Payel Samanta/DW

আবার বোমা বিস্ফোরণ পশ্চিমবঙ্গে। এবার আহত হলেন রাজ্যের শ্রম দফতরের প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। বুধবার রাতে এই ঘটনা ঘটেছে মুর্শিদাবাদের নিমতিতা স্টেশনে। গুরুতর আহত অবস্থায় মন্ত্রীকে প্রথমে জেলার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতে সেখান থেকে তাঁকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। কারা এই বিস্ফোরণ ঘটালো, তা এখনো স্পষ্ট নয়। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে সিআইডি।

বুধবার রাতে নিমতিতা থেকে তিস্তাতোর্সা ট্রেন ধরে কলকাতায় আসায় কথা ছিল মন্ত্রী জাকির হোসেনের। মুর্শিদাবাদের গুরুত্বপূর্ণ তৃণমূল নেতা তিনি। মন্ত্রীর অনুগামীরা জানিয়েছেন, রাত নয়টা নাগাদ স্টেশনে পৌঁছান মন্ত্রী। দুই নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিকে যাওয়ার সময় স্টেশনে একটি ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখা যায়। অনুগামীরা সেই ব্যাগ সরাতে গেলে বিস্ফোরণ হয়। ঘটনায় গুরুতর আহত হন মন্ত্রী। তাঁর হাতে এবং পায়ে বোমার স্প্লিন্টার ঢুকে যায়। প্রথমে তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

জাকির হোসেন মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা। এতদিন তিনি শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিলেন। সম্প্রতি শুভেন্দু বিজেপি যোগ দিয়েছেন। তারপরেও জাকিরের সঙ্গে শুভেন্দুর যোগাযোগ ছিল কি না, তা নিয়ে জল্পনা আছে। তবে প্রকাশ্যে দল ছাড়ার কথা বলেননি জাকির।

ডয়চে ভেলেকে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, মুর্শিদাবাদের তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে সম্প্রতি কয়েকটি বিষয় নিয়ে মতান্তর হয়েছিল জাকিরের। গরু পাচার এবং অবৈধ কাজকর্মের বিষয়ে জাকির প্রতিবাদ করেছিলেন। তারপরেই এই হামলার ঘটনা ঘটল কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। জাকিরের অনুগামীরা সরাসরি কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ করেননি।

এসএসকেএম হাসপাতালে জাকিরের চিকিৎসার বিষয়টি দেখছেন কলকাতার মেয়র তথা তৃণমূলের নেতা ফিরহাদ হাকিম। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে বৃহস্পতিবার চিকিৎসকদের একটি বোর্ড তৈরি করা হবে। সেই বোর্ডই ঠিক করবে জাকিরের অস্ত্রপচার হবে কি না। তবে বৃহস্পতিবার সকালে জাকিরের চিকিৎসকরা ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, মন্ত্রীর অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল।

এদিকে, বৃহস্পতিবার সকালে সিআইডি(রাজ্য গোয়েন্দা বিভাগ) নিমতিতা স্টেশনে তদন্ত করতে যায়। সকালেও ঘটনাস্থলে ছড়িয়ে ছিল বোমার স্প্লিন্টার। ঘটনাস্থলে গিয়েছিল ফরেন্সিক দলও। তারাও এলাকা থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে। কারা এই বিস্ফোরণ ঘটালো, বিস্ফোরণের লক্ষ্য আদৌ মন্ত্রী ছিলেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

তবে ঘটনাটি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, সুপরিকল্পিত ভাবে জাকিরকে হত্যার চেষ্টা হয়েছিল। রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। কেন্দ্রকে বিষয়টি অনুসন্ধান করতে হবে। বস্তুত তৃণমূলের অভিযোগ, রেল কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে। রেলের নিরাপত্তার দায়িত্বেও থাকে আরপিএফ (কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী)। কী ভাবে তাদের নজর এড়িয়ে প্ল্যাটফর্মে এত বড় বিস্ফোরণ হলো, কেন্দ্রকে তার জবাব দিতে হবে। কংগ্রেস নেতা এবং সাংসদ অধীর চৌধুরী বলেছেন, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় গিয়ে পৌঁছেছে। এর দায় রাজ্য সরকারকে নিতে হবে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও বলেছেন, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, স্বয়ং মন্ত্রীও বিস্ফোরণের শিকার হন।

এসজি/জিএইচ (পিটিআই)