1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিয়ের পরে নিজের নামও একটি নারী অধিকার

১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১১

নাম নিয়ে সমস্যা৷ যেনতেন সমস্যা নয়, একেবারে গুরুতর সমস্যা, আর তাও কোনো অখ্যাত দেশে নয়, উন্নত দেশ জাপানে৷ একদল জাপানি নারী দেশের ১৯ শতকের একটি আইনের বিরুদ্ধে সোমবারে মামলা ঠুকে দিয়েছেন৷

https://p.dw.com/p/R0z0
নামের অধিকারের দাবিতে সংঘবদ্ধ জাপানি নারীরাছবি: AP

নিজের নাম বজায় রাখার জন্যে মামলা! হ্যাঁ, ঠিক তাই৷ জাপানের নারীরা তাদের কুমারী থাকাকালীন নামই বিয়ের পরে বজায় রাখার জন্যে মামলা করেছেন৷ কারণ দেশটিতে এতোদিন ধরে যে নিয়ম চলে আসছে, তা হচ্ছে, বিয়ের পরে দম্পতিকে স্বামী কিংবা স্ত্রী একজনের পদবি নিতে হবে৷ কিন্তু বাস্তবে সেটা সামাজিক চাপে স্বভাবতই স্বামীর নাম হয়ে দাঁড়ায়৷ অর্থাৎ জাপানি নারীদের তাদের বাবার বাড়ির পদবি ছেড়ে দিতে হয়৷ এখন সেই নিয়মের বিরুদ্ধেই মামলা করা হয়েছে৷ এই মামলাটিকে নারী অধিকার সম্পর্কিত একটি মামলা হিসেবেই দেখা হচ্ছে৷ পুরুষশাসিত সমাজের গতানুগতিক ধ্যান-ধারণা থেকে বের হয়ে আসতে পারছে না জাপান৷ এখনও জাপানের রাজনীতিতে নারীর অবস্থান নেই বললেই চলে এবং নারী-পুরুষ যৌথভাবে কোনো কিছু পরিচালনার ক্ষেত্রেও নারীর জায়গা করে নেওয়াটা খুব একটা সহজ নয়৷

জাপানের সিভিল কোড দম্পতির পদবি এক হবার ওপরে জোর দিয়ে থাকে, কিন্তু সেখানে বলে দেওয়া হয়নি যে স্বামীর নামটিই নিতে হবে৷ কিন্তু শেষ পর্যন্ত গিয়ে দাঁড়ায় যে বিয়ের পরে নারীকেই তার নামটা বদলাতে হয়৷ তবে স্ত্রী যদি কোনো অভিজাত পরিবার থেকে আসে তাহলে সেক্ষেত্রে স্বামী স্ত্রীর নামটি তার পদবিতে জুড়ে দেন৷ এই নাগরিক আইনের কথা তুলে চারজন নারী ও তাদের একজনের স্বামী ১৮৯৮ সালের ঐ আইনে দম্পতির সমঅধিকার নিশ্চিত করা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন৷

এদিকে এই আইনের কারণে যে মানসিক ক্ষতি হয়েছে, সেজন্য টোকিও, কিয়োটো ও টয়ামা থেকে আগত মামলাকারিরা প্রায় ছয় মিলিয়ন ইয়েন বা ৭০ হাজার ইউরো ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন৷ জাপানে এ’ধরণের মামলায় ক্ষতিপূরণ চাওয়ার এটি সর্বোচ্চ অঙ্ক৷ প্রায় অর্ধ শতকের রক্ষণশীল শাসনের পরে ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বরে দেশটিতে কেন্দ্রীয় বাম ডেমোক্র্যাটিক পার্টি অফ জাপান, ডিপিজে ক্ষমতায় আসে৷ আর তার পর থেকেই এই আইনটি পরিবর্তনের জন্যে চাপ দেওয়া হচ্ছে, এবং এটি পরিবর্তনের একটি আশাও রয়েছে৷ তবে সেই আশার গুড়ে বালি দিচ্ছে পিপলস নিউ পার্টি নামে ডিপিজে-র কোয়ালিশন অংশীদার৷ এই দলটিতে জাপানের বহু রক্ষণশীল রাজনীতিবিদ রয়েছেন৷ তাছাড়া ইস্যুটি নিয়ে জনসমর্থনও দুভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে৷ জরিপে দেখা গেছে, শতকরা ৩৭ ভাগ মানুষ ঐ আইনের পরিবর্তন চায় অন্যদিকে শতকরা ৩৫ ভাগ মানুষ রয়েছেন এর বিপক্ষে৷

প্রতিবেদন: ফাহমিদা সুলতানা

সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী