1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পোশাক শ্রমিকদের বেতন-বোনাস

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪

ঈদ উল আজহার আগে পোশাক শ্রমিকদের বেতন-ভাতা ও বোনাস পরিশোধের নির্দেশ দেয়া হলেও, আশ্বস্ত হওয়া যাচ্ছে না৷ কারণ তুবা-গ্রুপসহ বেশ কিছু পোশাক কারখানার শ্রমিকরা এখনও ঈদ উল ফিতরের বোনাস পাননি, রয়েছে বকেয়া বেতনও৷

https://p.dw.com/p/1DH1h
Näherin Textilverarbeiterin Bangladesch billige Kleidung
ছবি: Reuters

ঈদ উল আজহা ও দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে দেশের সব পোশাক কারখানায় ২৮শে সেপ্টেম্বরের মধ্যে উত্‍সব ভাতা (বোনাস) এবং ২রা অক্টোবরের মধ্যে চলতি মাসের বেতন পরিশোধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ রবিবার সচিবালয়ে গার্মেন্ট মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে সরকারের ‘ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কমিটি'-র সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷

শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু জানিয়েছেন, ‘‘ঈদ ও পূজা উপলক্ষ্যে শ্রমিকরা যাতে সঠিক সময়ে বেতন-ভাতা পান, সে বিষয়ে বৈঠকে সবাই একমত হয়েছেন৷ ব্যাংকগুলোর প্রতি অনুরোধ, তারা যেন মালিকদের এ বিষয়ে সহায়তা করে৷''

মন্ত্রী বলেন, ‘‘শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিবহনের ক্ষেত্রে পুলিশ সহযোগিতা করবে, পুলিশের সহযোগিতা নিতে আমরা মালিকদের অনুরোধ করেছি৷ শ্রমিকদের বেতন-ভাতা যাতে কোনোভাবে মিসিং না হয়৷''

তিনি জানান, শ্রমিকরা যাতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বেতন-ভাতা পান – সেই বিষয়টি পর্যবেক্ষণে পোশাক শিল্প এলাকায় চারটি মনিটরিং সেল খোলা হয়েছে৷ সেল থেকে মাঠ পর্যায়ে কর্মরত পরিদর্শন টিমের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে৷ এছাড়া সংশ্লিষ্ট এলাকায় শিল্প পুলিশ, থানা এবং বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএ-এর সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে৷

তবে সরকারের এই উদ্যোগে পুরোপুরি আশ্বস্ত হতে পারছে না পোশাক শ্রমিকরা৷ কারণ বেশ কিছু পোশাক কারখানায় এখনো ঈদ উল ফিতরের বোনাসই দেয়া হয়নি৷ আর বেতনও বাকি পড়েছে৷ মিরপুরের আকিক এ্যাপরেলস সেরকমই একটি পোশাক কারখানা৷ কারখানার শ্রমিকরা গত আগস্ট এবং চলতি মাসের বেতন ও বোনাসের দাবিতে দু'দিন পোশাক কারখানার সামনে অবস্থান নেয়৷

কারখানার শ্রমিকরা জানান, গত মাসের মজুরি দিতে মালিকপক্ষ ১০, ১২ ও ১৮ই সেপ্টেম্বর সময় দেয়৷ তবে শেষ পর্যন্ত মজুরি না দিলে শ্রমিকরা আন্দোলনে নামেন৷ এর পরিপ্রেক্ষিতে গত শনিবার কর্তৃপক্ষ কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেন৷ এরপর শ্রমিকরা শনিবার দুপুরের পর পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ভবনের সামনে অবস্থান নেন৷ পরে রাতে বিজিএমইএ-র উদ্যোগে শ্রমিক ও মালিকপক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়৷

সমঝোতা অনুযায়ী, আকিক এ্যাপরেলস-এর শ্রমিকদের ২৫শে সেপ্টেম্বর গত মাসের মজুরি দেওয়া হবে৷ এছাড়া ৩রা অক্টোবর চলতি মাসের মজুরির ৫০ শতাংশ ও ঈদ বোনাস পরিশোধ করবে মালিকপক্ষ৷ তবে শ্রমিকরা মনে করেন, শেষ পর্যন্ত মালিক পক্ষ এই চুক্তি মানেন কিনা – তা বলা যায় না৷ কারণ বাকি ৫০ শতাংশ মজুরি কবে দেয়া হবে তা নিশ্চিত করে বলেনি মালিকপক্ষ৷

অন্যদিকে, তুবা গ্রুপের শ্রমিকরা এখানো ঈদ উল ফিতরের বোনাস পাননি৷ অনশনের মুখে তাঁদের বকেয়া বেতন দিয়ে মালিকপক্ষ কারাখানা বন্ধ করে দিয়েছে৷ ভাতা এবং বোনাসও দেয়নি৷

এ বিষয়ে শ্রমপ্রতিমন্ত্রীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘অতিরিক্ত দায়িত্ব নিয়ে এ বিষয়ে আমাদের চেষ্টা চলমান আছে৷ আশা করি, তুবার শ্রমিকরা ঈদের আগে তাঁদের পাওনা পাবেন৷ আলোচনা করছি কিছু একটা করতে পারব৷''

বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক সিরজুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে জানান, ঈদ উল ফিতরের সময় শতকরা ২০ ভাগ পোশাক কারখানা শ্রমিকদের বেতন-ভাতা এবং বোনাস দেয়নি৷ আর সেসব কারখানার বড় একটি অংশ এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে৷''

তিনি আশঙ্কা করেন, ‘‘এবারও বেশ কিছু কারখানা বেতন-ভাতা দিতে পারবে না৷ তাই সরকারের উচিত হবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শুরু করা৷''

সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘‘তুবা গ্রুপের শ্রমিকরা এখানো ঈদ উল ফিতরের বোনাস এবং ভাতা পাননি, যা দুঃখজনক৷ এই ঈদের আগে তাঁদের বোনাস-ভাতা এবং ক্ষতিপূরণ আদায়ের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি৷''

উল্লেখ্য, চাঁদ দেখার ভিত্তিতে আগামী ৫ থেকে ৭ই অক্টোবর ঈদের সরকারি ছুটি হওয়ার কথা৷ তার আগে ৪ঠা অক্টোবর রয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিজয়া দশমীর ছুটি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য