1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ব্যায়ামের সময় পথের জঞ্জাল কুড়ানো

১৭ জুন ২০২১

ভারতের রাজপথ থেকে জঞ্জাল দূর করতে সরকার-প্রশাসনের উপর নির্ভর না করে একদল মানুষ অভিনব এক উদ্যোগ চালাচ্ছেন৷ জগিংয়ের সঙ্গে সঙ্গে রাস্তা পরিষ্কারের এই প্রয়াসে অনেক মানুষ অংশ নিচ্ছেন৷

https://p.dw.com/p/3v4Nb
Indien: Umweltbelastung und Luftverschmutzung in Neu-Delhi
ছবি: Getty Images/AFP/D. Faget

রিপু দমন বেওলি এক মিশনে বেরিয়েছেন৷ তিনি ভারতের শহরগুলির পথঘাট জঞ্জালমুক্ত করতে চান৷ সে দেশে দিনে প্রায় ২৫ হাজার টন জঞ্জাল ফেলা হয় বলে এই সংকল্প বড় এক চ্যালেঞ্জ৷ তবে বেশ কিছু সময় ধরে রিপু দমন সাহায্য সংগ্রহ করছেন৷ গোটা দেশে তিনি হাজার হাজার সহযোগী খুঁজে পেয়েছেন৷ পাঁচ বছর ধরে ওয়ার্ক-আউট বা ব্যায়াম হিসেবে তাঁরা জঞ্জাল সংগ্রহ করছেন৷

এমন উদ্যোগকে ‘প্লগিং' বলা হয়৷ সুইডিশ ভাষায় ‘প্লকা' অর্থাৎ তুলে নেওয়া এবং ইংরাজি ভাষায় জগিং শব্দদুটির সমন্বয়ে নতুন এই সংজ্ঞা তৈরি হয়েছে৷ গোটা বিশ্বে এই প্রবণতা ছড়িয়ে পড়ছে৷ ভারতে অবশ্য এই উদ্যোগ এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে৷ রিপু বলেন, ‘‘কুড়ানিওয়ালা, পৌরকর্মী, নিকাশি ব্যবস্থার কর্মীদের মতো মানুষ আপনার এলাকায় এসে পথঘাট, পার্ক সাফাই করেন৷ হিন্দীতে আমরা তাদের ‘কাচরাওয়ালা' বলি৷ কারণ আমরাই চারিদিকে নোংরা ফেলি, ছড়াই৷ কিন্তু কীভাবে সেই বার্তা পৌঁছানো সম্ভব? অন্য লোকের ছড়ানো জঞ্জাল পরিষ্কার করাকে বিশ্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয় শখ করে তোলাই আমাদের লক্ষ্য৷''

ময়লা কুড়ানো যখন ব্যায়াম

তিনি সম্ভবত সঠিক পথেই চলেছেন৷ সফল ইকো-ফিটনেস ব্যক্তিত্ব হিসেবে রিপু বেশ পরিচিতি পাচ্ছেন৷ ২০১৯ সাল থেকে তিনি ৭৫টি শহরে ৪০০ প্লগিং দৌড় আয়োজন করেছেন৷ প্রত্যেক দৌড়ের শেষে শহরের কোনো কালেকশন পয়েন্টে জঞ্জাল নিয়ে যাওয়া হয়৷ অংশগ্রহণকারী প্লগার হিসেবে পার্থ বক্সি মনে করেন, ‘‘এটা শুধু এক দিনের অভিযান নয়৷ এই উদ্যোগ টেকসই করে তুলতে হবে৷ কোনো ভালো কাজ করলেই আমাদের শরীর থেকে এন্ডোমরফিন বেরিয়ে আসে৷ আমার মতে, এখন আমার শরীরে এন্ডোমরফিন ভরপুর৷ তাই এখন খুব উৎসাহ-উদ্দীপনা টের পাচ্ছি৷ আমি অবশ্যই নিজের সমাজে সেটা ছড়িয়ে দেবো৷''

পূণে ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের সবচেয়ে নোংরা শহরগুলির অন্যতম৷ আবার ভারতের প্লগিং আন্দোলনের জন্মও সেখানেই হয়েছে৷ বিবেক গুরভ সেই আন্দোলন শুরু করেন৷ শুরু থেকেই তিনি এই গোষ্ঠীর সঙ্গে রয়েছেন৷ দেখতে দেখতে সদস্যসংখ্যা প্রায় ২,৪০০ ছাড়িয়ে গেছে৷ বিবেক বলেন, ‘‘অনেকে বলেছেন যে তারা সরকারকে কর বাবদ অনেক টাকা দেন৷ ফলে জঞ্জাল দূর করার দায়িত্ব আমাদের নয়, সরকারের কাঁধে থাকা উচিত৷ বিষয়টিকে ব্যক্তিগত চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করে মানুষকে বোঝাতে হয়েছে, যে আমরাই এই কাজ করতে পারবো, রূপায়ন করতে পারবো৷ একাই ৩০ দিনের জন্য প্লগিংয়ের চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলাম৷''

পরিবেশগত অ্যাক্টিভিজম বা আন্দোলনের সঙ্গে ফিটনেসের সংযোগ ঘটিয়ে রিপু ও বিবেক নিজেদের অনুগামীদের উদ্বুদ্ধ করতে পেরেছিলেন৷ তবে পুণে প্লগারদের উচ্চাকাঙ্ক্ষার শেষ নেই৷ তারা শুধু জঞ্জাল সংগ্রহ করা নয়, সেই জঞ্জাল কাজে লাগিয়ে নতুন কিছু একটা করতে চান৷ সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা বিবেক গুরভ বলেন, ‘‘আমরা যে জঞ্জাল সংগ্রহ করি, তার একটা বড় অংশ পুনর্ব্যবহার করা যায়৷ পুণে প্লগার্সের সঙ্গে যুক্ত বেসরকারি কোম্পানিগুলির কাছে সেগুলি পাঠিয়ে দেই৷ তাছাড়া নানা আকারের কাচের বোতলও আমরা পাই৷ সেগুলিকে হস্তশিল্প বা সাজানোর সামগ্রিতে রূপান্তরিত করার চেষ্টা করি৷ পুণেতে গ্রামীণ নারীদের সেই লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে৷''

ভারতের মানুষের মধ্যে পরিবেশবাদ সম্পর্কে উৎসাহ বাড়ছে৷ বেশিরভাগ মানুষ শহরে থাকেন এবং বহুকাল ধরেই কিছু একটা করার তাগিদ অনুভব করছেন৷ পথেঘাটে প্লাস্টিক জঞ্জাল জীবনের বাস্তবতা হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ সেই জঞ্জাল নষ্ট হতে কমপক্ষে ৪৫০ বছর সময় লাগবে৷ প্লগাররা মোটেই অতদিন অপেক্ষা করতে প্রস্তুত নন৷

স্ক্রল/টাবেয়া/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য