1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ব্রিটিশ চরিত্র ক্যামেরাবন্দি করছেন আলোকচিত্রী

৩ মে ২০১৯

ব্রেক্সিটকে কেন্দ্র করে ব্রিটেনের মানুষ আত্মপরিচয় ও ইউরোপে নিজেদের স্থান নিয়ে ভাবনাচিন্তা করতে বাধ্য হচ্ছেন৷ এক ফটোগ্রাফার গণভোটের পর মানুষের প্রতিকৃতির ছবি তুলে তাঁদের সেই প্রক্রিয়ায় সহায়তা করছেন৷

https://p.dw.com/p/3Hquy
ছবি: DW

ব্রিটিশ ফটোগ্রাফার মার্টিন পার ‘ওনলি হিউম্যান’ শিরোনামে এক প্রদর্শনীর আয়োজন করেছেন৷ ব্রিটেনের বিখ্যাত ও সাধারণ মানুষ তাঁর ক্যামেরায় ধরা পড়েছেন৷ কখনো তাঁরা ক্যামেরার সামনে পোজ দিচ্ছেন, কখনো বা তাঁদের স্বতঃস্ফূর্ত কোনো মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি হয়েছে৷ প্রদর্শনীতে গত ২০ বছর ধরে তোলা চেনা ও অজেনা ছবি দেখা যাচ্ছে৷ মার্টিন বলেন, ‘‘মনে হয় একই সঙ্গে আমি তাদের ভালবাসি, আবার ঘৃণাও করি৷ কিছু প্রতীক, কিছু বিষয় কখনোই বদলায় না৷ যেমন গ্রামের মেলা বা উৎসব৷ সেগুলি সাধারণত একই রকম থাকে৷ কিছু বিষয় অবশ্যই বদলায়, আর তাতেই আমার মূল আগ্রহ৷ আমি ব্রিটিশ চরিত্রের মূলমন্ত্র ধরে রাখার চেষ্টা করি৷ সেটা যে কী, দয়া করে আমার কাছে তা জানতে চাইবেন না৷

গত শতাব্দীর সত্তরের দশক থেকে মার্টিন পার ছবি তুলে আসছেন৷ ৬৬ বছরের এই মানুষটি ব্রিটেনের অন্যতম সেরা সমসাময়িক আলোকচিত্রী হিসেবে পরিচিত৷ শুরু থেকেই তিনি ব্রিটিশ সমাজের পর্যবেক্ষক হিসেবে সজাগ রয়েছেন৷

বিভিন্ন ধরনের মানুষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হবার ক্ষমতা তাঁর প্রতিভার মধ্যে পড়ে৷ বিষয়টি ব্যাখ্যা করে মার্টিন বলেন, ‘‘অনেক কাজ করতে হয়৷ সঙ্গে কিছুটা সহমর্মিতা থাকতে হবে৷ ছবির বিষয়বস্তুকে জানার চেষ্টা করে ক্রমাগত ছবি তুলে যেতে হবে৷’’

প্রদর্শনীর একটা বড় অংশই ২০১৬ সালে ব্রেক্সিটের প্রশ্নে গণভোটের পরে তোলা ছবি দিয়ে ভরা৷ গণভোটের পর মার্টিন পার সচেতনভাবে সেই সব জায়গায় গেছেন, যেখানে ইইউ ত্যাগের প্রবক্তারা দলভারি৷ বিভিন্ন ভাবে তাঁরা নিজেদের দেশাত্মবোধ তুলে ধরছেন৷ ন্যাশানাল পোর্ট্রেট গ্যালারির অধ্যক্ষ ফিলিপ প্রজার বলেন, ‘‘তিন বছর অথবা তারও বেশি সময় ধরে  রাজনৈতিক নেতা ও ভাষ্যকারদের কথা শোনার পর আমাকে বলতেই হবে, যে বিষয় হিসেবে ব্রেক্সিট অত্যন্ত একঘেয়ে ও ক্লান্তিকর হয়ে পড়েছে৷ প্রায় জাতীয় এক সংকটের সময়ে নিজেদের দিকে তাকানো বরং অনেক বেশি আকর্ষণীয়৷ তবে সেক্ষেত্রে মার্টিনের মতো কিছুটা অনুরাগ ও হালকা মেজাজ থাকতে হবে৷’’

মার্টিন পার-এর ছবির জগত বদ্ধমূল ধারণাগুলিকেই প্রতিষ্ঠা করে৷ অতীতের স্মৃতি আঁকড়ে থাকা ও ঐতিহ্য ধরে রাখা ব্রিটিশ চরিত্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ৷ তাঁর ছবিতে সেই প্রবণতা ধরা পড়ে৷ যেমন ‘আফটারনুন টি’, অর্থাৎ দুপুরের দিকে ইংরেজি কায়দায় তৈরি চা, সঙ্গে কেক ইত্যাদি খাওয়ার সময়৷ এই রীতি লন্ডন শহরে পর্যটকদের কাছে বড় আকর্ষণ৷

ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে বেরিয়ে যাবার সিদ্ধান্ত কি ব্রিটিশ সত্তা বদলে দিয়েছে? মার্টিন পার-এর ছবির বাইরের চিত্র কী? আলোকচিত্রী হিসেবে তিনি বলেন, ‘‘আমার মনে হয়, ব্রেক্সিটের প্রাক্কালে মানুষ তাদের জাতীয় পরিচয় এবং ইউরোপে তাদের অবস্থান সম্পর্কে আরও বেশি ভাবনাচিন্তা করছে৷ ব্রিটিশ হিসেবে আত্মপরিচয় দিতে তারা ব্যাকুল হয়ে কারণ খুঁজছে৷’’

জাতীয় পোর্ট্রেট গ্যালারিতে মার্টিন পার-এর ছবি শোভা পাচ্ছে৷ ‘ওনলি হিউম্যান’ প্রদর্শনী অভিজ্ঞতা হিসেবে সাজানো হয়েছে৷ মাঝে একটি ক্যাফে – ঠিক যেন তাঁর ছবিরই পটভূমি৷ মার্টিন পার বলেন, ‘‘আমি কিছুটা মনোরঞ্জনের উপকরণও দিতে চাইছি৷ মানুষ ছবি উপভোগ করতে আসেন৷ তাঁদের মুখে হাসিও ফুটবে৷ সেইসঙ্গে ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কে তাঁরা ভেবেও দেখবেন৷’’

তাঁর ছবিগুলি জাতি হিসেবে ব্রিটিশদের সামনে আয়নার কাজ করে৷ পোর্ট্রেট ও তার পেছনে মানুষগুলির মধ্যে বৈচিত্র্যের অভাব নেই৷ মার্টিন ক্যামেরার শাটার টেপার সময় একটি বিষয়ের কোনো অভাব থাকে না৷ তা হলো ‘ব্রিটিশ হিউমার’ বা ব্রিটিশদের অনবদ্য রসবোধ৷

গ্যোনা কেটেল্স/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান