1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‌ভারতীয় কমিউনিজমের শতবর্ষ

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
১৮ অক্টোবর ২০১৯

ভারতে প্রথম কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ১৯২০ সালে৷ সেই শতবর্ষ উদযাপনের সূচনায় প্রশ্ন উঠল, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বামপন্থিরা এদেশে আজও কতটা প্রাসঙ্গিক?‌

https://p.dw.com/p/3RUiG
ছবি: DW/S. Bandopadhyay

বিজেপি এবং রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের হিন্দুত্ববাদী রাজনীতিকে একমাত্র রুখে দিতে পারে শোষিত মানুষের জোট৷ আর সেই মানুষরা জোট বাঁধতে পারেন একমাত্র বামপন্থীদের লাল পতাকার নিচে৷ যে বামপন্থিরা এখনও বিশ্বাসী ধর্মনিরপেক্ষতা আর সমানাধিকারে৷ বৃহস্পতিবার কলকাতার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানের সূচনায় এই কথা বললেন সিপিআইএম দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি৷ দলের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য শাখার সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বললেন, ভারতে বামপন্থিরা আজ সবথেকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি৷ কমিউনিস্ট আন্দোলনের শতবর্ষের ইতিহাস থেকেই শিক্ষা নিতে হবে এবং লাল পতাকার লড়াই অব্যাহত রাখতে হবে৷
সীতারাম ইয়েচুরি এদিনের সমাবেশ থেকে হিন্দুত্ববাদী সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সঙ্ঘবদ্ধ লড়াই গড়ে তুলতে গণমঞ্চ গড়ার ডাক দিয়েছেন৷ অর্থাৎ যে সমস্ত রাজনৈতিক দল বিজেপি এবং তাদের নীতির বিরোধী, তারা সবাই একসঙ্গে লড়বে৷ তা হলে কি কংগ্রেস এবং অন্যান্য দক্ষিণপন্থি দলগুলোকেও সঙ্গে নিয়ে এবার এগোতে চায় বামেরা?‌ নির্দিষ্ট কোনও দলের নাম উল্লেখ না করে ইয়েচুরি বলেন, সংকট এখন চারদিক থেকে ঘিরে ধরেছে৷ মানুষের হাতে চাকরি নেই, রুটি-রুজির ঠিক নেই, ওদিকে জাতীয় অর্থনীতির বেহাল অবস্থা৷ তার দিক থেকে নজর ঘোরাতে বিভাজনের রাজনীতি শুরু হয়েছে৷ মানুষকে জাত–ধর্মের ভিত্তিতে আলাদা করে দুর্বল করে দেওয়া হচ্ছে৷ আরও ভয়ঙ্কর বিষয় হল, দেশের ধর্মনিরপেক্ষতা নষ্ট করতে সংবিধান বদলের চেষ্টা হচ্ছে৷ আর এই সবের বিরুদ্ধে যাতে প্রতিবাদ না হতে পারে, তার জন্য মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করা হচ্ছে৷ এই চতুর্মুখী আক্রমণের বিরুদ্ধে সঙ্ঘবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলা ছাড়া দ্বিতীয় কোনও রাস্তা নেই৷

‘বামেদের এখন লোকবল কম’

কিন্তু সারা ভারতে বামপন্থিদের শক্তি ক্ষয় হতে হতে এখন কেবল পশ্চিমবঙ্গ এবং কেরলে কিছুটা টিকে আছে৷ কেরলের পরিস্থিতি তুলনায় ভাল হলেও বাংলায় বামেদের ভোট কমতে কমতে ছয় শতাংশে এসে ঠেকেছে৷ বাম শ্রমিক সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন কোনও আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি৷ কৃষকসভার মিছিলেই এখন একমাত্র লাল পতাকা দেখা যায়৷ এছাড়া ছাত্র–যুব সংগঠনে বামপন্থা এখনও কিছুটা প্রভাব ফেলতে পারে৷ তা হলে বামপন্থীদের এই ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক কতটা সাড়া ফেলতে পারে?‌
আজীবন বামপন্থিদের বিরুদ্ধাচরণ করে এসেছেন কংগ্রেস নেতা অরুণাভ ঘোষ৷ সংবাদ মাধ্যমে, বিশেষত টিভির বিতর্কসভায়, সুবক্তা এবং সুতার্কিক এই আইনজীবী বাম বিরোধিতার জনপ্রিয় মুখ৷ তিনিও এই একই মত পোষণ করলেন৷ যে সব রাজনৈতিক দলই যেহেতু মূলত মানুষের কথা বলে, তারা কখনোই অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যায় না৷ কিন্তু বামেদের এখন লোকবল কম৷ কাজেই তাদের প্রভাবও কম৷ তা সত্ত্বেও, চিরশত্রু বামেদের উত্থান ভারতের চলতি সামাজিক–রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে যে জরুরি, এমন মনোভাবই ফুটে উঠল এই কংগ্রেস নেতার বক্তব্যে৷ অর্থাৎ সায় পেল সীতারাম ইয়েচুরির আহ্বান, যে এখন সময় জোট বাঁধার৷

গত জুন মাসের ছবিঘরটি দেখুন...