1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারতে অধিকাংশ রাজ্য সম্পূর্ণ বা আংশিক অবরুদ্ধ

২৩ মার্চ ২০২০

রোববার ভারতের ১৮টি রাজ্য ও চারটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল সম্পূর্ণ বা আংশিক লকডাউনের কথা ঘোষণা করল। করোনাকে ঠেকাতে দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই, কলকাতা, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদের মতো দেশের সব বড় শহরই অবরুদ্ধ।

https://p.dw.com/p/3ZtKw
I
ছবি: Reuters/A. Dave

করোনারুখতে ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলকে লক ডাউনকরে দেওয়া হল। মোট ১৮টি রাজ্য ও চারটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল পুরোপুরি বা আংশিক অবরুদ্ধ  থাকার কথা ঘোষণা করেছে। এই রাজ্যগুলি হল, দিল্লি, পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র, কেরল, গুজরাট, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, কর্ণাটক, তেলেঙ্গানা, রাজস্থান, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, পাঞ্জাব, ছত্তিশগড়, হিমাচলপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, ওড়িশা ও উত্তরাখণ্ড। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে জম্মু ও কাশ্মীর, লাদাখ, চণ্ডিগড় ও পুদুচেড়ি অবরুদ্ধ থাকছে।

রবিবার ১৪ ঘন্টার জন্য জনতা কার্ফু পালন করেছে পুরো দেশ। রাস্তায় লোক ছিল না। গাড়ি, মোটরসাইকেলও নয়। বাস, ট্রেন, মেট্রো কিছুই চলেনি।প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধ মেনে বেলা পাঁচটার সময় লোকে হাততালি দিতে শুরু করেন। বাজতে থাকে শাঁখ, ঘন্টা, কাঁসর। সারা দিনের স্তব্ধতা ভেঙে যায় সেই শব্দে। চিকিৎসক সহ যারা অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা চালু রাখছেন, তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতেই এই করতালি।

রাতে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ঘোষণা করে দেন, দিল্লি আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত লকডাউন থাকবে। দিল্লির সঙ্গে বাকি রাজ্যের সীমান্ত বন্ধ থাকবে। কোনও সরকারি যানবাহন চলবে না। শুধুমাত্র অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা ছাড়া আর কিছুই চালু থাকবে না।

তবে রবিবার জনতা কার্ফুর সময় যে অবস্থা ছিল, সোমবার সকালের ছবিটা তেমন নয়। রাস্তায় গাড়ি চোখে পড়ছে। মোটর সাইকেলও যাচ্ছে। কোনও কোনও জায়গায় চলছে অটোও। মাঝে মধ্যে কয়েকজন পথচারীকেও দেখা যাচ্ছে। যদিও মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ঘোষণা করেছিলেন, কোনও বেসরকারি গাড়ি, অটো, ট্যাক্সি, মোটর সাইকেল চলতে দেওয়া হবে না। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, সকালের দিকে অন্তত সেই নির্দেশ মানছেন নাবহু দিল্লিবাসী।

মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পরিষেবা চালু রাখার জন্য ও সেই সব ক্ষেত্রের সঙ্গে জড়িত লোকেদের যাতায়াতের জন্য ২৫ শতাংশ সরকারি পরিবহণ চালু থাকবে। দিল্লিতে নিয়মমাফিক মুদি ও ওষুদের দোকান খোলা।  তবে বাজার বন্ধ। খবরের কাগজ বেশির ভাগ জায়গায় আসেনি। কারণ, লোকে ভয়ে কাগজ বন্ধ করে দিয়েছেন। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায় পুলিশ নেমে লোককে ঘরে থাকার কথা বলতে শুরু করেছে। পরিস্থিতি দেকে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন, ''অনেকেই লক ডাউনকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। আপনারা নিজেরা বাঁচুন। অন্যদের বাঁচতে দিন। সব রাজ্য সরকারকে অনুরোধ করছি, কঠোরভাবে লক ডাউন চালু করুন।'' এরপরই কেন্দ্রীয় সরকার সব রাজ্যকে নির্দেশ দিয়ছে, যারা লক ডাউন মানছেন না, তাদের বিরুদ্ধে যেন কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়। 

দিল্লির লোক গুড়গাঁও ও নয়ডায় আইটি ও বিপিও হাবে যেতে পারছেন না। কারণ, সীমান্ত সিল করে দেওয়া হয়েছে। অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা ছাড়া অন্য কোনও গাড়ি ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। দিল্লিতে ট্রেন চলছে না, মেট্রো বন্ধ, বাস চলছে না। স্কুল, কলেজ, শপিং মল, স্পা, জিম, সিনেমা হল সবকিছুই বন্ধ। দিল্লিতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। ফলে কোনও জায়গায় পাঁচজনের বেশি লোকের জমায়েত হতে পারবে না।

এ ভাবেই লক ডাউন করে করোনাকে হারাতে চাইছে সরকার। করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা এখন ৩৯০। গত ২৪ ঘন্টায় অন্ততপক্ষে ৫০ জন আক্রান্ত হয়েছেন।  সব চেয়ে বেশি লোক আক্রান্ত হয়েছেন মহারাষ্ট্রে। সেখানে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৮৯। সবমিলিয়ে সাত জন মারা গিয়েছেন। এই লক ডাউনের ফলে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা কতটা কমছে, তা অদূর ভবিষ্যতে বোঝা যাবে।

জিএইচ/এসজি(পিটিআই, এএনআই)