1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারতে গর্ভ ভাড়া দেবার বাজার এ মুহূর্তে রমরমা

৩ জুন ২০১০

কার্যতঃ লোকচক্ষুর আড়ালে বহু নিঃসন্তান দম্পতি গর্ভ ভাড়া নেবার জন্য ছুটছে ভারতে৷ এক জার্মান দম্পতি তাঁদের ভাড়া করা গর্ভজাত যমজ সন্তান নিয়ে আইনি জটিলতার মুখে পড়লে পুরো বিষয়টির এক বিধিবদ্ধ রুপ দিতে উদ্যোগী হয় ভারত সরকার৷

https://p.dw.com/p/Ngim
গর্ভবতী নারীছবি: BilderBox

ভারতে গর্ভ ভাড়া দেবার ব্যবসা ক্রমশই ফুলেফেঁপে উঠছে৷ এক নিঃসন্তান জার্মান দম্পতি ভারতে এসে এক গুজরাটি মহিলার গর্ভ ভাড়া নিয়েছিলেন প্রায় বছর তিনেক আগে৷ আ্যসিস্টেট রিপ্রোডাক্টিভ টেকনোলজির মাধ্যমে ঐ মহিলা প্রসব করেন যমজ সন্তান৷ সবই ঠিক ছিল, কিন্তু বিরোধ বাঁধে ঐ যমজ সন্তানকে দেশে নিয়ে যাবার সময়৷ জার্মানিতে ভাড়া করা গর্ভজাত সন্তানের বৈধতা নেই৷ তাই ভিসা দিতে অস্বীকার করে জার্মান সরকার৷ ফলে শিশু দুটির নাগরিকত্ব কী হবে তাই নিয়ে বিস্তর জল ঘোলা হয়৷ ভারতীয় আইনেও এই ধরণের সন্তানকে নাগরিকত্ব দেবার কোন সংস্থান নেই৷ মামলা চলে দুবছর৷ প্রথমে গুজরাট হাইকোর্টে পরে সুপ্রীম কোর্টে৷

শেষে সুপ্রীম কোর্টের নির্দ্দেশে কেন্দ্রীয় সরকারের সক্রিয় উদ্যোগে, জার্মান সরকার ব্যতিক্রম হিসেবে ঐ জার্মান দম্পতির যমজ সন্তানের ভিসা মঞ্জুর করেন৷ এক জাপানি দম্পতিরও ভাড়া করা গর্ভজাত সন্তান নিয়ে ভিন্ন রকম সমস্যা হয়েছিল৷ সন্তান জন্মের আগেই দম্পতির বিবাহ বিচ্ছেদ হয়৷ সেক্ষেত্রে নবজাত সন্তানের নাগরিকত্ব তথা ভবিষ্যত কী হবে তাই নিয়ে সৃষ্টি হয় এক মানবিক সমস্যার৷

ভবিষ্যতে এই ধরণের সমস্যা যাতে না হয় তারজন্য সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের স্বার্থ রক্ষা করে উপযুক্ত আইন প্রণয়ন করতে সরকার ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চের ১২ সদস্যের এক বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেন৷ কমিটি ২০০৯ সালের আইন কমিশনের সুপারিশ মাথায় রেখে যে রিপোর্ট দেন, তার ভিত্তিতে সংসদে এক বিল আনা হবে৷

কমিটির সুপারিশগুলির মধ্যে আছে - ১. বিদেশি ও অনাবাসিক ভারতীয়দের এই মর্মে প্রমাণ দাখিল করতে হবে যে, সেদেশে ভাড়া করা গর্ভজাত শিশু বৈধ এবং সেদেশের নাগরিকত্ব পাবার অধিকারি৷ ২. বার্থ সার্টিফিকেট দেবে ভারত সরকার৷ ৩. দম্পতির একজনকে অন্ততঃ শুক্রাণু কিংবা ডিম্বাণুর দাতা হতে হবে৷ ৪. সন্তান ভূমিষ্ঠ হবার আগে তাঁর লিঙ্গ নির্ধারণ করা যাবেনা৷ এবং অবৈধ গর্ভপাত রোধে মেডিক্যাল টার্মিনেশন অফ প্রেগন্যান্সি আইন প্রযোজ্য হবে৷ ৫. দাতা দম্পতি এবং গর্ভ ভাড়া দেওয়া মহিলার পরিচয় গোপনরাখা হবে৷

কিন্তু কথা হচ্ছে, ভারতে গর্ভ ভাড়া নেবার চাহিদা বাড়ছে কেন ? কারণ খরচ কম৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় অর্ধেকের কম খরচে৷ মাত্র কয়েক লাখ টাকায়৷

প্রতিবেদন : অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি

সম্পাদনা : দেবারতি গুহ