1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারতে জিডিপি-তে ধস

১ সেপ্টেম্বর ২০২০

গত ৪০ বছরে যা হয়নি, করোনাকালে সেটাই হলো। এপ্রিল থেকে জুন এই তিন মাসে জিডিপি সংকোচন হলো প্রায় ২৪ শতাংশ।

https://p.dw.com/p/3hpsc
ছবি: picture-alliance/dpa/PTI/Twitter

আশঙ্কা ছিলই। মনমোহন সিং থেকে শুরু করে অনেকেই বলেছিলেন ভারতের জিডিপিতে ধস নামতে পারে। সেই আশঙ্কা সত্যি হলো। এপ্রিল থেকে জুন এই তিন মাসে বা প্রথম আর্থিক কোয়ার্টারে জিডিপি-র সংকোচন হয়েছে ২৩ দশমিক নয় শতাংশ। জাতীয় পরিসংখ্যান দফতর এই হিসাব দিয়েছে। গত ৪০ বছরে জিডিপির এতটা সংকোচন কখনো হয়নি।

এই সব আর্থিক শব্দাবলী অনেক সময়ই সাধারণ মানুষ বুঝতে পারেন না। তাঁদের জন্য প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম সহজ করে বলেছেন, ''এর মানে ২০১৯-২০ আর্থিক বছরের পর থেকে জিডিপি ২০ শতাংশ কমেছে।'' 

কোনো সন্দেহ নেই ভারতের জিডিপি-র বিশাল পতন হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, ভারত আর্থিক মন্দার মধ্যে প্রবেশ করে গেছে। এই পতন কেবল প্রথম তিনমাসেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। এর পরের তিনমাসেও পতনের ধারা বজায় থাকলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

পরিস্থিতি যে ভালো নয় তা সম্প্রতি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের মন্তব্য থেকেই পরিষ্কার হয়ে গেছিল। তিনি জানিয়েছিলেন, কোভিডের পিছনে ঈশ্বরের হাত আছে। তাই এ বার রাজ্যগুলিকে জিএসটি-র ক্ষতিপূরণ দেয়া সম্ভব নয়। রাজ্যগুলি যেন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে টাকা ধার নেয়। এরপর শুধু বিরোধী শাসিত রাজ্য নয়, অনেক বিজেপি শাসিত রাজ্য জানিয়েছিল, কেন্দ্রীয় সরকার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছ থেকে ঋণ নিক এবং রাজ্যকে দিক। তারাই সুদ পরিশোধ করুক। রাজ্যগুলির ঋণ নেয়া মানে তাদেরই সুদ দিতে হবে। সেটা রাজ্য দিতে পারবে না। আর জিএসটি আইন অনুযায়ী কেন্দ্রীয় সরকারকেই পাঁচ বছর ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

অর্থমন্ত্রকের দাবি, দীর্ঘদিন লকডাউনের জেরে আর্থিক কার্যকলাপ বন্ধ ছিল। তাই এই অবস্থা হয়েছে। এখন আনলক পর্ব চলছে। এ বার সব ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে যাবে। জিডিপি-র হারও বাড়বে। মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা বলেছেন, এতে ঘাবড়ানোর কারণ নেই। করোনার জন্য সব দেশের অর্থনীতিতে দ্রুত পতন হয়েছে, আবার এখন দ্রুত উত্থান হচ্ছে।

অর্থমন্ত্রক জানিয়েছে, করোনায় গরিব ও অন্যদের সাহায্য করতে গিয়ে সরকরি খরচ ১৬ শতাংশ বেড়েছে। অন্যদিকে রাজস্ব আদায় অনেকটাই কমে গিয়েছে। এই অবস্থার মধ্যে কোনো অস্বাভাবিকতা নেই। দেশের অর্থনীতি আবার দ্রুত তার নিজের জায়গায় ফিরে যাবে।

কিন্তু কিছু অর্থনীতিবিদ ও বিরোধী নেতাদের মতে, বিষয়টি এত সহজ নয়। তাঁদের মতে, দ্বিতীয় ও তৃতীয় কোয়ার্টারেও জিডিপির ১০ থেকে ১৫ শতাংশ সংকোচন হতে পারে। আর বিরোধী নেতাদের মতে, অর্থনীতির এই হাল একদিনে হয়নি। মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র বলেছেন, ''জিএসটি নেটওয়ার্কের প্রধান নন্দন নীলকার্নি বলেছিলেন, জিএসটি-তে ৭০ হাজার কোটি টাকার জালিয়াতি হয়েছে। তাই ভগবান নয়, জালিয়াতির হাত দেখতে পাওয়া যাচ্ছে।'' চিদম্বরমের মতে, ''মোদী সরকার যে আর্থিক নীতি নিয়ে চলেছে, দেশ তার মূল্য দিচ্ছে।''

জিএইচ/এসজি(পিটিআই, এএনআই)