1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারতে নারী মুক্তির দিগন্তরেখা মহিলা সংরক্ষণ বিল

১১ মার্চ ২০১০

বিশ্ব নারী দিবসকে সামনে রেখে গত মঙ্গলবার সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় পাশ হয় ঐতিহাসিক মহিলা সংরক্ষণ বিল৷ সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে এতে দিতে চাওয়া হয়েছে সংসদে ও রাজ্য বিধানসভায় মহিলাদের জন্য এক-তৃতীয়াংশ আসন

https://p.dw.com/p/MPuC
দিল্লির সংসদে এখন আরো নারী দেখা যাবে কী ?ছবি: AP

তবে বলা হয়েছে, এই রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন তখনই সার্থক হবে, যখন তা বাস্তবে নারী উন্নয়নে প্রতিফলিত হবে৷

গত ১৪ বছর ধরে অনেক সোরগোল, উত্তেজনা ও নাটকীয় কাণ্ডের পর অবশেষে সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় পাশ হয় মহিলাদের জন্য আইনসভায় ৩৩ শতাংশ আসন সংরক্ষণ বিল৷ নেমে আসে স্বস্তি সর্বস্তরে – বিশেষ করে দলমত নির্বিশেষে মহিলা সদস্যদের মধ্যে৷ ঐ বিলকে ঐতিহাসিক আখ্যা দিয়ে সংসদে প্রধানমন্ত্রী ডঃ মনমোহন সিং-এর দৃপ্ত ঘোষণা , মহিলা ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে এ এক বিরাট পদক্ষেপ৷

Indien Parlament Frauenrechte März 2010
সংসদে মহিলা আসন - অনেকদিনের এই চাওয়া শেষ পর্যন্ত পাওয়া গেছেছবি: UNI

তবে সংসদীয় প্রক্রিয়া এখনও সম্পূর্ণ হয়নি৷ বিলটি এখন পাশ হবে সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায়৷ তবে পাটিগণিতের হিসেবে তা পাশ করাতে সরকারের অসুবিধা হবার কথা নয়৷

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত পুরুষ-শাসিত ভারতেও লিঙ্গ বৈষম্য প্রকট৷ নারী নির্যাতন,ধর্ষণ, শোষণ, অবিচার, কন্যাভ্রুণ হত্যা, বাল্য বিবাহ, নারী পাচার নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা৷ শিক্ষা,স্বাস্থ্য ও আর্থিক স্বনির্ভরতার অভাবে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার শক্তি ও সাহস তাঁদের নেই৷ সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, স্বাস্থ্য, অপুষ্টি ও গর্ভপাতের কারণে ভারতে বছরে মারা যায় প্রায় সাড়ে ৪ কোটি মহিলা৷ শিশুমৃত্যুর হার পুত্রসন্তানের চেয়ে বেশি কন্যাসন্তানের৷ ভারতে নারীদের রাজনৈতিক ক্ষমতার ছবিটা আরো করুন৷ এদেশে মহিলাদের জনভিত্তি প্রায় ৫০ শতাংশ হওয়া সত্ত্বেও আইনসভায় নারী প্রতিনিধিত্ব ১০ শতাংশের কম৷ যেখানে প্রতিবেশি বাংলাদেশে এই হার ১৫ শতাংশ, পাকিস্তানে ৩০ শতাংশ এবং নতুন সংবিধান অনুযায়ী আফগানিস্তানে ২৭ শতাংশ৷

Indien Parlament
প্রেসিডেন্ট একজন নারী, প্রধানমন্ত্রী একজন পুরুষ - এভাবেই সম্ভব এগিয়ে যাওয়াছবি: AP

আইনসভায় মহিলারা ৩৩শতাংশ আসন পেলে লিঙ্গ বৈষম্যের ছবিটা কতটা পালটাবে এদেশে, সে প্রসঙ্গে নিখিল ভারত তৃণমূল মহিলা কংগ্রেসের সভানেত্রী ডঃ কাকলি ঘোষ দস্তিদার ডয়েচে ভেলের কাছে বলেন, ‘‘রাতারাতি তা পাল্টে না গেলেও সেই লক্ষ্যে এটাকে যাত্রা শুরু বলা যেতে পারে৷ তার জন্য যে ধাক্কাটা দরকার ছিল তা আমরা দিতে পেরেছি৷ ঘরের মহিলারা তাঁদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হবেন৷ স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন, যেমনটা হয়েছে পঞ্চায়েত স্তরে৷'' পশ্চিমবঙ্গ মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন মালিনী ভট্টাচার্য ডয়েচে ভেলেকে আরও বললেন, ‘‘আসল কথাটা হলো, ভারতের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনায় মহিলাদের যে বৃহত্তর ভূমিকা আছে সেই বার্তাটা নারীসমাজের কাছে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে৷''

প্রতিবেদক: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন