ভারতে পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্প সম্প্রসারণের সতর্কঘন্টা
১৫ মার্চ ২০১১ভারত-মার্কিন অসামরিক পরমাণু সহযোগিতা চুক্তি কার্যকর হবার পর ভারত তার বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণে ১৫০ বিলিয়ন ডলারের পরমাণু কর্মসূচি হাতে নিয়েছে৷ ভূমিকম্প ও সুনামির ফলে জাপানে পরমাণু বিপর্যয়ের পর ভারতে প্রস্তাবিত পরমাণু কেন্দ্রগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা, ব্যয় এবং মানুষের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতার ভিত্তিতে পরমাণু নীতি নতুন করে খতিয়ে দেখার কথা বলেছে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ ও শান্তি কোয়ালিশন সিএনডিপি৷ তাতে পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্প আপাতত বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে৷ মহারাষ্ট্রের জায়তাপুরসহ অন্যান্য প্রস্তাবিত পরমাণু প্রকল্পের ছাড়পত্র যেসব শর্তে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় দিয়েছে, তা অবিলম্বে খারিজ করার দাবি জানানো হয়৷ উল্লেখ্য, ভারতের বিশাল পরমাণু বাজার ধরতে জোর প্রতিযোগিতা চলেছে ফ্রান্স, রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের মধ্যে৷ নতুন ২১টি পরমাণু চুল্লির অর্ডার ইতিমধ্যেই দেয়া হয়েছে৷
জায়তাপুরের প্রস্তাবিত বৃহত্তম পরমাণু প্রকল্পের বিরুদ্ধে স্থানীয় মৎস্যজীবী ও কৃষকরা লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে৷ তাদের আশঙ্কা ঐ প্রকল্পের তেজস্ক্রিয়তার শিকার হবে তাঁরা৷ কারণ পরমাণু বর্জ্য পদার্থ অপসারণ এবং স্টোরেজ ব্যবস্থার না আছে কোন পরিকল্পনা, না আছে জৈব-বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ রত্নগিরি এলাকার পরিবেশ সুরক্ষার কোন কর্মসূচি৷ গত সপ্তাহে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ চহ্বন স্থানীয় মানুষজনের আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, ফরাসি সহযোগিতায় ঐ প্রকল্পের নির্মাণ শুরু হবে ২০১৩ সালে৷ ৬০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি ঐ প্রকল্পের উৎপাদন ক্ষমতা হবে ৯৯০০ মেগাওয়াট পরমাণু বিদ্যুৎ৷
জাপানের ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে ভারতের পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়৷ পরিবেশমন্ত্রী জয়রাম রমেশ জায়তাপুর প্রকল্পের পরিবেশ সমস্যার দিকে নতুন করে নজর দেবার কথা বলেছেন৷ জাতীয় পরমাণু বিদ্যুৎ কর্পোরেশন অতিরিক্ত রক্ষাকবচের সুপারিশ করলে সরকার তা পরিবেশ ছাড়পত্রের অঙ্গ হিসেবে বিবেচনা করবে, বলেন পরিবেশমন্ত্রী৷
এদিকে পরমাণুশক্তি বিরোধী এনজিও গ্রিনপিস বলেছে, জার্মানির দ্বিতীয় বৃহত্তম কমার্স ব্যাঙ্ক জায়তাপুর পরমাণু প্রকল্প থেকে সরে যাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঐ প্রকল্পের ধারাবাহিকতা ও ভাবমূর্তির ঝুঁকির কারণে৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন