1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারতে মাওবাদীদের হাতে এখনও পণবন্দি ওড়িষার জেলা কালেক্টর

১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১১

মাওবাদীদের হাতে পণবন্দি মালকানগিরির জেলা কালেক্টর ও একজন ইঞ্জিনীয়ারের মুক্তির এখনও কোন কিনারা হয়নি৷ যদিও মাওবাদীদের প্রধান শর্ত মেনে ওড়িষা সরকার রাজ্যে মাওবাদীদের বিরুদ্ধে পুলিশি অভিযান বন্ধ রেখেছে৷

https://p.dw.com/p/10Jtq
ফাইল ফটোছবি: picture-alliance/ dpa

ওড়িষার উপজাতি প্রধান মালকানগিরির জেলা কালেক্টর আর.ভি কৃষ্ণা ও ইঞ্জিনিয়ার পবিত্র মাঝি এখনও মাওবাদীদের হাতে পণবন্দি৷কীভাবে তাঁদের মুক্ত করা যায়, তা নিয়ে ভুবনেশ্বরে চলেছে পুলিশ প্রশাসনের জরুরি বৈঠক৷ সংবাদমাধ্যমকে দেয়া এক চিঠিতে ওড়িষা-অন্ধ্রপ্রদেশ সীমান্তের আঞ্চলিক মাওবাদী কমিটি জানিয়েছে মালকানগিরির কালেক্টর গতবছর তাদের সভা করতে না দেয়ার জন্য তাঁকে অপহরণ করা হয়৷ কালেক্টরের মুক্তির জন্য পাঁচটি শর্ত দেয়া হয়৷ এক, মাওবাদীদের বিরুদ্ধে সব রকম অভিযান বন্ধ রাখা৷ দুই, নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ধৃত মাওবাদীদের মুক্তি৷ তিন,নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে তাদের ক্যাডারদের মৃত্যুর বিচারবিভাগীয় তদন্ত৷ চার, উপজাতি এলাকায় খনিজ সম্পদ আহরণে বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে সরকারের চুক্তি রদ৷ পাঁচ, নিহত মাওবাদী পরিবারদের ক্ষতিপূরণ৷ প্রথম শর্তটি মেনে ওড়িষা সরকার ইতিমধ্যেই মাওবাদীদের বিরুদ্দে অভিযান বন্ধ রেখেছে৷

ভারতের সাতটি রাজ্য মাওবাদী কবলিত৷ অভিযোগ, সশস্ত্রবিপ্লবের নামে এরা নাশকতামূলক কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে নির্বিচারে৷ শুধু গত বছরেই মাওবাদীদের হাতে নিহত হয় ১১৮০ জন৷ প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বারংবার বলে আসছেন, মাওবাদী সহিংসতা দেশের নিরাপত্তার সব থেকে বড় হুমকি৷ যেহেতু বলা হচ্ছে, আদিবাসী ও প্রান্তিক জনজাতিদের উন্নয়নের প্রতি সরকারের উদাসীনতা মাওবাদী সংগঠনের জন্ম দিয়েছে, তাই সরকার মাওবাদীদের কড়া হাতে দমন করার পাশাপাশি উপজাতিদের বিকাশের দ্বিমুখী অভিযান চালিয়েছে৷ কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের শিলদা, জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা, ছত্তিশগড়ে দান্তেওয়াড়া ও নারায়ণপুরে মাওবাদী হামলা সরকারকে নাড়িয়ে দেয়৷

কেন মাওবাদীদের কাবু করা যাচ্ছেনা ? নানা মহল থেকে প্রশ্নটা উঠেছে৷ গরিব ও প্রন্তিক মানুষরা মাওবাদীদের শিকার হওয়া সত্ত্বেও একটা বড় অংশ এখনো এদের মদৎ দিয়ে যাচ্ছে৷এটাই কী কারণ ? রাষ্ট্র-শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই চালাবার জন্য টাকাপয়সা ও অন্যান্য রসদ পাচ্ছে তারা কোথা থেকে ? এক নির্ভরযোগ্য হিসেবে বলা হয় মাওবাদীদের বার্ষিক আয় ১৫০০ থেকে ১৬০০ কোটি টাকা৷ এই অর্থ এরা জোর করে আদায় করে বেসরকারি সংস্থা, কোম্পানি, কলকারখানা এবং সর্বোপরি সরকারের উন্নয়ন তহবিল থেকে৷ টাকা আদায় করে ওড়িষা, ঝাড়খন্ডে অবৈধ খনিজ সম্পদের কারবারিদের কাছথেকে৷ টাকা তোলে পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার পাথর খাদান ও কয়লা পাচারকারীদের কাছ থেকে৷ শুধু জঙ্গলমহলে বছরে মাওবাদীরা খরচ করে কমপক্ষে এক কোটি টাকা৷ মাথাপিছু ক্যাডারদের বেতন মাসে দু থেকে তিন হাজার টাকা৷গুলিবারুদ ও অন্যান্য উপকরণ বাবদ ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা তারা ব্যয় করে বলে মনে করেন ওয়াকিবহাল মহল৷

প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক