1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারতে ১৪ দিনে করোনা বৃদ্ধি এক লাখ

৪ জুন ২০২০

লকডাউন শিথিল হতেই ভারতে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। তবে মৃত্যুর হার কমেছে।

https://p.dw.com/p/3dE3K
ছবি: AFP/A. Sanukar

এক লাখে পৌঁছতে সময় লেগেছিল ১১০ দিন। দুই লাখে পৌঁছতে সময় লাগলো ১৪ দিন। ভারতে করোনা সংক্রমণের হার ক্রমশ বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছে রেকর্ড সংখ্যাক মানুষ। প্রায় নয় হাজার জন। তবে একই সঙ্গে আশার কথা, বাড়ছে সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যাও। এখনও পর্যন্ত ভারতে মোট করোনা আক্রান্ত হয়েছেন দুই লাখ সাত হাজার ৬১৫ জন। এর মধ্যে এক লাখের সামান্য বেশি মানুষ এর মধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। মৃত্যু হয়েছে পাঁচ হাজার ৮১৫ জনের। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, মোট আক্রান্তের তুলনায় মৃতের সংখ্যার হার যথেষ্ট কম।

প্রায় দুই মাস টানা লকডাউন থাকার পরে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জনজীবনে ফিরছে ভারত। লকডাউন এখনও জারি থাকলেও বহু ক্ষেত্রেই নিয়মকানুন শিথিল করে দেওয়া হয়েছে। রাস্তায় লোক বের হচ্ছে। গাড়ি চলছে। মেট্রো এবং লোকাল ট্রেন চালু না হলেও গণপরিবহণ ক্রমশ চলতে শুরু করেছে বিভিন্ন শহরে। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, লকডাউন শিথিল হওয়ার কারণেই গত দুই সপ্তাহে দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এক লাফে এতটা বেড়েছে।

সামাজিক দূরত্ব মানতে এত বড় জুতা!

দিল্লিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন প্রতিরক্ষা সচিব অজয় কুমার। সে জন্য সাউথ ব্লকের একটা অংশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে সরকারি সূত্র জানাচ্ছে। বুধবার অফিসে য়াননি প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং সেনা ও মন্ত্রকের উচ্চপদস্থ অফিসাররা। ভারতে এই প্রথম একজন সচিব পর্যায়ের অফিসার করোনায় আক্রান্ত হলেন।

কোনও কোনও মহলে প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কি লকডাউন শিথিল করে ভুল সিদ্ধান্ত নিল সরকার? চিকিৎসক এবং বিশেষজ্ঞদের একটি বড় অংশের অভিমত, লকডাউন তোলার সিদ্ধান্তে কোনও ভুল নেই। অনন্তকাল মানুষকে ঘরে বসিয়ে রাখা যায় না। ফলে আজ না হোক কাল এই সিদ্ধান্ত নিতেই হতো। এবং লকডাউন খুললে যে করোনা সংক্রমণ বাড়বে, এ বিষয়টিও জানা ছিল। শুধু বোঝা দরকার ছিল, আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লে মৃত্যুর হারও বৃদ্ধি পাবে কি না।

চিকিৎসক সাত্যকি হালদারের বক্তব্য, ''ভারতে একটি বিষয় মোটামুটি বোঝা গিয়েছে। এখানে মৃতের হার দুই শতাংশের বেশি নয়। ৮০ শতাংশ মানুষ অ্যাসিম্পটোম্যাটিক অর্থাৎ, যাদের করোনার লক্ষ্যণ নেই। মোট আক্রান্তের নিরিখে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার হারও যথেষ্ট কম। ফলে গত দুই সপ্তাহে সংক্রমণ বৃদ্ধির এই সংখ্যা দেখে আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই।'' বস্তুত, চিকিৎসকদের একটি বড় অংশের বক্তব্য, সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে লকডাউনে বসে না থেকেও করোনার সঙ্গে লড়াই করা সম্ভব।

করোনা সংক্রমণ অবশ্য ছড়িয়ে পড়েছে দেশের প্রতিটি প্রান্তেই। দিল্লিতে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার হার কিছু দিনের মধ্যে দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। আগে প্রতিদিন গড়ে ৬০০ জন আক্রান্ত হচ্ছিলেন। এখন হচ্ছেন এক হাজার ২০০ জন। তাই দিল্লি সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বিমান, ট্রেন বা বাসে করে যাঁরা দিল্লিতে আসবেন, তাঁদের বাধ্যতামূলকভাবে সাত দিন কোয়ারান্টিনে থাকতে হবে।  পশ্চিমবঙ্গে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এক মন্ত্রী। দিল্লিতে কেন্দ্রীয় শাসক দলের অন্যতম মুখপাত্র আক্রান্ত হয়েছেন। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, পরীক্ষামূলকভাবে রেমডেসিভির ব্যবহার করা হবে করোনার চিকিৎসায়।

এ দিকে লকডাউন খোলার সঙ্গে সঙ্গেই অপরাধের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে ভারতে। দিল্লিতে আইআইটি ক্যাম্পাসের সামনে দুষ্কৃতীরা আক্রমণ চালিয়েছে একটি বেসরকারি বিমান সংস্থার পাইলটের ওপর। ভেঙে দেওয়া হয়েছে তাঁর গাড়ি। টাকা ছিনতাই করে, তাঁকে রক্তাক্ত করে দুষ্কৃতীরা পালায়। মনসমাজবিদ মোহিত রণদীপের বক্তব্য, যত দিন যাবে তত এ ধরনের অপরাধপ্রবণতা বাড়ার সম্ভাবনা থাকবে। কারণ,লকডাউনে বহু মানুষের কাজ গিয়েছে। অর্থের অভাবে অনেকেই অপরাধ করে বসবে। ফলে এ বিষয়ে সরকারের আরও সতর্ক হওয়া উচিত।

এসজি/জিএইচ (পিটিআই, এএনআই)