1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভ্যাকসিনই এখন ভারতে সব চেয়ে বড় ভিআইপি

১৩ জানুয়ারি ২০২১

আর তিনদিন পরেই শুরু করোনার টিকাকরণ। সব রাজ্যে পৌঁছাচ্ছে ভ্যাকসিন। আর টিকাই এখন ভারতে সব চেয়ে বড় ভিআইপি।

https://p.dw.com/p/3nqfP
ভারতে সব রাজ্যে ভ্যাকসিনের ড্রাই রান হয়েছে। ছবি: Altaf Qadri/AP/picture alliance

মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন রাজ্যে পৌঁছে গেছে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা ভ্যাকসিন কোভিশিল্ড। বুধবার সকালেই বেশ কয়েকটি রাজ্যে পৌঁছেছে ভারত বায়োটেকের তৈরি কোভ্যাকসিন। মোদী সরকার ইতিমধ্যে সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে এক কোটি দশ লাখ কোভিশিল্ড কিনেছে। আর কোভ্যাকসিন এসেছে ৫৫ লাখ। সবমিলিয়ে এক কোটি ৬৫ লাখ ভ্যাকসিন দুই দিনে কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে চলে এসেছে। মঙ্গলবারই ৫৫ লাখ ভ্যাকসিন বিভিন্ন রাজ্যে পৌঁছে গেছে।

ভ্যাকসিন পৌঁছাবার পর প্রতিটি রাজ্যের ছবি একইরকম। ভ্যাকসিনের বাক্স তখন সব চেয়ে বড় ভিআইপি। বিমানবন্দর থেকে তাড়াতাড়ি যাতে সরকারি মেডিক্যাল স্টোরে পৌঁছানো যায়, তার জন্য রাস্তায় যানবাহন আটকে দেয়া হচ্ছে। প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে রাস্তার দুই পাশে। কলকাতায় যেমন দমদম বিমানবন্দর থেকে বাগবাজারে সরকারি মেডিক্যাল স্টোরে ভ্যাকসিন নিয়ে যেতে সময় লেগেছে মাত্র পঁচিশ মিনিট। যা স্বাভাবিক সময়ে কল্পনা করা যায় না। যেহেতু ভ্যাকসিন একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় রাখতে হয়, সে জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে রাজ্য সরকার জানিয়েছে।

সেই সঙ্গে চোখে পড়ার মতো ভিড় ছিল সংবাদমাধ্যমের। এখন সব চেয়ে বড় ভিআইপি ভ্যাকসিন পৌঁছানো থেকে শুরু করে মেডিক্যাল স্টোরে যাওয়ার প্রক্রিয়া ক্যামেরাবন্দি করেছে সব চ্যানেল। সাংবাদিকরা ব্যস্ত থেকেছেন ভ্যাকসিন পৌঁছানোর খবর নিয়ে।

তবে ভারতে এখনো ভারত বায়োটেকের ভ্যাকসিন নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সম্প্রতি ভ্যাকসিন দেয়ার বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তোলেন, ভারত বায়োটেকের ভ্যাকসিন নিয়ে নানা কথা শোনা যাচ্ছে। বলা হচ্ছে, তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগেই ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এটা কি ঠিক? প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে নীতি আয়োগের এক সদস্য তখন মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্নের জবাব দেন।

ভ্যাকসিন কূটনীতি: ভারত ও চীন

মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলনে স্বাস্থ্য সচিবকে প্রশ্ন করা হয়, টিকা যাঁরা নেবেন, তাঁরা কি কোভিশিল্ড ও কোভ্যাকসিনের মধ্যে একটি টিকাকে বেছে নিতে পারবেন? স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণ বলেন, ৫০টির মতো দেশে করোনার টিকা দেয়া হচ্ছে। অনেক দেশে একাধিক ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে। কিন্তু কোনো দেশেই যাঁরা টিকা নিচ্ছেন, তাঁরা বেছে নিতে পারছেন না। অর্থাৎ ভারতেও যে টিকা বেছে নেয়া যাবে না, সেটা বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি।

এই অবস্থায় অনেকেই অপেক্ষা করছেন, কবে টিকাগুলি বাজারে আসবে তার উপর। সেরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান আদার পুনাওয়ালা মঙ্গলবারও বলেছেন, সরকার অনুমতি দিলে তাঁরা মার্চের মধ্যে বাজারে টিকা দিতে চান। প্রতিটি টিকার দাম পড়বে এক হাজার টাকা। তবে এখনো মোদী সরকার সেই অনুমতি দেয়নি। তারা সেরামের টিকা কিনেছে ২১০ টাকা দিয়ে। আর কোভ্যাকসিন কেনা হচ্ছে ২৯৫ টাকা দিয়ে। তবে ভারত বায়োটেক ১৬ লাখ ৫০ হাজার টিকা সরকারকে ফ্রিতে দিয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্র জানাচ্ছে, মার্চ-এপ্রিল নাগাদ বাজারে টিকা বিক্রির অনুমতি দেয়া হতে পারে। তখন পছন্দসই ভ্যাকসিন কিনে লাগানোর সুযোগ পাওয়া যাবে। 

আপাতত স্বাস্থ্য কর্মী এবং করোনার পুরোভাগে থাকা পুলিশ, পুরসভার কর্মীদের বিনা পয়সায় টিকা দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। তবে সবাইকে ফ্রিতে টিকা দেয়া হবে কি না, সেটা সরকার জানায়নি। কয়েকটি রাজ্য সরকার জানিয়ে দিয়েছে, তারা সবাইকে বিনা পয়সায় টিকা দেবে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, রাজ্যের সকলে বিনা পয়সায় করোনার টিকা পাবেন। যা নিয়ে বিজেপি বলেছে,  মমতাকে তো দিতে হচ্ছে, সিরিঞ্জ, আর করতে হচ্ছে টিকা রাখার ব্যবস্থা। তার জন্য কত টাকা লাগে? তৃণমূল বলছে, সেটা তো এখন। মোদী সরকারের চালচলন দেখে মনে হচ্ছে, তারা পরে আর বিনা পয়সায় টিকা দেবে না। তখনও রাজ্য সরকার দেবে। পাঞ্জাবে অমরিন্দর সিং সরকার জানিয়ে দিয়েছে, তারা সবাইকে বিনা পয়সায় ভ্যাকসিন দেবে। আসলে পয়সা দিয়ে ভ্যাকসিন নিতে হলে মানুষ রেগে যেতে পারে। বিশেষ করে যে সব রাজ্যে ভোট আসছে বা কিছুদিন পরে হবে। তাই মমতা বা অমরিন্দর কোনো ঝুঁকি নেননি। আর্থিক টানাটানি সত্ত্বেও তাঁরা এই ঘোষণাটুকু  অন্তত করে রেখেছেন।

জিএইচ/এসজি(পিটিআই, এএনআই)