1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মহাকাশে স্যাটেলাইট ধ্বংস করে ভয়ানক কাণ্ড করেছে ভারত!

২ এপ্রিল ২০১৯

ভারতের ধ্বংস হওয়া স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহের ৪০০টি খণ্ড মহাকাশে ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে নাসা৷ একে ভয়ানক ব্যাপার হিসেবে অভিহিত করেছে তারা৷

https://p.dw.com/p/3G6Ba
ছবি: picture-alliance/dpa/NASA

গত সোমবার ভূপৃষ্ঠ থেকে মিসাইল ছুড়ে নিজেদের পুরনো একটি স্যাটেলাইট ধ্বংস করেছে ভারত৷ যার মধ্যমে দেশটি বিশ্বের মহাকাশ পরাশক্তিতে পরিণত হয়েছে বলে ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা এটিকে ভয়ানক ব্যাপার হিসেবে অভিহিত করেছে৷ ঘটনার ৫ দিন পর নাসা প্রধান জিম ব্রাডেনস্টাইন এই মন্তব্য করেছেন৷ 

ভারতের কর্মকাণ্ডের ফলে যে ধ্বংসাবশেষ তৈরি হয়েছে তার কিছু অংশ এমনকি আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে আঘাত হানতে পারে বলেও শংকা প্রকাশ করেন তিনি৷ সোমবার তিনি নাসার কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বক্তৃতা দিচ্ছেলেন৷ ভারতের পদক্ষেপের সমালোচনা করে ব্রাইডেনস্টাইন বলেন, ‘‘এটা অগ্রহণযোগ্য৷ আমাদের উপর এর কী প্রভাব পড়বে সে বিষয়ে নাসার পরিষ্কার হতে হবে৷'' যদিও স্যাটেলাইট ধ্বংসের কারণে কোনো ক্ষতি হতে পারে এমন শংকা শুরু থেকেই উড়িয়ে দিয়ে আসছে ভারত৷

তৈরি হয়েছে ৪০০ ধ্বংসাবশেষ

ভারতের এই পরীক্ষার কারণে স্যাটেলাইটটির ৪০০ ধ্বংসাবশেষ মহাকাশে ছড়িয়ে পড়েছে বলে উল্লেখ করেছেন নাসা প্রধান৷ জানান, ১০ সেন্টিমিটার বা তার চেয়ে বড় আকারের খণ্ডগুলো তারা এখন অনুসন্ধান করছেন৷ এর মধ্যে এখন পর্যন্ত ৬০টিকে অনুসরণ করা সম্ভব হয়েছে৷

ভারতের ঘোষণা অনুযায়ী ১৮০ মাইল বা ৩০০ কিলোমিটার উচ্চতায় অবস্থিত নিজেদের একটি পুরাতন স্যাটেলাইট তারা ধ্বংস করেছে৷ এই অবস্থান আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র বা আইএসএস থেকে যথেষ্ট নীচে৷ কিন্তু ২৪টি ধ্বংসবস্তু সেই উচ্চতাকে ছাপিয়ে গেছে বলে তথ্য দিয়েছেন ব্রাইডেনস্টাইন৷ ‘‘আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের উপরে ধ্বংসাবশেষ পৌঁছাতে পারে এমন একটা ঘটনা ঘটানো ভয়ানক, ভয়ানক একটি ব্যাপার৷ এই ধরণের কর্মকাণ্ড ভবিষ্যত মহাকাশ যাত্রার সাথে কোনোভাবেই সংগতিপূর্ণ নয়৷''

আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রে স্যাটেলাইটে আঘাত হানতে পারে মহাকাশের এমন বস্তু পর্যবেক্ষণে রাখে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সংস্থা৷ তাদের নজরদারিতে এখন ২৩ হাজার বস্তু রয়েছে যার আকার ১০ সেন্টিমিটারের বেশি৷ এর মধ্যে ১০ হাজার খণ্ডই কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে তৈরি বর্জ্য৷ এর বেশিরভাগই তৈরি হয়েছে একটি মাত্র ঘটনায়৷ ২০০৭ সালে ভূপৃষ্ঠ থেকে ৫০৭ মাইল উচ্চতায় স্যাটেলাইট বিধ্বংসী অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছিল চীন, তাতে এমন তিন হাজার ধ্বংসাবশেষ তৈরি হয়৷

ব্রাইডেনস্টাইন জানিয়েছেন, নতুন করে ভারতের পরীক্ষার পর এসব আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের সাথে এসব বস্তুকণার আঘাত হানার সম্ভাবনা গত দশদিনে ৪৪ ভাগ বেড়ে গেছে৷ তবে সামনের দিনগুলোতে এই হার কমতে থাকবে৷  কেননা এসব ধ্বংসাবশেষের কিছু অংশ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের সময় পুড়ে যাবে৷ 

সফল অভিযান শেষে পৃথিবীতে ফিরলেন নাসার তিন নভোচারী

ভারতের প্রতিক্রিয়া

ভারতের স্যাটেলাইট বিধ্বংসী অস্ত্রের পরীক্ষা চালানোর দুই দিন পরই যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্যাট্রিক শানাহান এই পদক্ষেপের সমালোচনা করেন৷ আর কেউ যাতে ভারতের পথ অনুসরণ না করে সে বিষয়েও সতর্ক করে দেন তিনি৷ এর ফলে সৃষ্ট ধ্বংসাবশেষের কারণে মহাকাশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরির ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন প্যাট্রিক৷

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সেই শংকা তখন উড়িয়ে দিয়েছিল৷ তাদের দাবি, স্যাটেলাইটটির অবস্থান পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথেই ছিল৷ যার কারণে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ধ্বংসাবশেষগুলো ক্ষয় হয়ে যাবে, নয়ত পৃথিবীর উপর পড়বে৷

এফএস/জেডএইচ (এএফপি, রয়টার্স)