1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মাথাব্যথার কারণ বহুতল

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
২৪ জুলাই ২০২০

ঘিঞ্জি বস্তি এলাকা নয়, কলকাতার অভিজাত এলাকার বহুতল আবাসনই এখন পুরসভার দুশ্চিন্তার কারণ হয়েছে। কারণ, সেরকম বাড়িতেই কোভিড ছড়াচ্ছে বেশি।

https://p.dw.com/p/3frj2
Indien Kolkata Schäden durch Zyklon Amphan
ছবি: DW/Sudipta Bhowmick

কোভিড সংক্রমণের তৃতীয় পর্যায়ে, যখন কমিউনিটি স্প্রেড, অর্থাৎ, ঘন জনবসতি এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে করোনা ছড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিল, তখন বিশেষ দুশ্চিন্তা ছিল কলকাতার বড় বড় বস্তিগুলো নিয়ে। যেখানে ঘেঁষাঘেঁষি বাড়ি, ছোট ছোট ঘরে অনেক লোকের বাস, একই শৌচালয় বহু জন ব্যবহার করেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা বহু দূরের কথা, প্রাথমিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলারও পরিস্থিতি, বা পরিকাঠামো নেই। এমন জায়গায় কোভিডছড়াতে শুরু করলে ভয়ঙ্কর কাণ্ড হবে, সবাই ভেবেছিলেন।

কিন্তু কার্যত দেখা গেল, ঠিক উল্টো ঘটনা ঘটছে। এই মুহূর্তে কলকাতার বস্তিগুলোতে সংক্রমণের হার তুলনায় কম, বেশি বহুতল আবাসনগুলোতে। পুরসভা বাড়ি বাড়ি গিয়ে জনস্বাস্থ্যের যে খতিয়ান রাখছে, তাতে সম্প্রতি দেখা গেছে যে ৮৫% সংক্রমণই বড় আবাসনে, বহুতল ফ্ল্যাটবাড়িতে। আগে এরকম সংক্রমণ ঘটলে প্রশাসন সেই আক্রান্ত বাড়ি, বা এলাকা সাময়িকভাবে সিল করে দিচ্ছিল। লোকবলের অভাবের কারণে, পরিকাঠামো না থাকায় সেই সিদ্ধান্তেরও বদল ঘটেছে। ফলে একটি ফ্ল্যাটে কোভিড হানা দিলে বাকি বাসিন্দারা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।

দক্ষিণ কলকাতারএক আবাসনের ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পুরঞ্জিত মুখার্জির বক্তব্য, ‘‌‘‌বহুতলে (‌সংক্রমণ)‌ বাড়ছে৷ আমার মনে হচ্ছে, এরা যারা অফিসে যাচ্ছে, তারা ভেরিয়াস কনট্যাক্টে আসছে। এবং সেখান থেকে যখন তারা বহুতল বাড়িতে ঢুকছে, বহুতল বাড়িতে অসুবিধেটা হচ্ছে, রুলস রেগুলেশন কেউই কিছু মানছে না। আমাদের এখানে শুধু নয়। এবং না মেনে তারা ঢুকছে। লিফটে চড়ছে। বা (‌সিঁড়ির)‌ হ্যান্ডেলে হাত দিয়ে হাঁটছে। আমার অভিজ্ঞতাতে এই হচ্ছে বড় রিস্ক।'‌'‌

কিন্তু বহুতলের আবাসিকরা, যাঁরা অধিকাংশই বিত্তবান, তাঁরা কি কোভিড সংক্রমণের বিপদের কথা বুঝছেন না?‌ পুরঞ্জিতবাবুর বক্তব্যে স্পষ্ট ধরা পড়লো হতাশা। তিনি বলছেন, ‘‌‘‌প্রত্যেকে ভাবছে, আই অ্যাম রাইট। এই নিয়মটা আমি না মানলেও কিছু হবে না, কারণ, আমি ঠিক আছি। যেহেতু তারা সকলেই শিক্ষিত, এবং জানে, এটা বোঝাচ্ছে এবং ইমপ্লিমেন্ট করছে যে স্তরটা, অর্থাৎ সিকিওরিটি স্তর, তারা অনেক ইনফিরিয়র। কাজেই তাদের নির্দেশটা কেউ মানছে না।'‌'‌

‘প্রত্যেকে ভাবছে, আই অ্যাম রাইট’: পুরঞ্জিত মুখার্জী

কাজেই বিদ্যে বোঝাই বাবুমশাইরা কে কত বেশি জানেন, সেটা প্রমাণেই ব্যস্ত। পাশাপাশি অর্থের দম্ভ তো আছেই। ফলে অভিজাত এলাকায়, বিত্তবানের আবাসনেকরোনার দাপট বাড়ছে। বরং সাবধানি হয়ে প্রাণে বেঁচেছেন বস্তির বাসিন্দারা। তাঁরা যতটা পারছেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে ঠেকিয়ে রাখছেন করোনাকে।    

এদিকে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চের সরবরাহ করা একটি কোভিড টেস্ট কিট নিয়ে প্রশ্ন তুললো রাজ্য সরকার। এর আগে রাজ্যে ব্যবহার হচ্ছিল পুণের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজির তৈরি টেস্ট কিট। কিন্তু আইসিএমআর–এর নতুন কিটটি ব্যবহারের পর থেকেই টেস্ট রিপোর্ট পজিটিভ আসার হার অনেক বেড়ে গেছে। ফলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরাই সন্দেহ প্রকাশ করছেন নতুন কিটের যথার্থতা নিয়ে। কেন্দ্র সরকারকে এই নতুন কিট ফেরত নিয়ে আবার ওই পুরনো কিটই পাঠানোর কথা বলেছে রাজ্য।