1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মানুষের মলমূত্র পরিষ্কার করা ‘নিষিদ্ধ', অথচ...

২৬ ডিসেম্বর ২০১৭

মেথর হিসেবে যাঁরা কাজ করেন, তাঁরা সকলেই জানেন যে ভারতে ‘ম্যানুয়াল স্ক্যাভেঞ্জিং' আছে এবং আজও চলছে৷ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বা এইচআরডাব্লিউ-এর এই পাঁচ মিনিটের ভিডিও শুধু সেই বাস্তব সত্যটাকেই তুলে ধরেছে৷

https://p.dw.com/p/2po58
Philippinen Goldsucher
ছবি: Getty Images/J. Aznar

জন্মসূত্রে মানুষের জাত নির্দিষ্ট হয়, সেই জাতই আবার নির্দিষ্ট করে দেয় তার পেশা৷ এই অলিখিত আইনের শক্তি দৃশ্যত ভারতে আজও কম নয়, ‘রাষ্ট্রীয় গরিমা অভিযান'-এর আশিফ শেখ যাকে ‘‘জন্ম, জাত ও লিঙ্গের কারণে দাসপ্রথা'' বলে অভিহিত করেছেন৷

এইচআরডাব্লিউ-এর হয়ে ভিডিওটির জন্য যিনি গবেষণা করেছেন, সেই শিখা ভট্টাচার্য গোড়াতেই উল্লেখ করেছেন যে, হাতে করে মলমূত্র পরিষ্কারের কাজটা প্রধানত মহিলাদেরই করতে হয়; পুরুষেরা সাধারণত ম্যানহোল খুলে ড্রেনে নেমে ময়লা পরিষ্কার করার কাজ করে থাকেন৷ শুধু উল্লেখ নয়, ভিডিও-তে সেই কাজের ফুটেজও দেখানো হয়েছে, কাজেই অভিযোগের বাস্তবতা অস্বীকার করার উপায় নেই – বহির্বিশ্বের মানুষদের তো নয়ই; আমাদের উপমহাদেশের মানুষরা বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত, তাই তাদের প্রতিক্রিয়াটা হবে একটু অন্য৷

প্রসঙ্গত, এইচআরডাব্লিউ-এর ভিডিও-য় এক মুসলিম মহিলা জানিয়েছেন, ময়লা ফেলার পেশার জন্য তাঁকে মসজিদ থেকে শুরু করে জলের মটকায় কী ধরনের বৈষম্য সহ্য করতে হয়৷

‘ম্যানুয়াল স্ক্যাভেঞ্জিং' যাঁদের পেশা, তেমন সব মহিলাই পেশার কারণে নানা অসুখ-বিসুখে ভোগার কথা বলেছেন, যার মধ্যে চর্মরোগ ও যক্ষ্মাই দৃশ্যত প্রধান৷

শিখা ভট্টাচার্য বলছেন, ‘ম্যানুয়াল স্ক্যাভেঞ্জিং' দেশে নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও সরকারি কর্মকর্তারা স্যানিটেশানের কাজে ঠিক সেই জাতের মানুষদেরই নিয়োগ করে থাকেন, যাঁরা আগেও এ কাজ করেছেন৷ অতঃপর সেই মানুষদের দিয়ে ঠিক সেই কাজটাই করানো হয়, যা কিনা নিষিদ্ধ – অর্থাৎ ‘ম্যানুয়াল স্ক্যাভেঞ্জিং'৷

রাষ্ট্রীয় গরিমা অভিযান

২০০০ সালে শুরু হয় ময়লা পরিষ্কার করা মহিলাদের এক মুক্তি আন্দোলন, যার নাম রাখা হয় ‘রাষ্ট্রীয় গরিমা অভিযান'৷ তার ১৫ বছর পরে এই আন্দোলন সংশ্লিষ্ট মহিলাদের নিয়ে গোটা ভারতে দশ হাজার কিলোমিটার ঘুরে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য একটি পদযাত্রা করে: সেই পদযাত্রায় ছিলেন ২৬ জন মহিলা, যাঁরা খোলা বাজারে তাঁদের ময়লা ফেলার চুবড়ি পোড়ানোর পর আর ও কাজে কোনোদিন হাত দেননি৷

জাতপ্রথার দেশে জন্মগত পেশা ছাড়ব বললেই ছাড়া অত সহজ হয় না৷ কাজেই এই সব মহিলাদের সমাজের তরফ থেকে মারধোরের ভয় দেখানো হয়েছে, একঘরে করার ভয় দেখানো হয়েছে৷

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর গবেষক শিখা ভট্টাচার্য বলছেন, আইন তো আছেই, কিন্তু সে আইন প্রয়োগ করা দরকার৷ রাষ্ট্রীয় গরিমা অভিযানের আসিফ শেখ যোগ করেছেন, ‘ম্যানুয়াল স্ক্যাভেঞ্জিং' থামানোটা শুধু একক ব্যক্তি বা সরকারের কাজ হতে পারে না৷ কাজটা গোটা সমাজের৷

এসি/ডিজি