1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মাশরাফীর অবসর নিয়ে পানি ঘোলা

১৩ জানুয়ারি ২০২০

পানি জমে বরফ হলেও এতদিনে শীত এসে নিশ্চয়ই গলিয়ে দিতো৷ বুঝি না, বিসিবি সভাপতি আর মাশরাফীর মাঝের বরফটা এতদিনেও গলছে না কেন!

https://p.dw.com/p/3W83U
Cricket Spieler Bangladesch: Mashrafe Mortaza
ছবি: picture-alliance/A. Boyers

মাশরাফী আর বিসিবির মাঝে যে বরফের একটা অদৃশ্য প্রাচীর দাঁড়িয়েছে সে বিষয়ে কারো সন্দেহ থাকার কথা নয়৷ বিশ্বকাপে বাজে পারফর্ম্যান্সের পর বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়কের অবসর নিয়ে কয়েক দফাই কথা হয়েছে৷

মাশরাফী আদৌ আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেয়ার সুযোগ পাবেন কিনা এ নিয়ে সংশয় গত আগস্টেই ঘোরতরভাবে জেগেছিল৷ ‘মাঠ থেকে অবসর নিতে পারছেন না মাশরাফী!' শিরোনামে একটা সংবাদভাষ্য লেখা হয়েছিল তখন৷

বিষয়টি আবার আলোচনায় এসেছে৷ গত সপ্তাহে গণমাধ্যমকে মাশরাফী বলেছেন, ‘‘ মাঠ থেকে অবসর নেবো কিনা, সে সিদ্ধান্ত এখনো নিইনি৷ নিজের যদি ওরকম মনে হয়, ক্রিকেট বোর্ড যদি মনে করে চিন্তাভাবনা করব৷''

এই বক্তব্যে কিন্তু অতীতের চেনা মাশরাফীকে খুঁজে পাইনি৷ স্পষ্ট মনে আছে, (আন্তর্জাতিক) টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত কারো অপেক্ষায় না থেকেই নিয়েছিলেন তিনি৷ ওয়ানডের বেলায় এত কালক্ষেপণ বা দ্বিধা কেন? বয়স তো হয়েছে৷ পারফর্ম্যান্সে তার ছাপও পড়ছে৷ এই বাস্তবতা মেনে নতুন কাউকে সুযোগ করে দিতে বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে নিজের নাম বাদ দেয়ার অনুরোধও জানিয়েছেন তিনি৷ ওয়ানডে থেকে অবসরের বেলায় এই বৈপরিত্য কেন? একাধিক সাংবাদিক বন্ধু জানিয়েছেন, মাশরাফী চান দেশের মাটিতে ‘স্মরণীয়' কোনো ম্যাচ খেলে বিদায় নিতে৷ তিনি চাইলেই কি এ বছর দেশে (বা বিদেশেও) সেরকম ম্যাচ আয়োজন করা বিসিবির পক্ষে সম্ভব? যৌক্তিকভাবে যতটুকু প্রাপ্য, মনে মনে তার চেয়ে অনেক বেশি কিছু আশা করছেন না তো মাশরাফী?

Ashish Chakraborty
আশীষ চক্রবর্ত্তী, ডয়চে ভেলেছবি: DW/T. Mehedi

গতকাল একই বিষয়ে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও কথা বলেছেন৷ এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ‘‘ওকে আমরা একবার প্রস্তাব দিয়েছিলাম যে, জিম্বাবুয়ের সঙ্গে একটা ওয়ানডে খেলিয়ে বিদায় দেবো৷ ওর সঙ্গে এমন কথা হয়েছিল লন্ডনেই৷ সে তো রাজি হলো না৷ সে বিপিএল পর্যন্ত দেখতে চেয়েছিল৷ তারপর সিদ্ধান্ত নেবে৷ আমাকে কিছু বলেনি, তবে পত্রপত্রিকা দেখে মনে হয়েছে, ওর ঘটা করে বিদায় নেওয়ার ইচ্ছে নেই৷ আমরা আবার দেখবো৷ আমরা চাইবোই ওকে খুব ভালো করে বিদায় দিতে৷ এমনভাবে বিদায় দেওয়া হবে, যেটা ওর আগে বাংলাদেশের কেউ পায়নি, পরেও কেউ পাবে না৷ এখন সে যদি চায় হবে, না হলে তো কিছু করার নেই৷''

বিসিবি প্রধানের কথায় শঙ্কিতই হয়েছি বেশি৷ ‘‘আমরা চাইবোই ওকে খুব ভালো করে বিদায় দিতে'' অংশটুকু খুব আশাবাদী হওয়ার মতো৷ কিন্তু ‘‘এমনভাবে বিদায় দেওয়া হবে, যেটা ওর আগে বাংলাদেশের কেউ পায়নি, পরেও কেউ পাবে না'' অংশটুকু মনে বেশ শঙ্কা জাগিয়েছে৷ নাজমুল হাসান পাপন কি এ কথা মন থেকে বলছেন? এত আন্তরিক হলে এতদিনে একবারও কেন এ বিষয়ে মাশরাফীর সঙ্গে কথা বললেন না?

বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে নিজের নাম বাদ দেয়ার অনুরোধ জানাতে মাশরাফী যে তাকে ফোন করেছিলেন তা বিসিবি প্রধান নিজেই গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন৷ তখনই কি অবসর নিয়ে আলোচনাটা সেরে ফেলা যেতো না?

বিসিবি সভাপতি, আমরা কোনো বাড়াবাড়ি চাই না৷ চাই না, মাশরাফীকে এমনভাবে বিদায় দেয়া হোক যা বাংলাদেশের আর কেউ কোনোদিন পাবে না৷ কারো যোগ্যতা থাকলে ভবিষ্যতে বিসিবি তাকেও যথাযথ সম্মান জানাবে, এটাই কাম্য৷

আপাতত একটাই অনুরোধ, মাশরাফী আবার কবে কী বলবেন সে অপেক্ষায় না থেকে বরফটা গলিয়ে ফেলুন৷ আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর সুযোগ মাশরাফীর প্রাপ্য৷ কথায় কথায় সময় নষ্ট করে তাকে এ থেকে বঞ্চিত করা একেবারেই ঠিক হবে না৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য