মায়েরা দূরে শত নবজাতকের
২১ মে ২০২০এই অস্বাভাবিক দৃশ্যটি ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের কাছেই প্রজনন ক্লিনিক ভেনিসের৷ সাধারণত সারোগেট মা বা গর্ভ ভাড়া করা মায়েদের শিশুর জন্মের পর তাদের মা বাবাই শিশুদের প্রথম দেখেন,কাছে থাকেন৷ কিন্তু এবার করোনা মহামারির কারণে এসব শিশুকে মাস্ক পরে নার্সদেরই দেখাশোনা করতে হচ্ছে ৷ এদের মধ্যে কয়েক সপ্তাহ বয়সি শিশুও রয়েছে৷ শিশুদের ১২ জন জার্মানি, ২০ জন চীন, ছয়জন স্পেন, চারজন ইটালি এবং ফ্রান্সে যাওয়ার কথা থাকলেও সীমান্ত বন্ধ থাকায় ওদের মা-বাবা এখন তাদের সন্তানকে নিজেদের কাছে নিতে পারছেনা৷
ইউক্রেনের সংসদ সদস্য ও মানবাধিকার কর্মী লুডমিলা ডেনিসোভা ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে নবজাতদেরর মা-বাবার জন্য ইউক্রেন ভ্রমন সহজ করার অনুরোধ করলেও এখনো এর সমাধান হয়নি৷ কিছু ক্ষেত্রে সেসব দেশের দূতাবাসগুলিও এব্যাপারে সহায়তা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে৷ ইউক্রেনে সব মিলিয়ে এরকম মোট ১০০ শিশু ওদের মা-বাবার অপেক্ষায় আছে৷ অপেক্ষা দীর্ঘ হলে শিশুর সংখ্যা বেড়ে এক হাজারও হতে পারে বলে জানান লুডমিলা ডেনিসোভা৷
ইউরোপের অনেক দেশেই বাণিজ্যিকভাবে সারোগেসি বা গর্ভভাড়া নিষিদ্ধ৷ তবে গর্ভভাড়া বৈধ এখনো ইউরোপের সবচেয়ে গরীব দেশগুলোর একটি ইউক্রেনে৷
বায়োটেক্সকম প্রতিষ্ঠানের কাস্টোমারদের দেয়া তথ্য থেকে জানা যায় প্রতিটি শিশুর জন্য কোম্পানিটি শিশুর মা-বাবার কাছ থেকে নিয়ে থাকে ৪০ থেকে ৬৫ হাজার ইউরো পর্যন্ত৷
প্রজনন ক্লিনিক ভেনিসের মালিক অ্যালবার্ট টটশিলোভস্কি নিশ্চিত করে বলেছেন, ভেনিস-এ ‘বেবিরুমে' আটকে থাকা শিশুরা সুস্থ আছে, ভাল আছে৷ অন্যদিকে এসব শিশুর মা-বাবাদের কেউ কেউ ২০ বছর ধরে অপেক্ষা করছেন একটি সন্তানের জন্য৷ তাদের মধ্যে অনেকেই ধীরে ধীরে অধৈর্য হয়ে পড়েছেন৷ শিশুকে বুকে তুলে নেয়ার এই দীর্ঘ অপেক্ষা সহ্য করতে না পেরে কেউ কেউ কান্নায় ভেঙে পড়ছেন৷
এনএস/কেএম/ (এএফপি)