1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মানবদেহে দীর্ঘস্থায়ী ভ্রুণ

২৭ আগস্ট ২০১৪

এক দুই বছর নয়, টানা ৩৬ বছর মায়ের দেহে ছিল একটি ভ্রুণ, যা কিনা সেখানেই মারা গেছে এবং রয়ে গেছে কঙ্কাল হয়ে৷ ভারতের চিকিত্সকেরা অস্ত্রোপচার করে সেই মা-র শরীর থেকে ভ্রূণের কঙ্কাল অপসারণ করেছেন সম্প্রতি৷

https://p.dw.com/p/1D1IY
ফাইল ছবিছবি: Fotolia/ ingenium-design.de

মানবদেহে কোনো ভ্রূণের স্থায়ীত্বের দিক দিয়ে এটাই সবচেয়ে দীর্ঘ বলে দাবি করা হচ্ছে৷ চিকিৎসকরা জানান, ভারতীয় এই নারী ২৪ বছর বয়সে গর্ভধারণ করেন৷ কিন্তু ভ্রূণটি জরায়ুর বাইরে বেড়ে ওঠায়, মানে সেটা ‘একটপিক প্রেগনেন্সি' হওয়ায়, স্বাভাবিকভাবে তার বড় হওয়া ও জন্ম নেওয়ার বিষয়টি ব্যহত হয়৷ ফলে গর্ভপাতের সম্ভাবনা দেখা দেয়৷ এবং পরবর্তীতে তা জটিল সমস্যায় রূপ নেয় এবং অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন দেখা দেয়৷

ভারতের মধ্যাঞ্চলের প্রত্যন্ত এক গ্রামের দরিদ্র ওই নারী সে সময় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ভ্রূণটি অপসারণে ভীত ছিলেন৷ ব্যথা কমাতে তিনি স্থানীয় একটি ক্লিনিকের দ্বারস্থ হন৷ তখন বিভিন্ন ওষুধ খেয়ে ব্যথা কমলেও ৩৬ বছর পর আবারো তলপেটে ব্যথা শুরু হয় তাঁর৷ এখন ঐ নারীর বয়স ৬০ বছর৷ সেই ব্যাথা নিয়েই তিনি নাগপুরে এন কে পি সেল্ফ ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সে যান৷ সেখানকার প্রধান সার্জন মুর্তাজা আখতার সংবাদ সংস্থা এএফপিকে জানান, ‘‘তলপেটে ব্যথা নিয়ে তিনি আমাদের এখানে আসেন৷ আমরা পরীক্ষা করে দেখি তিনি এমন একজন গর্ভবতী, যার ভ্রুণটি জরায়ুর বাইরে থেকে আছে৷ তখন ঐ নারী আমাকে জানান যে, ১৯৭৮ সালে তিনি গর্ভবতী হয়েছিলেন এবং গর্ভাবস্থার শেষ পর্যায় চলছিল৷''

চিকিৎসকরা তাঁর তলপেটে একটি থলির মতো অনুভব করেন এবং ভাবেন এটি ক্যানসার হতে পারে৷ পরে নানা পরীক্ষা ও স্ক্যান করার পর দেখা গেল একটি কঙ্কাল৷ স্ক্যান দেখে প্রথমেই চিকিৎসকদের প্রতিক্রিয়া হয়েছিল – এখন তাঁরা কী করবেন? আসলে ওটা একটি পরিপূর্ণ শিশুর কঙ্কাল, যা একটি থলের মধ্যে ছিল৷

নাগপুরের ঐ হাসপাতালের চিকিৎসকদের আপ্রাণ চেষ্টায় সফলভাবে সেই মহিলার দেহে অস্ত্রোপচার করা হয় এবং জরায়ু, অন্ত্র ও মূত্রাশয়ের মাঝখান থেকে বের করা হয় পিণ্ডটিকে৷ যেটি পূর্ণাঙ্গ একটি শিশুর কঙ্কাল৷

আখতার আরো বলেন, ‘‘এর অর্থ ৩৬ বছর ধরে এই কঙ্কালটি ঐ নারীর শরীরের ভেতর ছিল৷ এমন একটা ঘটনা চিকিৎসা বিজ্ঞানের কোথাও শোনেননি তাঁরা৷''

পরে অবশ্য বিভিন্ন জার্নাল ঘেটে চিকিৎসকরা আরো একটি ঘটনা জানতে পারেন৷ বেলজিয়ামের এক নারীর দেহে ১৮ বছর ধরে একটি ভ্রুণ ছিল, যেটি পরে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অপসারণ করা হয়৷ এ পর্যন্ত ঐ ঘটনাই ছিল মায়ের দেহে ভ্রুণের অবস্থানের দীর্ঘস্থায়ী রেকর্ড৷

সে যাই হোক, আখতার জানান ভারতের সেই নারী যখন পুরো সত্যটা জানতে পারেন তখন তিনি অসম্ভব শোকাচ্ছন্ন হয়ে পড়েন৷ তবে এ মুহূর্তে তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন৷

এপিবি/ডিজি (এএফপি, রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য